জুমবাংলা ডেস্ক: আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মানিকগঞ্জ জেলার সবজি চাষে খ্যাত সাটুরিয়ার কামতা এলাকায় বেগুনের আবাদ করে বেশ লাভবান হয়েছেন চাষি সাত্তার মিয়া । এই চাষির সাফল্য দেখে অনেকেই এখন সবজি চাষে ঝুঁকছেন। বাংলানিউজ ২৪ এর প্রতিবেদক সাজিদুর রহমান রাসেল-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত।
অল্প পুজি আর স্বল্প পরিশ্রমে অধিক মূনাফা অর্জন করা যায় সবজি চাষে। প্রতিটি সবজি আবাদ করতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই মাস, যা কিনা অন্য কোন ফসলে সম্ভব না ।
এসব কারণে অধিক মুনাফার জন্য সাটুরিয়ার অঞ্চলের চাুষরা সবজিচাষে ঝুঁকেছেন ।
সাটুরিয়ার কামতা এলাকার চাষি সাত্তার মিয়া এবার এক বিঘা জমিতে বেগুনের আবাদ করেছেন। ফলনও হয়েছে বাম্পার।
এক বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা।
সাত্তার মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে ৩০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন এখন পর্যন্ত। আরও ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা মূল্যের বেগুন আছে তার জমিতে।
তিনি জানান, এক সময় অন্যান্য ফলস আবাদ করতেন। কিন্তু লাভ না হওয়াতে গত চার বছর ধরে সবজির আবাদ করছেন । প্রতি বছর এই সবজি আবাদ করে ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ ছাড়াও সংসারের সকল ব্যয় মিটিয়েও বেশ টাকা তার জমা থাকে । তার এই সাফল্য দেখে স্থানীয় অনেক চাষি এখন সবজি চাষে ঝুঁকে পড়ছে।
সবজিচাষি সাত্তার মিয়া বলেন , নিজেদের তেমন একটা জমি নাই। অন্যের জমি বাৎসরিক বরগা নিয়ে সবজির আবাদ করি । এক বিঘা জমি ১৫ থেকে বিশ হাজার টাকা করে বরগা নিতে হয় মালিকের কাছ থেকে । ওই জমিতে একেক মৌসুমে একেক সবজির আবাদ করি। একেক সবজিতে একেক খরচ হয় আমার। এ বছর এই শীত মৌসুমে এক বিঘা জমিতে বেগুনের আবাদ করেছি , ফলনও ভালো হয়েছে । আমার এই চাষের পদ্ধতি দেখে অনেকেই সবজি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে ।
সাত্তার মিয়ার সাফল্য দেখে সবজি চাষে উদ্যোগী হয়েছেন সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়নের মেঘ শিমুল এলাকার আব্দুল রহিম মিয়া।
তিনি বলেন, আমি এক সময় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতাম। কিন্তু করোনার সময় চাকরিটা চলে যায় । ওই সময় পরিবার পরিজন নিয়ে বেশ বিপদে দিন কেটেছে আমার । তখন আমার পার্শ্ববর্তী এলাকার সাত্তার ভাইকে দেখে নিজের জমি ও অন্যের কিছু জমি বরগা নিয়ে সবজির আবাদ শুরু করি । ফলন আশানূরুপ হওয়াতে চাকরির চেয়ে শত শত গুন ভালো আছি বর্তমানে ।
একই এলাকার আরও এক চাষি জলিল মিয়া বলেন , এই সবজির আবাদ করে অনেকের চেয়ে ভালো আছি।
সরেজমিনে দেখা যায় , জেলার সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ,ফকুরহাটি ও সদর উপজেলার আরো বেশ কয়েকটি এলাকায় এখন শীতকালীন সবজিতে মাঠ ছেঁয়ে আছে । চাষিরা তাদের ক্ষেত থেকে পরিপক্ক সবজি বাজারে নেওয়ার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে ।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খলিলুর রহমান বলেন ,জেলার মধ্যে সবজি চাষে খ্যাতি অর্জন করেছে আমার এই সাটুরিয়া। আমার এ উপজেলায় অনেক এলাকা আছে যেখানে বিষমুক্ত সবজির আবাদ হয় । বেগুন আবাদ করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন সাত্তার মিয়া। তার মতো এই রকম আরও অনেক চাষি রয়েছে আমার উপজেলায়। আমরা মাঠ পর্যায়ে চাষিদের বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করছি। আমাদের মাঠ কর্মীরা তাদের সব সময় সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করে থাকে ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।