জুমবাংলা ডেস্ক : ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহম্মেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে ডিএমপির ডিবি পুলিশের একটি টিম। জানা গেছে, আটক বাবু এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড শাহিনের চাচাতো ভাই।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাত ১১টার দিকে ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়ার বাসা থেকে ডিবি পুলিশ তাকে নিয়ে যায়। এমপি আনার হত্যার ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নিয়ে যেতে পারে বলে বাবুর পরিবারের ধারণা ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা) কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান ছিলেন মিজানুর রহমান ওরফে টুটু ওরফে ডা. টুটু। তার বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে। ডা. টুটু এমপি আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড আনোয়ারুজ্জামান শাহীনের আপন চাচাতো ভাই।
এছাড়া চরমপন্থি নেতা শিমুল ভুঁইয়া ডা. টুটুর মামাতো ভাই আবার শ্যালক। সেই সুবাদে ডা. টুটু, শাহীন ও শিমুল ভুঁইয়া ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবুর মামাতো ভাই। এর মধ্যে ডা. টুটু ২০১৬ সালে ক্রসফায়ারে মারা গেছেন। আওয়ামী লীগ নেতা বাবুর সঙ্গে এমপি আনার হত্যার সঙ্গে জড়িতদের আত্মীয়তার বন্ধন রয়েছে। এ বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য-উপাত্ত আছে কিনা সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডিবি পুলিশ তাকে নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে কাজী কামাল আহমেদ বাবুর বড় ভাই কাজী গিয়াস আহমেদ বলেন, ‘এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুকে নিয়ে গেছে বলে আমরা ধারণা করছি। তাকে নেয়ার জন্য ঢাকা থেকে ডিবি আসছে বিষয়টি বাবু জানতো। এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সঙ্গে যেহেতু বাবুর আত্মীয়তার বন্ধন রয়েছে। ফলে বাবুর কাছ থেকে ডিবি হয়তো কোনো তথ্য জানতে পারে। বিষয়টি বড় কোনো কিছু নয়। বাবু অল্প সময়ের মধ্যে বাড়ি চলে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পরিবারের কেউ কোনোদিন কোনো সমাজ বিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল না। এছাড়া বাবু গ্যাসের ব্যবসা করেন। সে আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত কর্মী।’
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান বলেন, ‘ঢাকা থেকে ডিবির একটি টিম এসে কাজী কামাল আহমেদ বাবু নামে একজনকে নিয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি বিশেষ দল ঝিনাইদহে আসেন। তারা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুকে নিয়ে গেছে। কি বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এ ব্যাপারে ডিবি আমাদের কিছুই বলেননি। ঝিনাইদহ থেকে একজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন বলেই আমাকে জানানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন ঝিনাইদহ ৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৩ মে তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে কলকাতার নিউটাউন এলাকার একটি আবাসিক ভবনে হত্যা করে মরদেহ টুকরো টুকরো করে ট্রলি ব্যাগে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয় হত্যাকারীরা।
এ ঘটনায় ভারত ও বাংলাদেশে ৬ জন গ্রেফতার হলেও মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক রয়েছে। আর হত্যা নিশ্চিত হওয়ার কয়েকদিন পর কলকাতার সাঞ্জিবা গার্ডেন্সের সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহের খণ্ডিতাংশের অন্তত ৪ কেজি মাংস উদ্ধার হয়েছে বলে খবর আসে। খুনিদের অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডকে গ্রেফতারের চেষ্টাও চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।