জুমবাংলা ডেস্ক : আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী এক স্বতন্ত্র প্রার্থীকে আপিল আবেদন জমা দিতে যাওয়ার পথে অপহরণ করার অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচন থেকে দূরে রাখার উদ্দেশ্যে তাকে তাকে অপহরণ করা হয় বলে জানা গেছে। রবিবার (৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের পাওয়ার হাউজ মোড় (পিডিবি) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগী ওই প্রার্থীর নাম আব্দুল হক ব্যাপারী। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সদ্য অব্যাহতি নেওয়া জেলা পরিষদ সদস্য।
আব্দুল হক ব্যাপারী জানান, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় তার জেলা পরিষদের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতিপত্র নিতে বাধা দেওয়া হয়। এজন্য তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে ঘটনা অবহিত করলে কর্তৃপক্ষ তাকে আপিল করার পরামর্শ দেয়। রবিবার (৭ নভেম্বর) তিনি আপিল আবেদন জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে কাঁঠালবাড়ী থেকে অটোরিকশা যোগে জেলাশহরে আসছিলেন। পথে শহরের পাওয়ার হাউজ মোড় (পিডিবি) এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেল নিয়ে তার পথ রোধ করে তাকে নির্বাচন অফিসে যেতে নিষেধ করে। দুর্বৃত্তরা তাকে তাদের সঙ্গে যেতে জবরদস্তি করলে তিনি মোটরসাইকেলে উঠতে অস্বীকৃতি জানান। সে সময় তিন-চার জন ‘অপহরণকারী’ অটোরিকশায় উঠে আব্দুল হককে চেপে বসে এবং অটোরিকশার নিয়ন্ত্রণ নেয়। দশ-বারোটি মোটরসাইকেল অটোরিকশাটিকে অনুসরণ করতে থাকে। তার মোবাইল ফোনও কেড়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে সদর উপজেলা পরিষদের পেছন দিয়ে নিয়ে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে বেলগাছা ইউনিয়নে নিয়ে যাওয়া হয়। ইতোমধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়লে আব্দুল হক ব্যাপারীর সমর্থকরা কাঁঠালবাড়ীতে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। শুরু হয় পুলিশি তৎপরতা। অপহরণকারীদের কাছে এ খবর পৌঁছালে তারা আব্দুল হক ব্যাপারীকে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আব্দুল হক ব্যাপারীকে উদ্ধার করে।
আব্দুল হক বলেন, ‘অপহরণকারীদের অনেককেই আমি চিনতে পেরেছি। তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই তাদের এই হীন চেষ্টা। আমি এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’
‘আমি তাদের বলেছি, আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তোমরা কেন অন্যের হুকুমে আমাকে অপহরণ করছো। এতে তোমরাই বিপদে পড়বে। কিন্তু তারা আমার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে, অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেছে। তারা হয়তো আমাকে মেরেই ফেলতো।’ যোগ করেন ভুক্তভোগী এই প্রার্থী।
এদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এমন কাজ করতে পারে না বলে দাবি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। অভিযুক্তরা কারও ব্যক্তিগত ক্যাডার বাহিনী হতে পারে বলে মনে করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি বলেন,‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধার দল। এই দলের নেতাকর্মীরা একজন মুক্তিযোদ্ধাকে অপহরণের মতো হীন কাজ করতে পারে না। এটা কারও ব্যক্তিগত বাহিনীর কাজ কিনা তা অনুসন্ধান করে দেখা প্রয়োজন।’
ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নসহ সার্বিক বিষয় পুলিশ বিশেষ নজরদারিতে রেখেছে।’
আপিল কর্তৃপক্ষ ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম রাকিব জানান, আব্দুল হক ব্যাপারী আপিল আবেদন জমা দিয়েছেন। যাচাই শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।