জুমবাংলা ডেস্ক : রংপুরের মিঠাপুকুরে স্কুলছাত্রী মোসলেমা খাতুনের (১৬) গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে তার প্রেমিক নাহিদ ইসলাম। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও আদালতে নাহিদ হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তারা পরস্পর চাচাতো ভাই বোন।
সোমবার গণমাধ্যমে এ নিয়ে ‘মিঠাপুকুরে নিখোঁজের দুদিন পর স্কুল ছাত্রীর লাশ উদ্ধার’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। ওই খবর লেখা পর্যন্ত খুনের রহস্য অজানা ছিল। এ নিয়ে মিঠাপুকুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মোসলেমা উপজেলার ভাংনি ইউনিয়নের দলশিংপুর বউরাকোট গ্রামের মোতালেব মিয়ার মেয়ে। স্থানীয় হুলাশু উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার সে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। রোববার রাতে বাড়ির পাশে একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় তার মরদেহ এলাকাবাসী দেখেন। পরে পুলিশকে খবর দিলে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তর জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়।
এ বিষয়ে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চাচাতো ভাই প্রেমিক নাহিদ ইসলামকে শনাক্ত করে। পরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নাহিদ ইসলাম ওই খুনের ঘটনা স্বীকার করে।
পুলিশ সূত্র জানায়- নাহিদ জানিয়েছে মোসলেমা তার চাচাতো বোন। এক বছর আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের কথা বলে প্রেমিকার সঙ্গে নাহিদ একাধিকবার শারীরিক সর্ম্পক স্থাপন করে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ওই ছাত্রী নাহিদকে জানায় সে অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু নাহিদ তা অস্বীকার করে। এতে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়।
গত ২২ এপ্রিল মোসলেমা নাহিদকে ফোন করে বাড়িতে আসতে বলে। তারা ভুট্টা ক্ষেতে গিয়ে দেখা করে। মোসলেমা তাকে বিয়ে করতে বলে। কিন্তু নাহিদ ওই সন্তানের দায় নিতে অস্বীকৃতি জানায়। সে তাকে বিয়ে করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। কিন্তু মোসলেমা তাকে বিয়ে না করলে সব কথা পরিবারের অভিভাবকদের জানিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়।
এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এর এক পর্যায়ে নাহিদ রেগে গিয়ে ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মোসলেমাকে হত্যা করে। পরে সে বাড়িতে ফিরে স্বাভাবিক ভাবে অবস্থান করে।
মোসলেমাকে না পেয়ে তার পরিবারের লোকজন মিঠাপুকুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। এ ঘটনার তিনদিন পর শনিবার সন্ধ্যায় মোসলেমার বাড়ির পাশের একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে দুর্গন্ধ আসতে থাকে। দুর্গন্ধের সূত্র ধরে ভুট্টাক্ষেতে গিয়ে মোসলেমার অর্ধগলিত অবস্থায় লাশ পড়ে থাকতে দেখতে পান এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ শনিবার রাতে মোসলেমার মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তার বাবা প্রেমিক নাহিদ হোসেনকে প্রধান আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মিঠাপুকুর ও পীরগঞ্জ থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ডি সার্কেল) কামরুজ্জামান বলেন, মোসলেমাকে হত্যার পর নাহিদ বাড়িতে গিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে থাকেন। হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোসলেমাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে সে। নাহিদকে আদালতে তোলা হলে সেখানেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে সে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।