আইফোন 14 প্লাস বাংলাদেশে আনঅফিসিয়াল মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে, কেননা অ্যাপলের সরাসরি আনুষ্ঠানিক রিটেইল চ্যানেল এখানে নেই। বর্তমানে (অক্টোবর ২০২৩) বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স শপ ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এর দাম দেখা যাচ্ছে:
- ১২৮জিবি ভ্যারিয়েন্ট: ৳১,৩৪,০০০ – ৳১,৪২,০০০
- ২৫৬জিবি ভ্যারিয়েন্ট: ৳১,৪৮,০০০ – ৳১,৫৬,০০০
- ৫১২জিবি ভ্যারিয়েন্ট: ৳১,৬৫,০০০ – ৳১,৭৫,০০০
এই দামগুলো গ্রে মার্কেট বা প্যারালাল ইম্পোর্টের মাধ্যমে আসা ডিভাইসের। দামের তারতম্যের প্রধান কারণ:
- ইম্পোর্ট ট্যাক্স ও শুল্ক: বাংলাদেশে স্মার্টফোন আমদানিতে উচ্চ শুল্ক (প্রায় ৩০-৫০%) দাম বাড়িয়ে দেয়।
- সরবরাহের উৎস: ডিভাইসগুলো সিঙ্গাপুর, দুবাই বা ভারত থেকে আসে; উৎসভেদে দাম ভিন্ন হয়।
- রিটেইলারের মার্জিন: দোকানভেদে প্রফিট মার্জিন ১০-১৫% পর্যন্ত হতে পারে।
- ডলারের মূল্যবৃদ্ধি: ডলারের ওঠানামা সরাসরি দামে প্রভাব ফেলে।
কোথায় কিনবেন? বিশ্বস্ত শপ যেমন দি টেকনোভার, রিভারটোন, বা প্রাইসবিডি-তে পাওয়া যায়। তবে অনলাইন কেয়ার্ড বা বিক্রয় রসিদ (Invoice) না থাকলে ওয়ারেন্টি ঝুঁকি থাকে। বাংলাদেশের স্মার্টফোন মার্কেটে প্রিমিয়াম সেগমেন্টে আইফোনের চাহিদা স্থির, তবে দাম সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। বিশ্ববাজারের প্রভাব এবং আমদানি নীতির পরিবর্তন ভবিষ্যৎ দাম নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ভারতে দাম
ভারতে অ্যাপলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, অ্যাপল স্টোর, এবং অথোরাইজড রিটেইলার যেমন রিলায়েন্স ডিজিটাল বা ভিজ্যুওমার্ট-এ আইফোন ১৪ প্লাসের দাম নিচে দেওয়া হলো:
- ১২৮জিবি: ₹৭৯,৯০০
- ২৫৬জিবি: ₹৮৯,৯০০
- ৫১২জিবি: ₹১,০৯,৯০০
ফ্লিপকার্ট বা অ্যামাজন ইন্ডিয়া-তে বড় সেল (Big Billion Days, Great Indian Festival) চলাকালীন ৫,০০০-১০,০০০ টাকা পর্যন্ত ডিসকাউন্ট পাওয়া যায়। বাংলাদেশের তুলনায় ভারতে দাম প্রায় ১৫-২০% কম, মূলত স্থানীয় অ্যাসেম্বলি ও কম শুল্কের কারণে।
গ্লোবাল মার্কেটে দাম
বিশ্বজুড়ে আইফোন ১৪ প্লাসের আনুষ্ঠানিক দাম:
- ইউএসএ: $৮৯৯ (১২৮জিবি) – অ্যাপল, বেস্টবাই, অ্যামাজন ইউএস
- ইউকে: £৯৪৯ (১২৮জিবি) – অ্যাপল, কারফোর
- সংযুক্ত আরব আমিরাত: AED ৩,৮৯৯ (১২৮জিবি) – অ্যাপল, নোন
- চীন: ¥৬,৯৯৯ (১২৮জিবি) – অ্যাপল, জেডি.কম
মূল্য পতন ও ডিসকাউন্ট: আইফোন ১৫ সিরিজ লঞ্চের পর আইফোন ১৪ প্লাসের দাম বৈশ্বিকভাবে ১০-১৫% কমেছে। অ্যামাজন প্রাইম ডে, ব্ল্যাক ফ্রাইডে, বা বড় ই-কমার্স ফেস্টিভ্যাল-এ সর্বোচ্চ ছাড় পাওয়া যায়। ইউএসএ-তে ক্যারিয়ার ডিলে (AT&T, Verizon) ফোন প্রায় $২০০ পর্যন্ত সস্তা হয়।
আইফোন 14 প্লাস: ফুল স্পেসিফিকেশন ও ফিচার বিশ্লেষণ
ডিসপ্লে ও ডিজাইন:
৬.৭ ইঞ্চি সুপার রেটিনা XDR OLED ডিসপ্লে (2778 x 1284 পিক্সেল), সর্বোচ্চ ১২০০ নিট ব্রাইটনেস। ফিল্মেকার মোড, ট্রু টোন ও ডল비 ভিশন সাপোর্ট করে। অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেম, গ্লাস বডি, আইপি৬৮ ওয়াটার/ডাস্ট রেজিস্ট্যান্ট।
পারফরম্যান্স:
A15 বায়োনিক চিপ (৫-কোর GPU), যা আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্সে ব্যবহৃত হয়। ৬জিবি র্যাম। ১২৮জিবি, ২৫৬জিবি, ৫১২জিবি স্টোরেজ অপশন। গেমিং বা ৪K ভিডিও এডিটিংয়ে স্মুথ পারফরম্যান্স দেয়।
ব্যাটারি ও চার্জিং:
৪৩২৩ এমএএইচ ব্যাটারি – আইফোনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ (সাধারণ মডেলে)। ২০W ফাস্ট চার্জিং, ১৫W ম্যাগসেফ, ৭.৫W কুইচার্জ সাপোর্ট। এক চার্জে ২৬ ঘণ্টা ভিডিও প্লেব্যাক (অ্যাপল দাবি) – বাস্তবে প্রায় ১.৫ দিন ব্যবহার যায়।
ক্যামেরা সিস্টেম:
- বৈশিষ্ট্য:
- ১২MP মেইন (সেন্সর-শিফট OIS) + ১২MP আল্ট্রা-ওয়াইড
- ফটোনিক ইঞ্জিন, স্মার্ট HDR 4, নাইট মোড
- সিনেম্যাটিক মোড (৪K HDR ৩০ fps)
- ১২MP ট্রুডেপথ ফ্রন্ট ক্যাম (অটোফোকাস)
- বিশ্লেষণ: লো-লাইট পারফরম্যান্স উল্লেখযোগ্য। ভিডিও স্টেবিলাইজেশন “অ্যাকশন মোড”-এর জন্য অপটিমাইজড।
Honor 200 Pro বাংলাদেশে ও ভারতে দাম বিস্তারিত স্পেসিফিকেশনসহ
অপারেটিং সিস্টেম ও কানেক্টিভিটি:
শুরুতে iOS 16 দিয়ে লঞ্চ, এখন iOS 17 আপডেট পায়। ৫জি (সাব-৬ GHz), Wi-Fi 6, Bluetooth 5.3, ডুয়াল সিম (ন্যানো + eSIM)। ক্র্যাশ ডিটেকশন ফিচার সেফটিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
অন্যন্য ফিচার:
- অডিও: স্টেরিও স্পিকার, ডলবি অ্যাটমস সাপোর্ট
- সিকিউরিটি: ফেস আইডি, এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন
- আইওএস এক্সক্লুসিভ: এয়ারড্রপ, আইক্লাউড, অ্যাপল পে
একই দামের অন্যান্য ডিভাইসের সঙ্গে তুলনা
১. স্যামসাং গ্যালাক্সি S23 (ভারতে ~₹৭৪,৯৯৯):
- প্লাস: 120Hz ডিসপ্লে, স্ন্যাপড্রাগন 8 Gen 2 (এ১৫-এর চেয়ে শক্তিশালী), বেটার ফ্লেক্সিবিলিটি (অ্যান্ড্রয়েড)
- মাইনাস: আইফোনের মত লং-টার্ম সফটওয়্যার আপডেট না, রিসেল ভ্যালু কম
২. ওয়ানপ্লাস ১১ (বাংলাদেশে ~৳১,২০,০০০):
- প্লাস: ১০০W ফাস্ট চার্জিং, 120Hz LTPO ডিসপ্লে, হাসেলব্রাড-টিউনড ক্যামেরা
- মাইনাস: আইওএস ইকোসিস্টেমের সুবিধা নেই, বিল্ড কোয়ালিটি আইফোনের সমান নয়
আইফোন ১৪ প্লাসের সুবিধা: অপ্রতিদ্বন্দ্বী ভিডিও পারফরম্যান্স, দীর্ঘমেয়াদী সফটওয়্যার সাপোর্ট (৫-৬ বছর), শক্তিশালী রিসেল ভ্যালু।
আইফোন 14 প্লাস কেন কিনবেন?
- বড় স্ক্রিন প্রেমীদের জন্য: ট্যাবলেটের বিকল্প, মুভি-গেমিং-রিডিং সবকিছুর জন্য পারফেক্ট।
- ব্যাটারি লাইফ: হেভি ইউজারদের জন্য আদর্শ – অন্যান্য আইফোনের চেয়ে বেশি ব্যাকআপ।
- কন্টেন্ট ক্রিয়েটরস: সিনেম্যাটিক মোড ও অ্যাকশন মোড প্রফেশনাল-লেভেল ভিডিও দেয়।
- আইওএস লোয়ার: অন্যান্য অ্যাপল ডিভাইস (ম্যাকবুক, এয়ারপডস, অ্যাপল ওয়াচ) থাকলে সিমলেস ইন্টিগ্রেশন।
- দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ: ৫-৬ বছর আপডেট পাবে – দাম বেশি মনে হলেও প্রতি বছরের খরচ কম।
ব্যবহারকারীদের মতামত ও স্টার রেটিং
গড় রেটিং: ৪.৩/৫ (অ্যাপল, ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন রিভিউ অনুসারে)
- রিভিউ ১ (অভিজিৎ, কলকাতা): “ব্যাটারি লাইফ অসাধারণ! সকালে চার্জ দিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত হেভি ইউজেও ৩০% থাকে। বড় স্ক্রিনে কাজ করা আরামদায়ক। ক্যামেরা তো অ্যাপল মানেই!” (★★★★★)
- রিভিউ ২ (তানজিনা, ঢাকা): “দাম একটু বেশি, কিন্তু পারফরম্যান্সে কোনো কমপ্রোমাইজ নাই। ২ বছর পরেও যেন নতুন ফোনের মতো চলে। আইওএস-এর সিম্পলিসিটি আমার পছন্দ।” (★★★★☆)
- রিভিউ ৩ (রাহুল, মুম্বাই): “আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্সের চেয়ে হালকা, দামেও কম। তবে ১৪ প্রো মডেলের প্রো মোশন (120Hz) মিস করছি। তবুও ব্যাটারির জন্য ভ্যালু ফর মানি।” (★★★★☆)
সাধারণ অভিযোগ: 60Hz রিফ্রেশ রেট (প্রো মডেলের 120Hz না থাকা), স্লো চার্জিং স্পিড (অ্যান্ড্রয়েড ফ্ল্যাগশিপের তুলনায়), সিম ট্রে না থাকা (eSIM-নির্ভর)।
বাংলাদেশে আইফোন 14 প্লাস কিনতে চাইলে দাম ও ফিচারের ব্যালেন্স ভালো। বিশাল স্ক্রিন, শক্তিশালী পারফরম্যান্স আর অপ্রতিদ্বন্দ্বী ভিডিও ক্যাপাবিলিটি যদি আপনার প্রধান চাহিদা হয়, এবং আইওএস ইকোসিস্টেমে থাকতে চান, তাহলে দামের ঊর্ধ্বগতি সত্ত্বেও এটি একটি ভবিষ্যৎ-সুরক্ষিত বিনিয়োগ। বিশ্বস্ত সোর্স থেকে কেনা নিশ্চিত করুন, যাতে ওয়ারেন্টি ও অথেনটিসিটির ঝুঁকি এড়ানো যায়।
জেনে রাখুন-
Q: আইফোন 14 প্লাস বাংলাদেশে কত টাকায় পাওয়া যাবে?
A: ১২৮জিবি মডেল আনঅফিসিয়াল মার্কেটে ৳১,৩৪,০০০ – ৳১,৪২,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। দোকান ও ইম্পোর্ট কস্টের ওপর দাম নির্ভর করে।
Q: আইফোন 14 আর 14 প্লাসের পার্থক্য কী?
A: মূল পার্থক্য স্ক্রিন সাইজ (১৪: ৬.১”, ১৪ প্লাস: ৬.৭”) এবং ব্যাটারি সাইজ (১৪ প্লাসে অনেক বড় ব্যাটারি, ৪৩২৩ এমএএইচ)। পারফরম্যান্স ও ক্যামেরা প্রায় একই।
Q: ব্যাটারি কতক্ষণ চলে?
A: সাধারণ ব্যবহারে (সোশ্যাল মিডিয়া, কলে, ভিডিও) ১.৫ দিন সহজে চলে। হেভি গেমিং বা ভিডিও রেকর্ডিংয়ে ১ দিন।
Q: ভারতে দাম কত? ডিসকাউন্ট পাব?
A: অফিসিয়াল দাম ১২৮জিবি-তে ₹৭৯,৯০০। ফ্লিপকার্ট/অ্যামাজনে ফেস্টিভ্যাল সেলে ৫-১০ হাজার টাকা ছাড় পাওয়া যায়।
Q: আইফোন 14 প্লাস নাকি আইফোন 13 প্রো ম্যাক্স – কোনটা ভালো?
A: পারফরম্যান্স প্রায় সমান (এ১৫ বায়োনিক), ক্যামেরাও কাছাকাছি। ১৪ প্লাসে নতুন ফিচার ক্র্যাশ ডিটেকশন, বেটার ফ্রন্ট ক্যাম (অটোফোকাস), ও এক্সট্রা ব্যাটারি লাইফ আছে। দাম কম পেলে ১৩ প্রো ম্যাক্সও ভালো অপশন।
Q: বাংলাদেশে কোথায় কিনলে সুরক্ষিত থাকব?
A: দি টেকনোভার, রিভারটোন, বা স্টার টেক-এর মতো বিশ্বস্ত শপ থেকে কিনুন। অনলাইন কেয়ার্ড (অ্যাপল ওয়ারেন্টি চেকের জন্য), বিক্রয় রসিদ (Invoice), ও বক্স সিল মিলিয়ে নিন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে প্রদত্ত দাম ও তথ্য রিসার্চ ও বাজার বিশ্লেষণের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে (অক্টোবর ২০২৩)। দাম ও প্রাপ্যতা সময় ও মার্কেট কন্ডিশনের সাথে পরিবর্তনশীল। কেনার আগে সরাসরি রিটেইলারের সাথে নিশ্চিত করুন। আইফোন বাংলাদেশে অ্যাপলের অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলের মাধ্যমে বিক্রি হয় না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।