জুমবাংলা ডেস্ক : মেহেদি হাসান প্রভাত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রথমে টার্গেটকৃত নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। পরবর্তীতে কৌশলে কথিত প্রেমিকার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখে। পরে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করে এবং একপর্যায়ে তা ডিলিট করার বিনিময়ে লাখ লাখ টাকা দাবি করে। প্রতিটি ভিডিও এবং ছবির বিপরীতে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা দাবি করতো এই প্রতারক। সম্প্রতি এরকম এক ভয়ঙ্কর প্রতারকের সন্ধান পেয়েছে মহানগর গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
মেহেদি হাসান প্রভাত নামে ভয়ংকর এই প্রতারক গোয়েন্দা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বলে জানায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। মহানগর গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতারক মেহেদি হাসানের সঙ্গে পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে প্রতিবেশী রিনা বেগমের (ছদ্মনাম)। সম্প্রতি তাদের প্রেমের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। নিজেদের ব্যক্তিগত মনোমালিন্যের এক পর্যায়ে রিনার আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় প্রতারক প্রেমিক মেহেদি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে সামাজিকভাবে হেয় এবং লোকলজ্জার কথা ভেবে প্রকাশিত ছবি মুছে ফেলার জন্য মেহেদিকে অনুরোধ করে রিনা
এ সময় আপলোড করা ছবি এবং ভিডিও ফেসবুক থেকে ডিলিট করার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে প্রতারক মেহেদি। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী রিনার বাবা বাদী হয়ে মেহেদির বিরুদ্ধে রাজধানীর বংশাল থানায় মামলা করেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী নারী ও আসামি মেহেদির গ্রামের বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় তাদের মধ্যে বেশ কিছুদিন আগে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। সম্পর্ক চলার একপর্যায়ে মেহেদি কৌশলে তরুণীর কিছু ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে তাদের মনোমালিন্যের কারণে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। হঠাৎ করে গত ৮ই মার্চ ভুক্তভোগী রিনা দেখতে পান মেহেদি হাসান প্রভাত তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে রিনার ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও আপলোড করে। এসব ছবি ডিলিট করার অনুরোধ করলে প্রতারক মেহেদি ছবি মুছে ফেলার বিনিময়ে দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা দাবি করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা গত ৯ই মার্চ ডিএমপির বংশাল থানায় প্রতারক মেহেদির বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারক মেহেদীকে শনাক্ত করে মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের এডিসি নাজমুল হক বলেন, প্রতারক মেহেদি প্রেমের অভিনয় করে কৌশলে প্রেমিকার ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করে রাখে। পরবর্তীতে তাদের সম্পর্কের অবনতি হলে ভুক্তভোগী নারীর ছবি এবং ভিডিও প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করে। এরপর সেটা জানাজানি হওয়ার ভয়ে ভুক্তভোগী নারী তা মুছে ফেলতে অনুরোধ করে। ভুক্তভোগীর অনুরোধকে পুঁজি করে প্রতারক মেহেদি প্রতিটি ছবি এবং ভিডিও ডিলিটের বিপরীতে কয়েক লাখ টাকা দাবি করে। একই ভাবে অসংখ্য নারীর ছবি ও ভিডিওকে পুঁজি করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করছে প্রতারক মেহেদি। মেহেদির মুঠোফোনে আরো একাধিক নারীর ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।