জুমবাংলা ডেস্ক: আসামির নামের সাথে মিল থাকায় পুলিশের ভুলে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন কিশোরগঞ্জের মো. জামসু মিয়া (৩৭)। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার উদিয়ারপাড়ার (স্কুল পাড়া) সিরাজুল হকের ছেলে। গত ৮ আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
আজ রোববার এ আসামির উপস্থিতিতে ঢাকা সিএমএম আদালতে শুনানি হলেও তার কারামুক্ত হয়নি। তবে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ১০ কার্যদিবসের মধ্যে উক্ত বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
জানা যায়, ঢাকা সিএমএম আদালতে ২০১৫ সালের ১১ জুন মানহুরা খাতুন (২৬) তার স্বামী কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার মো. সিরাজ মিয়ার ছেলে মো. জামসু মিয়ার (সাগর) বিরুদ্ধে যৌতুক আইনে সিআর ২১৯/২০১৫ মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি গত ১ মার্চ থেকে পলাতক। ওই মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মাদ মিল্লাত হোসেন গত ৫ ফেব্রুয়ারি আসামির অনুপস্থিতিতে এক বছর তিন মাসের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের রায় প্রদান করেন। রায়ের সময় আসামি পলাতক থাকায় আদালত আসামির স্থায়ী ঠিকানার ইটনা থানায় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারের মাধ্যমে একটি সাজা পরোয়ানা জারি করেন। ইটনা থানায় ওই পরোয়ানা পৌছানোর পর ইটনা থানার ওসি মোহাম্মাদ মোর্শেদ জামান গত ২৫ জুলাই ওই থানার এসআই শামছুল হাবিবকে পরোয়ানা তামিলের জন্য দায়িত্ব প্রদান করেন।
গত ৭ আগস্ট এসআই শামছুল হাবিব নামের মিলে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার সিরাজুল হকের ছেলে মো. জামসু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পরদিন গত ৮ আগস্ট তাকে কিশোরগঞ্জে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠান। গত ২২ আগস্ট রায় প্রদাণকারী আদালতে ভুক্তভুগী মো. জামসু মিয়ার আইনজীবী তানজির সিদ্দিকী রিয়াদ ভুল আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়টি উল্লেখ করে জামিনের আবেদন করেন। ওইদিন মহানগর হাকিম মোহাম্মাদ মিল্লাত হোসেন বিষয়টি অবগত হয়ে আসামি উপস্থিতিতে ২৫ আগস্ট শুনানির দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী রোববার কিশোরগঞ্জ কারাগার থেকে জামসু মিয়াকে রায় প্রাদানকারী আদালতে হাজির করা হয়।
এদিন শুনানিতে আইনজীবী তানজির সিদ্দিকী রিয়াদ ভুল আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়টি উল্লেখ করে মো. জামসু মিয়ার জামিনের আদেশ প্রার্থনা করেন। শুনানির ওই সময় সাজা হওয়া আসামি মো. জামসু মিয়ার (সাগর) আইনজীবী এসএম গোলাম ছোবহান শেখুনও বিষয়টি সত্য বলে আদালতকে জানান।
কিন্তু বিচারক মোহাম্মাদ মিল্লাত হোসেন মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামি ভিন্ন ব্যক্তি কি না সে বিষয়ে তদন্ত করে ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়ে জামিন নামঞ্জুর করেন।
এ সম্পর্কে ভুক্তভোগীর আইনজীবী তানজির সিদ্দিকী রিয়াদ বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর পুলিশকে ভুলের বিষয়টি বলা হলেও পুলিশ তাকে ছাড়েনি বা তদন্ত করেও দেখেনি। এ কারণেই একজন নিরাপরাধ মানুষ ৮ আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত আসামি বর্তমানে জর্ডানে রয়েছেন বলে জানা গেছে।’
এ সম্পর্কে প্রকৃত আসামি মো. জামসু মিয়ার (সাগর) আইনজীবী এসএম গোলাম ছোবহান শেখুন বলেন, ‘আমার মামলার আসামিকে আমি চিনি। যে আসামিকে পুলিশ ধরে এনেছে সে ওই আসামি নয়। আমি শুনানির সময়ও আদালতকে এ কথা বলেছি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।