আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দ্য অ্যালায়েন্স ফর গ্রিন রেভল্যুশন ইন আফ্রিকা বা অ্যাগরা জার্মানিসহ পশ্চিমা দাতা দেশগুলোর কাছে পছন্দের প্রথম সারিতে রয়েছে৷ কিন্তু একটি গবেষণা বলছে, এই সংগঠন কাজের কাজ কিছুই করছে না৷ খবর ডয়চে ভেলে’র।
অ্যাগরার ওয়েবসাইটের দিকে তাকালে বেশ কিছু সংখ্যা চোখে পড়ে, যেগুলো দেখলে তাদের কাজকর্ম ইতিবাচক এবং উৎপাদনশীল বলেই মনে হবে৷ যেমন ধরুন, আফ্রিকা মহাদেশে ৫৫কোটি ইউরো বিনিয়োগ করে নিজেদের মাইলফলক রচনা করা, ১১৯টি বীজ কোম্পানি প্রতিষ্ঠা, ৭০০ বিজ্ঞান পত্রিকায় অর্থ ঢালা এবং দুই কোটি ৩০ লাখ কৃষকদের সাহায্য করা৷ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংখ্যা এই ওয়েবসাইটে এখন খুঁজে পাবেন না, আর সেগুলো হল তাদের পুরোনো লক্ষ্য পূরণের সংখ্যা, অর্থাৎ আসলে তাদের মাইলফলক কি ছিলো? তাদের লক্ষ্য ছিলো ২০২০ সালের মধ্যে দুই কোটি কৃষকের আয় দ্বিগুণ করা এবং আফ্রিকার ২০টি দেশে খাদ্য গুদাম করা৷ ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠার সময় এটাই ছিলো তাদের অঙ্গীকার৷ বেশ কয়েকটি জার্মান এবং আফ্রিকান উন্নয়ন সংস্থা রোজা লুক্সেমবার্গ ফাউন্ডেশনের সাথে মিলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে অ্যাগরা সম্পর্কে৷ রিপোর্টে ওই সংগঠন সম্পর্কে কোন ভালো কথা বলা হয়নি৷ আফ্রিকায় অ্যাগরার ১৩টি অংশীদারী দেশে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা কমার বদলে এক তৃতীয়াংশ বেড়েছে৷ আটটি দেশে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনের হার কমেছে আগের বছরগুলোর তুলনায়৷
দাতা দেশগুলো আফ্রিকার ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য যে অর্থ দিয়েছিল, তা তাদের দেয়া হয়নি৷ বরং সার এবং বীজ কেনার জন্যও এই কৃষকদের ঋণ নিতে হয়েছে৷ গত কয়েক বছরে জাম্বিয়ায় কৃষিখাতে বড় বিপর্যয়ের কারণে সরকার পর্যন্ত ঋণে জর্জরিত৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, আফ্রিকার দেশগুলোর সরকারের সাথে কাজ না করে অ্যাগরা মূলত বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কাজ করে৷ বিশেষ করে বীজ ও সার কোম্পানিগুলোর সাথে৷
এসব কোম্পানির সার ব্যবহারের ফলে বেশিরভাগ দেশের মাটির অম্লতা বেড়ে উর্বরতা কমে গেছে৷
জার্মানির অর্থনীতি সহযোগিতা এবং উন্নয়ন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আফ্রিকার দেশগুলো, আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং সেখানকার সাধারণ মানুষ অ্যাগরাকে বেশ সম্মান করে৷
সাংবাদিকদের সাথে অ্যাগরা বরাবরই খুব ভালো সম্পর্ক বজায় রেখেছে৷ যেকোন সাক্ষাৎকারে তাদের কর্মকর্তারা বেশ আগ্রহের সাথেই রাজি হয়েছেন৷ সাংবাদিকদের তাদের খরচায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন৷ কিন্তু নতুন এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ডয়চে ভেলে বহুবার চেষ্টা করেও তাদের কোন প্রতিনিধির মন্তব্য নিতে সমর্থ হয়নি৷
তবে তাদের পক্ষ থেকে একটি লিখিত বক্তব্য এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে, এই প্রতিবেদনে তাদের যে সমালোচনা করা হয়েছে, তা তারা প্রত্যাখ্যান করেছেন, কারণ এই অনুসন্ধান সঠিক নয়৷
২০২১ সালের শেষ নাগাদ তারা তাদের কাজের মূল্যায়ন সবার সামনে উপস্থাপন করবে বলে জানিয়েছে৷ তবে জার্মানি এখনও অ্যাগরাকে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে৷ বিএমজেড এর বক্তব্য, অ্যাগরা হয়ত উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল, তাই তা পূরণ করা সম্ভব হয়নি৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।