বিনোদন ডেস্ক: “আপনি কি আবার দীপিকা পাড়ুকোনের পোশাক পরে নিয়েছেন?” এই কটাক্ষ তাঁর জন্য নতুন নয়। কিন্তু তিনি নিজের ফ্যাশন ও স্টাইলিং থেকে কখনও এক পা পিছু ফিরে আসেননি। তাঁকে যেমন ‘বলিউডের ফ্যাশন ডিজাজস্টার’ বলা হয়। এই কথাও ঠিক যে, তাঁর স্টাইলিংয়ের জন্য সবসময়ই শিরোনামে থাকেন। তিনি রণবীর সিং (Ranveer Singh)। এই প্রাইড মান্থে রণবীরের ফ্যাশন নিয়ে যদি আমরা কথা না বলি, তাহলে আর কখন এই আলোচনা করার সঠিক সময় আসবে?
আসলে রণবীরের ফ্যাশনে আছে একটু অন্যরকম টাচ। যা সবার থেকে আলাদা। বলিউড যখন এখনও অ্যান্ড্রোজিনাস স্টাইলিং নিয়ে খোলাখুলি কথা বলতে পারে না, সেই সময়েই দাঁড়িয়েই অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন রণবীর সিং। তিনি জেন্ডার ফ্লুইড ড্রেসে নিজেকে সাজিয়ে নিয়েছেন। যাঁরা বুঝতে পারিনি, আসলে তাঁরাই পিছিয়ে আছি।
ফ্যাশনে অ্যান্ড্রোজিনি, বিষয়টা ঠিক কী?
অ্যান্ড্রোজিনি বা অ্যান্ড্রোজিনাস, এই কথার অর্থ হল যেখানে বিশেষ কোনও লিঙ্গকে হাইলাইট করা হবে না। ড্রেসের ক্ষেত্রেও এই বিষয়টি প্রযোজ্য।
সমাজের বাঁধাধরা জেন্ডার স্টেরিওটাইপকে ভেঙে নিজের মনের মতো পোশাক পরার ইচ্ছে। অর্থাৎ, আমি ছেলে হই বা মেয়ে হই, নিজের পছন্দের পোশাক পরার জন্য় জেন্ডার নিয়ে ভাবতে হবে না আমায়। পুরুষও স্কার্ট পরতে পারেন। নারীরাও পরতে পারেন প্যান্ট-শার্ট।
রণবীর সিং ঠিক সেরকম ফ্যাশনে বিশ্বাস করেন বলে মনে করেন অনেকেই। ফ্যাশন পুলিশরা হয়তো অনেক সময় সেই বিষয়টি সাপোর্ট করেন না। কিন্তু রণবীরের কিচ্ছু যায় আসে না। এই লুকে রণবীর একটি কো-অর্ড সেট পরেছেন।
সোনার হার যদিও মেয়েরাই একগাদা পরতে পারেন বলে মনে করে সমাজ। কিন্তু রণবীর মনে করেন না। এই কো-অর্ড মনোক্রম্যাটিক ড্রেসের সঙ্গে রণবীর পরেছেন সোনার হার। সঙ্গে ‘মেয়েদের ব্যাগ’ নিয়ে স্টাইলিং করেছেন।
কেন জেন্ডার ফ্লুইড ড্রেস নিয়ে কথা বলা উচিত?
এটা একবিংশ শতাব্দী। তাও নিজের পছন্দমতো পোশাক পরার জন্য় আমাদের অনেক সময় অনেক কটাক্ষের মুখোমুখি হতে হয়। কোনও ছেলে যদি নিজের পছন্দের পোশাক হিসেবে শাড়ি বা স্কার্টকে বেছে নিতে চান, তাহলেই সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। এমনকী রঙের ক্ষেত্রেও সেই বাঁধাধরা নিয়ম তো রয়েইছে। যেমন গোলাপি নাকি মেয়েদের রং, এই কথা মনে করেন অনেকেই। এই ধারণাগুলোই এবার ভেঙে ফেলা প্রয়োজন। ড্রেসিংয়েও কি কোনও জেন্ডার থাকতে পারে!
রণবীরও এরকম কথা মনে করেন না। তাই তিনি একবার নয়, বরং বারবার নিজেকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত গোলাপি রঙের পোশাকে সাজিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও কখনও স্কার্ট বা কখনও নাকে নথ পরেও প্রকাশ্যে এসেছেন তিনি।
মুক্তোর মালা
একটি টি-শার্টের সঙ্গে মুক্তোর মালা পরে স্টাইলিং করার কথা মেয়েরাও ভাবতে পারেন না অনেক সময়। কিন্তু রণবীর তা পরেই নিয়েছেন। দেখুন একটি মুক্তোর মালা পরেছেন এই আউটফিটের সঙ্গে।
এই লুকের জন্যেও কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল রণবীর কাপুরকে। কিন্তু তাতে সত্যিই কি কিছু যায় আসে? বরং নিজের পছন্দ মতো স্বাধীনভাবেই পোশাক বেছে নেওয়া উচিত।
পোলকা ডটস, “দীপিকার পোশাক পরেছেন নাকি!”
রণবীরের এই লুকটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরপরেই ট্রোলিংয়ের শিকার হয়েছিলেন অভিনেতা। অনেকেই ট্যুইটারে লিখেছিলেন, অভিনেতা তাঁর স্ত্রীর পোশাক পরেছেন। কিন্তু তাতে রণবীরের কিছু যায় আসে না। বরং, একটি কালো-সাদা পোলকা ডটস শার্ট পরেছিলেন তিনি। মাথাতেও পোলকা ডটসের ব্যান্ড পরে নিয়েছিলেন অভিনেতা।
এর সঙ্গে তিনি যে প্যান্ট পরেছিলেন, তাও ছিল সালোয়ার প্যাটার্নের। এই কথা সত্যিই যে, তথাকথিত মেয়েদের ড্রেসে নিজেকে সাজিয়েছিলেন রণবীর। কিন্তু তাঁর স্টাইলিং তাঁরই স্বাধীনতা।
গোলাপি মেয়েদের রং? রণবীর বিশ্বাস করেন না
এই কথা অনেকেই মনে করেন যে, গোলাপি শুধুই মেয়েদের রং। এই রঙের পোশাক শুধুমাত্রই মেয়েরা পরতে পারেন। কিন্তু না রণবীর কিন্তু তা মনে করেন না। অন্তত তাঁর একাধিক লুক দেখে সেই কথাই আমাদের কাছে স্পষ্ট। বারবার মাথা থেকে পা পর্যন্ত গোলাপি রঙে নিজেকে সাজিয়ে নিয়েছেন রণবীর।
এই ক্ষেত্রেই তিনি একটি গোলাপি রঙের মনোক্রম্যাটিক কো-অর্ড ড্রেস পরেছেন। আর ট্রোলিংয়ে দিয়েছেন সপাটে জবাব। আমাদের মন জিতে নিয়েছেন রণবীর সিং।
সূত্র: এই সময়
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।