জুমবাংলা ডেস্ক : যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নির্মম পিটুনিতে তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় কেন্দ্রে দায়িত্বরতদের অবহেলা ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে সমাজসেবা অধিদপ্তর গঠিত তদন্ত কমিটি। অন্যদিকে এ ঘটনায় গ্রেফতার ওই কেন্দ্রের ৫ কর্মকর্তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। আর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবু লাইছকে নিয়ে তিন সদস্যের যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল, সে কমিটিও কাজ শুরু করেছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর ঢাকার পরিচালক সৈয়দ মো. নূরুল বশিরকে প্রধান করে যে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়, সে কমিটি শনিবার থেকেই কাজ শুরু করে। সৈয়দ মো. নূরুল বশির বলেন, তারা ইতিমধ্যেই যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত কিশোরদের সাথে কথা বলেছেন। এছাড়া ঘটনাস্থল যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের অফিস পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট আরও অনেকের সাথে তারা কথা বলেছেন। প্রশাসনের লোকজনের সাথেও তারা কথা বলবেন। এরপর ঢাকায় ফিরে কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের রিপোর্ট জমা দেবেন। এই ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সে ব্যাপারে কিছু সুপারিশমালাও ওই রিপোর্টে থাকবে বলে তিনি জানান।
সৈয়দ মো. নূরুল বশির আরও বলেন, তারা মূলত বিভাগীয় তদন্ত করবেন। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা, তাদের দায়িত্ব পালনে ত্রুটি আছে কিনা সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিভাগীয় এ তদন্তের পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন করা হচ্ছে। আর যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের যে তদন্ত কমিটি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় করেছে, সে কমিটিও তাদের মতো করে কাজ করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা স্পট মার্ডার নয়। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই দুঃখজনক এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলেই মনে হচ্ছে। শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে স্থায়ী ডাক্তার নেই। আহতদের যদি সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া যেতো, তাহলে হয়তো মৃত্যুর ঘটনা এড়ানো যেতো।
এদিকে, এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক রকিবুজ্জামান জানান, আদালত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ৫ কর্মকর্তার রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করার পরপরই শনিবার থেকেই আসামিদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। আজ রবিবারও এই জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত ছিল।
গত বৃহস্পতিবার যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে তিন কিশোরকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আহত হয় আরও ১৫ কিশোর। প্রথম দিকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কর্মকর্তার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং বলেন, কেন্দ্রে থাকা কিশোররা দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে মারামারি করায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। কিন্তু পরে আহত কিশোরদের বক্তব্য ও পুলিশের তদন্তে স্পষ্ট হয় যে কর্মকর্তা কর্মচারীদের মারপিটের কারণেই তিন কিশোরের মৃত্যু ও ১৫ কিশোর আহত হয়। পরে মৃত কিশোর রাব্বির পিতা রোকা মিয়া বাদি হয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের অজ্ঞাত কর্মকর্তা কর্মচারিদের আসামি করা হয়। পরে পুলিশ কেন্দ্রের ১৯ কর্মকর্তা, কর্মচারি ও আনসার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই কেন্দ্রের সহকারী পরিচালকসহ ৫ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।