নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: পোলাও, বিরিয়ানি, মুরগির রোস্ট, খাসির রেজালা, আচারসহ নানা পদের খাবারে মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয় আলুবোখারা।
খাবারের স্বাদে ভিন্নতা আনতে মসলাজাতীয় এ ফলের বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। ফলটির ব্যাপকভাবে পরিচিত হলেও দেশীয় পরিবেশে এর গাছ খুব একটা দেখা যায় না। বিভিন্ন দেশ থেকে শুকনা বা প্রক্রিয়াজাত অবস্থায় আলুবোখারা আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। পরে পৌঁছায় রসনাবিলাসীদের পাতে।
গাজীপুরের শ্রীপুরের কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী সেলিনা বাড়ির আঙিনায় আলুবোখারা গাছ রোপণ করে সফলতা পেয়েছেন।
তিনি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গভর্নিং বডির সদস্য। নিজের বাড়ির আঙিনায় লাগানো একটি আলুবোখারাগাছ থেকে প্রতি মৌসুমে ১৫ কেজি করে ফল পাচ্ছেন সেলিনা। গাছটি রোপন করেছেন পাঁচ বছর আগে, ফল সংগ্রহ করছেন তিন বছর ধরে।
প্রায় ১২ ফুট উঁচু আলুবোখারা গাছটিতে লাল, গাঢ় খয়েরি এবং লালচে হলুদ ফলে ভরপুর। সবুজ পাতার ফাঁকে মাঝারি আকারের বরইয়ের মতো দেখতে আলুবোখারা ফলগুলো তারার মতো সেজে আছে।
পাকা অবস্থায় আলু বোখারা টক-মিষ্টি স্বাদের হয়। পাকার শুরুতে স্বাদ কিছুটা আমলকীর মতো। পুরোপুরি গাঢ় খয়েরি হলে ফলটি পেকেছে বলে ধরে নেওয়া হয়। ফলগুলো পুরোপুরি গোলাকার হলেও বোঁটা থেকে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত এক পাশে কিছুটা খাঁজকাটা হয়।
সেলিনা খাতুন জানান, প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে আলুবোখারা গাছে সাদা সাদা ফুল আসতে শুরু করে। জুন মাসের শুরুর দিকে গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করা যায়। গাছে ফুল ধরা শুরু করলে সব পাতা ঝরে যায়। এ সময় ফুলভর্তি গাছ অন্য রকম সৌন্দর্য ছড়ায়।
তিনি বলেন, ‘২০২২ সাল থেকে গাছটি থেকে প্রচুর আলুবোখারা ফল মিলছে। প্রতিবছর ১৩ থেকে ১৫ কেজির মতো আলুবোখারা সংগ্রহ করা যাচ্ছে। এবার এখনো ফল সংগ্রহ শুরু করিনি। ফলন দেখে মনে হচ্ছে বিগত বছর থেকে এবার বেশি ফলন পাওয়া যাবে।’
ভারতের কাশ্মীর, হিমালয়, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং ইরানে প্রচুর পরিমাণে আলুবোখারার চাষ হয়। বর্তমানে বাংলাদেশেও এর চাষ শুরু হয়েছে। তবে ব্যপকহারে বাণিজ্যিকভাবে এখনো তেমন চাষাবাদ দেখা যায়নি।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, সোডিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ আলু বোখারায় রয়েছে ফ্যাট, প্রোটিন, ভিটামিন এ, বি, সি, কে এবং ই। এছাড়াও রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।