নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ও বিধি-বিধানের তোয়াক্কা না করেই নিজেদের অ্যাপে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার কার্যক্রম চালাচ্ছে বিকাশ।
নিয়ম অনুযায়ী কোনো মোবাইল আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এমএফএস) সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা বা পরিচালনা করতে পারে না। আবার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আছে নির্ধারিত নিয়ম কানুন।
বিকাশের এই অননুমোদিত কার্যক্রম চালানোর বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের ইন্টারনাল অডিট বিভাগের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে। তারা সেই অনুসন্ধানে আরও কিছু অসংগতি খুজে পেয়েছে। এসব কার্যক্রমের পক্ষে অনুমোদন দেখতে চাইলেও বিকাশ কর্তৃপক্ষ তা দেখাতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরীক্ষা দলকে৷
এই বিষয়ে মতামত জানার জন্য অডিট বিভাগ চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের পরিচালককে।
অডিট বিভাগ বিকাশের ওয়েবসাইট ও অ্যাপ পরীক্ষা করে দেখতে পেয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে ৪টি ব্যাংক এবং একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) ডিপোজিট সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। এ ছাড়া সেই অ্যাকাউন্টের ডিপোজিটের পরিমাণ যাচাই ও ক্যাশ উত্তোলন করা যায় এই বিকাশ অ্যাপ থেকে। এই অ্যাকাউন্ট খুলতে পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে না।
বিকাশের এই কার্যক্রম নিয়ে ২০২৩ সালের ৮ নভেম্বর একটি দৈনিক ‘বিকাশ অ্যাপে সেভিংস স্কিম: ঝামেলাবিহীন সঞ্চয়ে ভরসা পাচ্ছেন গ্রাহকরা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যেখানে বিকাশের এই ধরণের অ্যাকাউন্ট খোলার কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদন থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংক জানতে পারে, অনুমোদন ছাড়াই ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এই কার্যক্রম চালাচ্ছে বিকাশ। ইতোমধ্যে ১৪ লাখ গ্রাহক অননুমোদিত এই কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছেন। এর পাশাপাশি বিকাশ মাইক্রো লোনও বিতরণ করছে।
অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) রেগুলেশন ২০২২-এ পরিষ্কার বলে দেওয়া আছে, অনুমোদন পাওয়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে না। এই সূত্র ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইন্টারনাল অডিট বিভাগ বিকাশের কাছে সঞ্চয়ি হিসাব পরিচালনা কিভাবে করছে, তা জানতে চায়।
এ ছাড়া নীরিক্ষা দল তাদের কাছে এর অনুমোদনের কাগজপত্রও চেয়ে পাঠায়। কিন্তু তা বিকাশের পক্ষ থেকে সরাবরাহ করা সম্ভব হয়নি বলে অডিট বিভাগের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বর ইস্যু করা এই চিঠি জুমবাংলার হাতে আছে।
ইন্টারনাল অডিট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের সাক্ষরিত চিঠিতে পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের কাছ থেকে বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময়ে অর্থ পাচার ও হুন্ডি সংক্রান্ত মামলায় বিকাশের একাধিক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার এবং তাদের নিয়ে এরকম সব অভিযোগ ওঠায় বাংলাদেশ ব্যাংককে বিব্রত হতে হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।