জুমবাংলা ডেস্ক : আইফোন-১১ এর জন্য বন্ধুকে নিয়ে খালা ও খালাতো ভাইকে খুন করেছে সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মাদ্রাসাশিক্ষার্থী। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে এ কথা স্বীকার করে সে বলেছে- ফোন বিক্রির টাকা দিয়ে পার্টি করতে চেয়েছিল তারা।
সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগর আবাসিক এলাকায় এসপির বাংলো সংলগ্ন বাসায় মা-ছেলেকে খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ঢাকার সাভার থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে ওই শিক্ষার্থীকে আটক করে হেফাজতে নেয় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান।
পুলিশ সুপার বলেন, এক সপ্তাহ আগে দুই বন্ধু পরিকল্পনা করে খালাতো ভাই মিনহাজের আইফোন-১১ ও কিছু টাকা চুরি করে পার্টির আয়োজন করবে তারা; কিন্তু বাসায় আত্মীয়স্বজন থাকায় সুবিধা করতে পারছিল না। সোমবার রাতে বাসা খালি থাকায় বন্ধুকে নিয়ে চুরির পরিকল্পনা করে সে। একই বাসায় খালাতো ভাই মিনহাজের পাশাপাশি অপর ইউনিটে ভাড়া থাকত ওই শিক্ষার্থীর পরিবার।
তিনি জানান, পরিকল্পনামাফিক সোমবার নিজ বাসায় সহযোগী বন্ধুকে নিয়ে রাতযাপন করে ওই শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার ভোরে পাশের ইউনিটে থাকা খালার বাসায় চুরি করতে যায় তারা। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে খালাতো ভাই মিনহাজের ঘুম ভেঙে গেলে তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এর একপর্যায়ে রান্নাঘর থেকে বঁটি দা নিয়ে এসে খালাতো ভাই মিনহাজকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় মিনহাজের চিৎকার শুনে মা ফরিদার ঘুম ভেঙে যায়। তিনি তার রুমের দরজা খুলে মিনহাজের রুমে ঢুকার চেষ্টা করতেই তাকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ সময় ঘটনাস্থলেই ফরিদা বেগম ও তার কলেজপড়ুয়া ছেলে মিনহাজুল ইসলাম মারা যান। হত্যার পর সুনামগঞ্জ থেকে পালিয়ে সিলেটে চলে যায় তারা। পরে সিলেট থেকে বিমানযোগে তারা ঢাকায় পালিয়ে গিয়ে সাভারে আত্মগোপন করে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে ঢাকার সাভার থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অপর অভিযুক্ত তার বন্ধুকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানান তিনি। খুব শিগগিরই তাকেও ধরে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক, গোয়েন্দা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহম্মদ উল্লাহ ভূঁইয়া।
গত মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগরে (এসপির বাংলোসংলগ্ন বাসা) নিজের বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন মা ফরিদা বেগম (৪৫) ও ছেলে মিনহাজ (২০)। ওই দিন সকাল সাড়ে ৮টায় কাজের বুয়া এসে ঘরের ভেতরে এই দুজনের লাশ দেখে আশপাশের মানুষকে জানান। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রহস্য উদঘাটন করতে সিলেট থেকে এসে পিবিআই-সিআইডি ও সুনামগঞ্জ সদর থানা পুলিশ অভিযানে নামে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।