আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানের নতুন শাসক হিসাবে তালেবান নিজেদের সংহত করছে, এবং সেই সাথে বাকি বিশ্বের অনেক দেশ নতুন এই বাস্তবতায় তাদের নিজেদের ভূমিকা এবং কৌশল নির্ধারণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। খবর বিবিসি বাংলার।
বিশ্বের বিভিন্ন রাজধানীতে- মস্কো থেকে বেইজিং, বার্লিন থেকে ইসলামাবাদ– আফগানিস্তান নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা এখন প্রবল।
তাছাড়া, ২৬শে অগাস্ট কাবুল বিমানবন্দরে বিধ্বংসী আত্মঘাতী হামলা থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে তালেবানের বিজয়ে আফগানিস্তানে তৎপর অন্য কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী খুশি নয় এবং সেটা তারা প্রকাশও করছে।
কিন্তু নতুন আফগানিস্তানে তালেবানের কাছ থেকে এই সব গুরুত্বপূর্ণ দেশ কীভাবে তাদের স্বার্থ হাসিল করতে বা প্রভাব ধরে রাখতে চাইছে?
কীভাবে নতুন আফগান পরিস্থিতি এসব দেশকে প্রভাবিত করতে পারে:
পাকিস্তান
কাবুলে ক্ষমতার পালাবদল যে দেশটিকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করবে সেটি হলো পাকিস্তান। আফগানিস্তানের সাথে পাকিস্তানের ২৪০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে।
পাকিস্তানে নিবন্ধিত আফগান শরণার্থীর সংখ্যা ১৪ লাখ। প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে আফগানিস্তানে যে কোনও অস্থিতিশীলতার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে পাকিস্তানে। কিন্তু তালেবানের সাথে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও পাকিস্তানের।
তালেবান, পশতু ভাষায় যার অর্থ ছাত্র, তাদের উত্থান ১৯৯০ এর দশকে পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে। এই আন্দোলনে যারা প্রথম যোগ দেয় তাদের অনেকের লেখাপড়া পাকিস্তানের মাদ্রাসায়।
যদিও তালেবানকে সাহায্য করার কথা পাকিস্তান সবসময় অস্বীকার করে, কিন্তু ১৯৯৬ সালে কাবুলে তাদের ক্ষমতা দখলের পর যে তিনটি দেশ তাদের স্বীকৃতি দিয়েছিল পাকিস্তান ছিল তাদের অন্যতম।
বাকি দুটো দেশ ছিল– সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই তিনটি দেশের মধ্যে পাকিস্তানই সবশেষে তালেবানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
যদিও গত ২০ বছরে তালেবানের সাথে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে নানা টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে, কিন্তু ব্রিটেনের গবেষণা সংস্থা রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইন্সটিটিউটের (রুসি) গবেষক উমের করিম বলেন, পাকিস্তানের নীতি নির্ধারকদের মধ্যে সাধারণভাবে একটি বিশ্বাস কাজ করছে যে এবার তারা কিছু সাফল্য অর্জন করেছেন।
পাকিস্তানে যারা ভারতের সাথে রেষারেষিকে পররাষ্ট্র নীতিতে খুব গুরুত্ব দেন তারা মনে করছেন তালেবানের ক্ষমতা দখলে আফগানিস্তানে ভারতের প্রভাব কমবে।
মি. করিম বলেন, বিশেষ করে জালালাবাদ এবং কান্দাহারের মত সীমান্তবর্তী আফগান শহরগুলোতে ভারতের কনস্যুলেটগুলো নিয়ে পাকিস্তান খুবই উদ্বিগ্ন ছিল।
তিনি বলেন, পাকিস্তান মনে করে ভারত উত্তরে পাকিস্তান বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিকে তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং দক্ষিণে বালুচ বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদি গোষ্ঠীর প্রধান উস্কানি-দাতা, এবং আফগানিস্তানের এসব ভারতীয় কনস্যুলেটের মাধ্যমে এসব বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে নানা সাহায্য সহযোগিতা করা হতো।
এই গবেষক বলেন, পাকিস্তান বিশ্বাস করে তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানে তারা তাদের প্রভাব পুনরুদ্ধার করতে পারবে।
তিনি বলেন, আফগানিস্তানের প্রধান ব্যবসা-বাণিজ্য হয় পাকিস্তানের ভেতর দিয়ে। চাল, আটা, সবজি থেকে শুরু করে সিমেন্ট এবং নির্মাণ সামগ্রীও পাকিস্তানের ভেতর দিয়েই আফগানিস্তানে যায়।
মি. করিম মনে করেন, পাকিস্তানের ওপর অর্থনৈতিক নির্ভরতার কারণেও বিভিন্ন ইস্যুতে বিশেষ করে নিরাপত্তার ইস্যুতে পাকিস্তানকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী হবে তালেবান।
সেই সাথে আফগানিস্তানের ভেতর দিয়ে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে একটি বাণিজ্য করিডোর তৈরি নিয়েও পাকিস্তান খুবই আগ্রহী।
মি করিম বলেন, তালেবানের সরকার বিশ্বে একঘরে হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই অবস্থায় পাকিস্তানের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তারা যেতে পারবে না।
রাশিয়া
আফগানিস্তানে ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত দশ বছর ধরে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের যুদ্ধ এবং তাতে পরাজয়ের ইতিহাস রাশিয়া সহজে ভুলবে না।
যদিও আফগানিস্তানে রাশিয়ার সরাসরি স্বার্থ এখন তেমন বেশি কিছু নয়, কিন্তু উত্তরের প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর আফগানিস্তানে যে কোনও অস্থিতিশীলতার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে মস্কো চিন্তিত।
সাবেক সোভিয়েত এসব দেশের– উজবেকিস্তান, তাজিকস্তান, তুর্কমেনিস্তান- সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক এখনও ঘনিষ্ঠ।
তবে রাশিয়ার ককেশাস অঞ্চলের জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর আফগানিস্তানে আশ্রয়-প্রশ্রয় পাওয়া নিয়ে মস্কো সবচেয়ে বেশি চিন্তিত। বিশেষ করে ইসলামিক স্টেটের সাথে সম্পর্কিত এসব জিহাদি সংগঠনগুলো রাশিয়া এবং তালেবান উভয়ের জন্যই বিপজ্জনক। ফলে, রাশিয়া বেশ কিছুদিন ধরেই তালেবানের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে শুরু করেছে।
রাশিয়া ইন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স সাময়িকীর সম্পাদক ফিওদর লুকিয়ানভ বিবিসিকে বলেন, রাশিয়া আফগানিস্তানে তাদের “দ্বৈত নীতি“ অব্যাহত রাখবে। মস্কো একদিকে রাজনৈতিক নিরাপত্তার স্বার্থে তালেবানের সাথে সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করবে। অন্যদিকে, তাজিকস্তানে রাশিয়া তাদের সৈন্য সংখ্যা বাড়িয়েছে। তাজিকস্তান এবং আফগানিস্তানের সাথে সামরিক সম্পর্ক বাড়িয়ে রাশিয়া চেষ্টা করবে যাতে উগ্র ইসলামপন্থীরা আফগানিস্তান থেকে ককেশাস দেশগুলোতে ঢুকতে না পারে।
তবে সামগ্রিকভাবে, যে অঞ্চলটিকে রাশিয়া তাদের প্রভাব বলয়ের অংশ বলে বিবেচনা করে সেই মধ্য এশিয়া থেকে আমেরিকানদের চলে যাওয়া মস্কোর জন্য জন্য বড় একটি স্বস্তি।
মস্কোতে রাজনৈতিক বিশ্লেষক আর্কাদি দুবনভ ব্রিটিশ দৈনিক ফাইনানশিয়াল টাইমসকে বলেন, আমাদের জন্য যেটা ভালো আমেরিকার জন্য তা খারাপ, আবার আমাদের জন্য যেটি খারাপ, আমেরিকার জন্য তা ভালো। আমেরিকার জন্য আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি খারাপ এবং তা আমাদের জন্য ভালো।
চীন
আফগানিস্তানে চীনের যেমন অর্থনৈতিক অভিলাষ রয়েছে, সেই সাথে চীনের নিরাপত্তার জন্যও আফগানিস্তান গুরুত্বপূর্ণ।
আমেরিকা চলে যাওয়ার পর চীনা কোম্পানিগুলোর জন্য আফগানিস্তানের খনিজ সম্পদে হাত দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে মাইক্রোচিপ সহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে ব্যবহার হয় এমন বিরল রেয়ার আর্থের মজুদ আফগানিস্তানে রয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
আমেরিকার বিশেষজ্ঞদের মতে আফগানিস্তানে এক ট্রিলিয়ন ডলারের খনিজ সম্পদ রয়েছে। আফগান সরকার মনে করে, এর পরিমাণ তিন গুণ বেশি।
কিন্তু সেই খনিজ সম্পদ আহরণে পা বাড়াতে চীনের ভেতর এখনও দ্বিধা রয়েছে। চীনা সরকারি মুখপাত্র হিসাবে পরিচিতি গ্লোবাল টাইমস তাদের ২৪শে আগস্টের সংখ্যায় লিখেছে, চীন সরকার আফগানিস্তানে রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তার বিষয়গুলো নিয়ে এখনও ভাবছে।
তাছাড়া, আফগানিস্তানে পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা চাপালে সেই দেশের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের পরিণতি নিয়েও চীন ভাবছে।
গ্লোবাল টাইমস বলছে, চীনের বেসরকারি খাত আফগানিস্তানের বাজার নিয়ে খুবই উৎসাহী। তারা মনে করছে আফগানিস্তানে বাণিজ্যের হাজারো রকমের সুযোগ রয়েছে।
কৌশলগত দিক থেকে আফগানিস্তানে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার পেছনে চীনের যুক্তি রয়েছে। সিল্ক রোড নামে এশিয়া থেকে ইউরোপ পর্যন্ত প্রাচীন যে স্থল বাণিজ্য রুটটি পুনরুদ্ধারে চীন বদ্ধপরিকর, আফগানিস্তান সেই রুটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
আফগানিস্তানের প্রতিবেশী পাকিস্তান এবং ইরানে চীন ইতিমধ্যেই ব্যাপক মাত্রায় অবকাঠামো তৈরি করছে। আফগানিস্তানকেও যে চীন তাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় আনতে চাইবে তা খুবই স্বাভাবিক।
সেই সাথে, আফগানিস্তানে আঞ্চলিক ইসলামি উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা নিয়ে রাশিয়ার মত চীনেরও উদ্বেগ রয়েছে। বিশেষ করে উইগুর মুসলিম অধ্যুষিত শিনজিয়াংয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে চীনের সেই উদ্বেগ রাশিয়ার চেয়েও হয়তো বেশি।
বিবিসির সাবেক সংবাদদাতা এবং কূটনৈতিক বিশ্লেষক জনাথন মার্কাস বলেন, চীনের সাথে আফগানিস্তানের সীমান্ত ছোট। কিন্তু বেইজিং বিরোধী উগ্র ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীরা আফগানিস্তানকে ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করতে পারে এমন সম্ভাবনা নিয়ে চীন উদ্বিগ্ন।
মি মার্কাস বলেন, বুঝতে কষ্ট হয়না কেন চীন তালেবানের সাথে ঘনিষ্ঠতা তৈরিতে এত আগ্রহী।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ২৫ আগস্ট আফগান পরিস্থিতি নিয়ে টেলিফোনে কথা বলেন। জানা গেছে ঐ টেলিফোন আলাপে চীনা ও রুশ নেতা “আফগানিস্তান থেকে সন্ত্রাস এবং মাদকের হুমকি মোকাবেলায়“ তৎপরতা বাড়াতে একমত হন।
ইরান
ইরান “গত বেশ কয়েক বছর ধরে“ তালেবানের সাথে যোগাযোগ রাখছে, বলেন গবেষক উমের করিম।
বিশেষ করে, মি করিম বলেন, ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারী গার্ড বাহিনীর কুদস্ ফোর্স, যারা যুদ্ধের অপ্রচলিত কৌশলে সিদ্ধহস্ত এবং যুক্তরাষ্ট্র যাদেরকে সন্ত্রাসী একটি বাহিনী হিসাবে বিবেচনা করে, তারা তালেবানের সাথে যোগাযোগ রাখছে।
তিনি বলেন, ইরান তালেবানের নেতাদের আমন্ত্রণ করে নিয়ে গেছে। তাদের টাকা পয়সা এবং অস্ত্রও দিয়েছে। বদলে, তালেবান এখন আফগান শিয়াদের ব্যাপারে, বিশেষ করে শিয়া হাজারা জাতিগোষ্ঠীর ব্যাপারে অনেক নরম। যে কারণে হাজারা অধ্যুষিত মধ্য আফগানিস্তানে তালেবান একটিও গুলি না ছুড়েই দখল করতে পেরেছে।
তবে তালেবানের স্থানীয় পর্যায়ের যোদ্ধারা হাজারাদের হেনস্থা নির্যাতন করেছে- এমন বেশ কিছু খবর গত কদিনে বেরিয়েছে।
মি. করিম বলেন, আফগানিস্তানকে বাকি বিশ্ব থেকে একঘরে করা হলে, সেখানে ইরানের প্রভাব তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হবে। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ফেলে যাওয়া ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য অস্ত্র– যেগুলো এখন তালেবানের হাতে- বিশ্লেষণে ইরান আগ্রহী হবে।
তাছাড়া, আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতায় ইরানের স্বার্থ রয়েছে, কারণ তাতে সেদেশে আফগান শরণার্থীর চাপ কমবে। জাতিসংঘের হিসাবে ইরানে বর্তমানে ৭ লাখ ৮০ হাজার আফগান শরণার্থী রয়েছে। বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা অনেক বেশি।
পশ্চিমা বিশ্ব
পশ্চিমা নেতারা আফগানিস্তানের তাদের ২০ বছরের সামরিক তৎপরতাকে একটি সাফল্য হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করছেন এবং করবেন। তবে তালেবান মনে করে পশ্চিমাদের সাথে যুদ্ধে তারাই জয়ী হয়েছে।
আফগানিস্তানে তাদের ভাবমূর্তির যে ক্ষতি হয়েছে তা পুনরুদ্ধারে আমেরিকা এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের বেশ কিছুটা সময় লাগবে। তালেবানের সাথে সম্পর্ক আগামিতে তাদের মাথাব্যথার বড় একটি কারণ হবে।
কিন্তু ২৫শে আগস্ট জার্মান পার্লামেন্টে এক ভাষণে চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল বলেন, আফগানিস্তানে গত ২০ বছরে যে অর্জন হয়েছে তা যতটা সম্ভব ধরে রাখা আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।
তার আগের দিন অর্থাৎ ২৪শে আগস্ট ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মাইকেল বলেন, নতুন আফগান শাসকদের সাথে আমাদের কী সম্পর্ক হবে সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনও আসেনি।
তিনি বলেন, এই সম্পর্ক নির্ভর করবে নতুন শাসকদের কাজ এবং আচরণের ওপর।
তিনি বলেন, মানবাধিকার এবং বিশেষ করে নারী শিক্ষা এবং নারী অধিকার এবং সেই সাথে সন্ত্রাস এবং মাদক চোরাচালান নিয়ে তালেবান কী করে ইউরোপ সেদিকে নজর রাখবে।
আফগানিস্তান থেকে শরণার্থীর নতুন ঢেউ প্রশমনও পশ্চিমা দেশগুলোর অন্যতম একটি লক্ষ্য।
আরেকটি বড় চিন্তা সন্ত্রাসের হুমকি।যদিও আমেরিকা এবং তালেবানের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তাতে বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র দেশগুলোর ওপর হামলা চালাতে কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী যেন আফগানিস্তানকে ব্যবহার না করতে পারে তালেবান তা নিশ্চিত করবে। কিন্তু সেই ভরসা পশ্চিমারা করতে পারছে না। বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে হামলার ঘটনা প্রমাণ করে এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আফগানিস্তানে তৎপর।
ইসলামি বিভিন্ন গোষ্ঠী
কাবুল বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবারের সন্ত্রাসী হামলা আরো প্রমাণ করে যে আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সেদেশে তৎপর বিভিন্ন বিদ্রোহী এবং উগ্র গোষ্ঠীগুলোর শক্তির ভারসাম্যে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে।
একদিকে, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, আফগানিস্তানে এখন আল কায়েদার অবস্থান সংহত হতে পারে।
জাকার্তায় গবেষণা সংস্থা ইন্সটিটিউট ফর পলিসি অ্যানালাইসিস অফ কনফ্লিক্ট (আইপিএসি)- এর পরিচালক সানা জাফরি বলেন, অন্যদিকে, আইএস দ্বারা উদ্বুদ্ধ বিভিন্ন গোষ্ঠী তাদের প্রাসঙ্গিকতা প্রমাণ করার চাপে পড়তে পারে।
বিবিসিকে তিনি বলেন, আইএস পন্থী গোষ্ঠীগুলো তালেবানের বিজয়ের নিন্দা করছে। তারা বলছে এই বিজয় জিহাদ করে আসেনি বরঞ্চ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘৃণ্য একটি চুক্তির মাধ্যমেই তালেবান ক্ষমতা নিয়েছে।
তারপরও মিজ জাফরি বলেন, তালেবানের বিজয় আল কায়েদার মত গোষ্ঠীগুলোর কাছে বহুদিন পর একটি সুখবর।
তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় উগ্রপন্থীদের পরিচালিত বিভিন্ন সোশাল মিডিয়া চ্যানেলের কথাবার্তা এবং বিভিন্ন বক্তব্য বিবৃতি থেকে এটা পরিষ্কার যে তালেবানের বিজয়ে তারা উৎফুল্ল। এই বিজয় থেকে তারা যে শিক্ষা নিচ্ছে তা হলো ধৈর্য ধরলে ফল মেলে। কোনো সন্দেহ নেই তালেবানের সাফল্য এই অঞ্চলে উগ্রবাদীদের উৎসাহিত করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।