জুমবাংলা ডেস্ক : মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা আর প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ঘোষণা হচ্ছে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেট। এর আকার হতে পারে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন ব্যয়ের বিপরীতে সুদ, ভর্তুকি, সরকারি কর্মচারীদের বেতন ভাতা দেয়ার মতো অনুন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হতে পারে প্রায় সোয়া ৩ লাখ কোটি টাকা। আভাস মিলেছে সামাজিক সুরক্ষা খাতের আকার ও বরাদ্দ বাড়ানোরও। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
যখন দেশের মানুষ মূল্যস্ফীতির চড়া মাশুল গুনছেন নিত্যদিন, তখন অতি প্রয়োজনীয় ব্যয়ের হিসাব কষে আগামী অর্থবছরের জন্য যে বাজেট ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয় তার আকার হতে পারে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
সুখী সমৃদ্ধ উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার নিয়ে করা এবারের বাজেটের আকার বাড়ছে ৪.৬ শতাংশ; আগের দুই বছর অবশ্য বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ করে। সংকোচনমুখী এই বাজেট উত্থাপনে ঘোষণা আসতে পারে আগামী এক বছর আরও বাড়তে পারে মূল্যস্ফীতি; কারণ এবার সরকারি লক্ষ্যমাত্রাই ৬ থেকে বাড়িয়ে করা হতে পারে সাড়ে ৬ শতাংশ। যদিও বর্তমানে মূল্যস্ফীতি চড়ে আছে প্রায় ১০ শতাংশে।
অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবির বলেন, কঠোর সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বজায় রাখার পরও কমানো যাচ্ছে না দেশের খাদ্য ও সার্বিক মূল্যস্ফীতি। আসন্ন বাজেটে এ বিষয়ে নজর দেয়া দরকার।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৭ থেকে কমিয়ে আনা হতে পারে ৬.৭৫ শতাংশে। বিশাল এই কর্মযজ্ঞে দেশের সরাসরি উন্নয়নে অবকাঠামো নির্মাণসহ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ব্যয় করা হবে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। ব্যয় সংকোচনের নামে চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৩২৬টি প্রকল্প কমানো হলেও বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে যে পরিমাণ বরাদ্দ দেয়া রয়েছে তার সঠিক বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এটি করা গেলে কমে আসবে খরচ।
জনগণের উন্নয়নে এই ব্যয়-বরাদ্দের বিপরীতে সুদ পরিশোধ বাবদ ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি, ভর্তুকি প্রণোদনায় ১ লাখ ১১ হাজার কোটি আর সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেয়ার মতো অনুন্নয়ন খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হতে পারে ৩ লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ উন্নয়নের চেয়ে অনুন্নয়ন খাতে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বেশি ব্যয় করতে যাচ্ছে সরকার।
বাজেটের এই বিশাল ব্যয়ের জোগান দিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দেয়া হতে পারে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার টার্গেট। যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭০ হাজার কোটি টাকা বেশি।
এই রাজস্ব আদায় বাড়াতে করমুক্ত আয়সীমা না বাড়িয়ে ব্যক্তি শ্রেণির করকাঠামোতে পরিবর্তন আনার ইঙ্গিত দিয়েছে সংস্থাটি। যেখানে বাড়ানো হতে পারে বেশি আয় করা ব্যক্তিদের কাছে কর আদায়ের স্তর। বাড়তে পারে ব্যাংকে সঞ্চিত অর্থের ওপর আরোপিত আবগারি শুল্কের পরিমাণ।
ধনী-গরিবের আয়-বৈষম্যে নিয়ন্ত্রণহীন বাজার ব্যবস্থায় যেন ভেসে না যায় নিম্ন আয়ের মানুষ, সেজন্য সামাজিক সুরক্ষা খাতের সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৫ লাখ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মা ও শিশু সহায়তা ভাতা ২০০ টাকা, ৮০ বছরের বেশি বয়স্ক নাগরিকের ভাতা ৩০০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব আসতে পারে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের উত্থাপিত বাজেটে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৬ জুন) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পেশ করবেন। এটি হবে বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট। বর্তমান সরকারেরও এটি প্রথম বাজেট, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে টানা চতুর্থ মেয়াদে এই সরকার ক্ষমতায় আসে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।