রঞ্জু খন্দকার ও সোহান আমিন, রাজশাহী থেকে: আমের রাজধানী যদি বলা হয় রাজশাহীকে, তবে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরকে বলতে হবে এর বাণিজ্যিক রাজধানী। রাজশাহীতে আমের সবচেয়ে বড় মোকাম এটি। এখানকার সড়ক-মহাসড়ক ছাপিয়ে আস্তেধীরে এ বাজার ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইনেও। অনলাইনেও বানেশ্বর বাজারের আম বিক্রি করেন অনেকে।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার গোপালভোগ বাজারে আসার মধ্য দিয়ে বানেশ্বর মোকাম জমজমাট হয়ে উঠছে। এর আগে প্রায় ১০ দিন ধরে বিক্রি হয়েছে গুটি আম।
সরকারি আমপঞ্জিকা অনুসারে, এবার রাজশাহীতে ৪ মে থেকে গুটি আম পাড়া শুরু হয়। গোপালভোগ ১৫ মে পাড়া শুরু হয়েছে। এরপর লক্ষণভোগ বা লখনা ও রানীপছন্দ ২০ মে এবং হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি ২৫ মে থেকে বাজারজাত করার কথা। অন্যান্য জাতের আম আরও পরে আসবে বাজারে।
অবশ্য কয়েকজন চাষি বলেন, গোপালভোগ ১৫ মের আগেই বাগানে পেকেছে। তখন অল্প করে তাঁরা স্থানীয় বাজারে ছেড়েছেন। ১৬ মে থেকে পুরোপুরি বাজারে আনছেন। অনলাইনেও বিক্রি করছেন।
গত শুক্রবার বানেশ্বর বাজারে গোপালভোগ এনেছিলেন স্থানীয় চাষি আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, বাগানে আগেই পাকায় তিনি আম এনেছেন। আম পাকা কি না, তিনি ক্রেতাদের ছুড়ি দিয়ে আম কেটে দেখান।
স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা জানান, বানেশ্বর বাজার থেকে দেশের সব জায়গায় আমের চালান যায়। এখানে দিনে কয়েক শ মণ আম বেচাকেনা চলে। টাকার অঙ্কে তা কয়েক কোটি। দিনে চাষিদের কাছে আম কিনে রাতে তা ট্রাকে করে চলে যায় বিভিন্ন এলাকায়।
বানেশ্বর বাজারের আমব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ বাজারে তিনি দিনে ৫০ মণের বেশি আম বেচাকেনা করেন। তাঁর মতো এখানে শ দুয়েক ব্যবসায়ী আছেন। সে হিসাবে গড়ে এখানে দিনে ১০ হাজার মণ আম বিকিকিনি হয়। ২ হাজার টাকা মণ হিসাবে টাকার অঙ্কে তা দুই কোটি। অনলাইনেও তাঁর আমের ব্যবসা রয়েছে।
সম্প্রতি গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের ধার দিয়ে বসেছে পরিচিত বানেশ্বর আমবাজার। চাষিরা ভ্যানে করে আনছেন আম। ভ্যানে থাকতেই পাইকারেরা দর করছেন। মানভেদে গুটি আম প্রায় ১৩শ থেকে ১৫শ, গোপালভোগ ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পুঠিয়ার আজমত হোসেন এসেছিলেন প্রায় ২০ মণ গোপালভোগ নিয়ে। তিনি বলেন, তাঁর বাগানে আরও আম রয়েছে। প্রথম দফায় ২০ মণ এনেছেন। আরও আনবেন।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, গতবারের তুলনায় এবার আমের দাম কিছুটা কম। গত বছর মৌসুমের শুরুতে গোপালভোগ প্রতি মণ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে এবার ভালো মানের আম ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
বানেশ্বর আমবাজারের ইজারাদার আবুল কালাম আজাদ বলেন, এখনও তেমন উন্নতমানের আম বাজারে আসেনি। তাই দাম কিছুটা কম। তবে বাছাইকৃত আমের মণ সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ধীরেধীরে অন্য জাতের আম আসলে এ বাজার পুরোপুরি জমে উঠবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।