ওয়াশিংটনভিত্তিক বিশ্বখ্যাত জনমত জরিপ সংস্থা গ্যালাপের এক সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমের প্রতি জনগণের আস্থা ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। দশ জনের মধ্যে তিন জনেরও কম আমেরিকান এখন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বিশ্বাস রাখছেন।
সেপ্টেম্বর মাসে পরিচালিত এই জরিপে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ১ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক অংশ নেন। ফলাফলে দেখা যায়, মাত্র ২৮ শতাংশ নাগরিক সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও রেডিওর ওপর ‘ন্যায্য পরিমাণে’ আস্থা প্রকাশ করেছেন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩১ শতাংশ, পাঁচ বছর আগে ৪০ শতাংশ এবং ১৯৭০-এর দশকে প্রায় ৭০ শতাংশ আমেরিকান গণমাধ্যমকে বিশ্বাস করতেন।
জরিপে আরও দেখা গেছে, ৩৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন তারা গণমাধ্যমে “খুব বেশি নয়” এমন আস্থা রাখেন, আর ৩৪ শতাংশ বলেছেন—তাদের “একদমই আস্থা নেই।”
দলীয় বিভাজনেও দেখা গেছে তীব্র পার্থক্য। রিপাবলিকানদের মধ্যে গণমাধ্যমের প্রতি আস্থা নেমে এসেছে এক অঙ্কে—মাত্র ৮ শতাংশ, যা এই জরিপের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে ৫১ শতাংশ ডেমোক্র্যাট এখনো সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টিংয়ে বিশ্বাস রাখেন।
গবেষকরা বলছেন, এই আস্থাহ্রাস মূলত রাজনৈতিক বিভাজন ও পক্ষপাতমূলক সংবাদ কাভারেজের কারণে। হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার প্রথম ১০০ দিনে মূলধারার গণমাধ্যমে বিপুল পরিমাণ নেতিবাচক কভারেজ পেয়েছিলেন।
এদিকে মার্কিন মিডিয়া রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছে, এবিসি, এনবিসি ও সিবিএস নিউজে ট্রাম্প সম্পর্কে প্রচারিত ৯০ শতাংশেরও বেশি সংবাদ ছিল নেতিবাচক। এর প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প প্রশাসন তাদের প্রথম ১০০ দিন পূর্তিতে “১০০ দিন প্রতারণা” শিরোনামে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যেখানে প্রধান সংবাদমাধ্যমগুলোকে “একগুঁয়েমি ও মিথ্যার বন্যা ছড়ানোর” অভিযোগ আনা হয়।
এই জরিপ যুক্তরাষ্ট্রে গণমাধ্যমের প্রতি জনগণের আস্থা কত দ্রুত ক্ষয়ে যাচ্ছে তার একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।