জুমবাংলা ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিতে বলেছিলেন বলে দাবি করেছেন সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তিনি এ দাবি করেন।
এজলাশে দাঁড়িয়ে কামাল আহম্মেদ মজুমদার দাবি করেন, ‘আমি ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে কথা বলেছি। শেখ হাসিনাকে বলেছিলাম, দাবি মেনে নেন। আমার গণভবণে প্রবেশে নিষেধ ছিল। আমি দৃঢতার সঙ্গে বলতে পারি, কখনো কারও সম্পত্তি গ্রহণ করিনি।’
এদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর মিরপুরে মহিউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি নিহতের মামলায় ঢাকা-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান সিদ্দিকির আদালত।
এ সময় আদালত থেকে কিছু কথা বলার অনুমতি নিয়ে হাতকড়া উঁচিয়ে ধরে বিচারকের উদ্দেশে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটাই কি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার অলংকার। এজন্যই কি দেশ স্বাধীন করেছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, নির্যাতন করা হচ্ছে। এই সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই, দেশে আইনের শাসন থাকলে এমনটা হতো না। মামলা করছে, বাদীর খবর নাই। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করছে। পরিবারের সদস্যদেরও নির্যাতন করছে। তারা বাড়িতে থাকতে পারছে না। জায়গা-জমি দখল করে নিচ্ছে।’
কামাল মজুমদারের বক্তব্যের পর ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘তিনি (কামাল আহম্মেদ মজমুদার) একজন ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা না। রাজস্ব ফাঁকি দিতে রাজনীতিতে নাম লেখান। এলাকায় অবৈধভাবে বিশাল ব্যবসা তৈরি করে নিয়েছেন। আন্দোলনের সময় মিরপুরে জঘন্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। মনে হচ্ছে, তিনি কোনো নতুন গ্রহ থেকে এসেছেন।’
মিথ্যা মামলার বিষয়ে এই আইনজীবী বলেন, ‘এমন নিষ্ঠুর, নির্মমভাবে বাচ্চাদের খুন করা হয়েছে, আর উনি বলছেন, মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় মুসলিমদের ওপর হেলিকপ্টার থেকে গুলি করেছে। এরাও তাই করেছে। পেট্রল দিয়ে লাশ পুড়িয়ে দিয়েছে। আর উনি বলছেন, মিথ্যা মামলা।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ে কামাল মজুমদারের উদ্দেশে পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, ‘যারা মুক্তিযোদ্ধা, আপনাদের কারণে তাদের সম্মানহানি হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মাটির নিচে মিশিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ কি একমাত্র মুক্তিযুদ্ধের এজেন্সি। কেন মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করলেন? আর আজ বলছেন মুক্তিযোদ্ধা? আমি বলছি, আপনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলবেন না। গুম, খুন, আয়নাঘর এগুলো কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল। জনগণকে খুশি অথবা কাজ না করলে এমন পরিণাম ভোগ করতে হয়।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট মিরপুর মডেল থানার সামনে আন্দোলন করছিল ছাত্র-জনতা। এ সময় সেখান দিয়ে যাওয়ার পথে আসামিদের গুলিতে মহিউদ্দিন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে ৮ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
৯৬ কারখানা বন্ধ : ঠিকমতো খাবারও পাচ্ছে না ৬১ হাজার শ্রমিকের পরিবারে
এ ঘটনায় নিহতের মামাতো ভাই গত ১২ সেপ্টেম্বর মিরপুর থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় কামাল আহম্মেদ মজুমদার একজন এজাহারনামীয় আসামি। এই মামলাসহ পৃথম দুটি হত্যা মামলায় আজ তাকে গ্রেপ্তার দেখানো আদেশ দেন আদালত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।