জুমবাংলা ডেস্ক : যথাসময়ে উপস্থিত হতে না পারায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ভর্তি হতে না পারা সেই নিপুণ বিশ্বাসের ভর্তির সব ধাপ সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে যবিপ্রবির শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে ২০২০-২১ সেশনে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে প্রশাসন।
ভর্তি শেষে স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. তানভীর ইসলাম যখন তাকে রসিদ দেন তখন ডিনকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিপুন। নিপুন বলেন, ‘স্যার, আপনারা মানবিক না হলে আমি ভর্তি হতে পারতাম না। আপনারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন পূরণ করেছেন।’
এসময় ডিনও তাকে জড়িয়ে ধরে দরিদ্র বাবার স্বপ্ন পূরণে ভালোভাবে পড়াশোনা করার উপদেশ দেন। সেই সঙ্গে যবিপ্রবিতে পড়াশোনাকালীন তার যেকোনো সমস্যায় পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
এদিকে, নিপুনের পরিবারের আর্থিক সমস্যা বিবেচনা করে তার পড়াশোনার সব খরচ বহনের আশ্বাস দিয়েছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার।
নিপুন বিশ্বাসের বাড়ি নীলফামারীর সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নে। তার বাবা প্রেমানন্দ বিশ্বাস পেশায় নরসুন্দর। মা দীপালী বিশ্বাস গৃহিণী। দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় নিপুন।
ছোটবেলা থেকে আর্থিক অনটনের শত বাধা পেরিয়ে নীলফামারীর মশিয়ুর রহমান কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন মেধাবী নিপুন। তার ছোট ভাই এবার স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেবে।
৩০ জানুয়ারি (রোববার) বিকেল ৫টায় যবিপ্রবির স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে তৃতীয়বারের মতো ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে উপস্থিত হতে না পারায় ভর্তি হতে পারেননি নিপুন বিশ্বাস। তিনি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান ততক্ষণে বেজে যায় ১২টা ৮ মিনিট।
১৫ হাজার টাকায় মাইক্রোবাস ভাড়া করে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন নিপুন। এতো টাকা খরচ করেও ভর্তি হতে না পেরে হতাশাগ্রস্ত হয়ে ক্যাম্পাসে বসেছিলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম। সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) মানবিক দিক বিবেচনা করে এক আসন বাড়িয়ে নিপুনকে ভর্তির সুযোগ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
নিপুন বিশ্বাস বলেন, আমি খুবই আনন্দিত। অবশেষে আমি ভর্তি হতে পেরেছি। আমি এখন যবিপ্রবিয়ান। তার ভর্তির পেছনে ভূমিকা রাখার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
বিশেষ করে যবিপ্রবি উপাচার্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নিপুন। তিনি বলেন, ‘ভিসি স্যার আমাকে মানবিক দিক বিবেচনায় ভর্তি করে নিয়েছেন। এজন্য আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ।’
নিপুন আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে আমাদের অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়েছে। স্যাররা ভর্তি শেষ করে আমাকে বাড়িতে যেতে বলেছেন। বাড়িতেও মা-বাবা খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তারাও দ্রুত বাড়ি যেতে বলেছেন। সন্ধ্যা নাগাদ যশোর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে নীলফামারী চলে যাবো।’
যবিপ্রবির জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক আবদুর রশীদ বলেন, যবিপ্রবির উপাচার্য নিপুনের ভর্তির জন্য ৩০ শতাংশ টাকা মওকুফ করেছেন। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. তানভীর ইসলাম ভর্তির বিষয়ে ডিন অফিসের সব খরচ নিজেই বহন করেছেন।
পিতার অভাবের সংসার: ঢাবির ইংরেজি বিভাগে সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত চাঁদনীর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।