জুমবাংলা ডেস্ক : বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হ’ত্যার ঘটনায় গ্রেফতার রাজশাহীর মোহনপুরের অনিক সরকার এবং পবার মেহেদী হাসান রবিনের পরিবারের সদস্যরা মুষড়ে পড়েছেন। হতবাক হয়েছেন উভয়ের বাবা-মা। তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না, এতো মেধাবী ছেলেরাও আরেকজন মেধাবী ছেলেকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হ’ত্যা করতে পারে। পরিবারের সদস্যদের ধারণা, অসত্ চক্রের সঙ্গে জড়িত হয়েই অনিক সরকার ও মেহেদী হাসান রবিন এমন নৃশংস হ’ত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। তারাও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
জানা গেছে, অনিক সরকারের বাড়ি রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বড়ইকুড়ি গ্রামে। অনিক ঐ গ্রামের বাসিন্দা ও কাপড় ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি উপজেলার কৃষ্ণপুরে। কিন্তু ব্যবসার প্রয়োজনে পুরো পরিবার মোহনপুর উপজেলা সদরের বড়ইকুড়ি গ্রামে বসবাস করেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে অনিক ছোটো। এছাড়া তাদের পেট্রোল পাম্প এবং সারের ডিলারশীপের ব্যবসা রয়েছে। ছোটো ছেলে অনিক সরকারকে নিয়েই পরিবারের বড়ো স্বপ্ন ছিল। কিন্তু আবরার ফাহাদ হ’ত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর তাদের স্বপ্ন এখন ফিকে হয়ে এসেছে। এছাড়া আনোয়ার হোসেনের পরিবারে নেমে এসেছে গভীর হতাশা। মুষড়ে পড়েছেন অনিকের বাবা-মা।
অনিকের সম্পর্কে জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই ছেলেকে নিয়ে ছিল আমার অনেক আশা-ভরসা। আজ সব মাটি হতে চলেছে। আমি ভাবতেও পারি না এমন মেধাবী একটা ছেলে আরেকজন মেধাবীকে হ’ত্যা করবে। তার তো কোনো অভাব ছিল না। আমি তাকে কোনো অভাব বুঝতে দেইনি। কিন্তু কেন সে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লো? আবার কেনই বা আরেকজনকে হ’ত্যা করতে গেল? হয়তো সঙ্গদোষে এমন কাণ্ডে জড়িত হতে পারে। কাজেই ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে আমি বিচার করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘অনিক মোহনপুর সরকারি স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে ঢাকার নটরডেম কলেজে ভর্তি হয়। সেখান থেকে এইচএসসি পাশের পর বুয়েটে ভর্তি হয়। কোন সাবজেক্টে পড়ে বলতে পারবেন না। সে রাজনীতি করত এটাও জানতেন না। তবে মাস দুয়েক আগে শুনেছিলেন ছেলে ক্যাপ্টেন হয়েছে। কিন্তু কীসের ক্যাপ্টেন বলতে পারবেন না। ঐ কথা শোনার পরই তাকে বকাঝকা করেছিলেন। পড়তে গেছিস পড়বি। অন্য কিছুতে জড়াতে পারবি না।’
অন্যদিকে রবিনের বাড়ি জেলার পবার কাটাখালি পৌর এলাকার কাপাশিয়া পূর্বপাড়ায়। রবিনের বাবা মাকসুদ আলী পুঠিয়ার ভড়ুয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক। তার একমাত্র সন্তান রবিন। রবিন বাবার স্কুল থেকেই এসএসসি পাশ করে রাজশাহী সরকারি নিউ গভার্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে। এরপর বুয়েটে ভর্তি হয়। আর মাত্র সাত মাস পরেই রবিন পাশ করে বের হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই হ’ত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার খবরে রবিনের পরিবারেও নেমে এসেছে হতাশার ছাপ। এ ঘটনায় রবিনের মা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তারা বলেন, ‘আমরা তো ছেলেকে পড়তে পাঠিয়েছি। কিন্তু সে হ’ত্যাকাণ্ডে জড়াবে কেন?
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।