আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আরেক জিম্মির ভিডিও প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। দলটি ভিডিও প্রকাশের সঙ্গে ইসরায়েলের জন্য সতর্কবার্তা দিয়েছে।
শনিবার (১১ মে) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেড প্রকাশিত ভিডিওটির দৈর্ঘ্য মাত্র ১১ সেকেন্ড। ভিডিওবার্তা দেওয়া ওই জিম্মির চোখে কালো দাগ দেখা গেছে। ভিডিওবার্তা রেকর্ড করার সময় ওই জিম্মি জীবিত ছিলেন।
সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, ভিডিওবার্তা দেওয়া ওই জিম্মির নাম নাদাভ পোপেলওয়েল। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অবৈধ বসতি নিরুম থেকে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
ভিডিওবার্তায় আরবি ও হিব্রু ভাষায় একটি সতর্কবার্তা দিয়েছে হামাস। এতে বলা হয়েছে, সময় ফুরিয়ে আসছে। তোমাদের সরকার মিথ্যা বলছে। হামাসের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়েছে।
ভিডিওটি প্রকাশের পর এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, ওই জিম্মি মারা গেছেন। এক মাস আগে তিনি ইসরায়েলি বিমান হামলায় আহত হয়েছিলেন বলেও জানায় তারা।
এর আগে গত ২৭ এপ্রিল হামাস একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ করে। এতে গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলা শুরু পর আটক দুই ইসরায়েলি জিম্মিকে দেখা যায়। হামাসের প্রকাশিত ভিডিওর সঙ্গে আগের প্রকাশ করা জিম্মিদের ভিডিওর মিল পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইসরায়েলি এটিকে মনস্তাত্ত্বিক সন্ত্রাসবাদ হিসেবে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানায়।
ভিডিও প্রকাশ করা দুই জিম্মি হলেন কেইথ সিজেল এবং ওমরি মিরান। তারা দুজনেই ক্যামেরার সামনে আলাদাভাবে কথা বলেন। এ ছাড়া তারা পরিবারের প্রতি ভালোবাসা জানান এবং তাদের মুক্তির ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
রয়টার্স জানায়, মিরান নামের ওই ব্যক্তিকে নাহাল ওজ থেকে জিম্মি করা হয়। ওই সময় এলাকাটিতে হামাসের অভিযান চলছিল। তখন নিজ স্ত্রী ও দুই কন্যার সামনে থেকে তাকে জিম্মি করা হয়।
অন্যদিকে সিজেল দ্বৈত মার্কিন নাগরিক। তাকে স্ত্রীসহ ইসরায়েলের একটি সীমান্ত শহর থেকে জিম্মি করা হয়েছিল। পরে অবশ্য নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির সময়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
হামাস ভিডিওটি এমন সময়ে প্রকাশ করছে যখন ইহুদিগোষ্ঠী ছুটির দিন উদযাপন করছিল। এ দিনটি ইহুদিরা বাইবেল অনুসারে মিসরে দাসত্ব থেকে মুক্তির জন্য উদযাপন করে থাকে।
ভিডিওতে একপর্যায়ে সিজেল কাঁদতে কাঁদতে ভেঙে পড়েন। এ সময় তিনি গত বছর পরিবারের সঙ্গে ছুটির দিনটি উদযাপনের স্মৃতিচারণ করেন। এ ছাড়া পুনরায় পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাতদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।
অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।