স্পোর্টস ডেস্ক: শেষ ষোলোর লাইনআপ চূড়ান্ত হওয়ার পর দৃঢ় ধারণা করা হচ্ছে, একটি কোয়ার্টার ফাইনাল হবে ইংল্যান্ড বনাম ফ্রান্স। কারণ দুই দলই রোববার নিজেদের প্রথম নকআউট ম্যাচে নিচের দিকের র্যাংকিংয়ের দলের মুখোমুখি হচ্ছে। কিন্তু এই বিশ্বকাপে একের পর এক অঘটন তাদের শেষ আটে ওঠার শতভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছে কোথায়? ফ্রান্সকে পেরোতে হবে পোল্যান্ডের বাধা, ইংল্যান্ডের সামনে আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন সেনেগাল।
ফিফা বিশ্ব র্যাংকিংয়ে ইংল্যান্ডের চেয়ে ১৩ ধাপ নিচে সেনেগাল। কিন্তু তাদের স্কোয়াডে প্রতিভাবান ফুটবলারে ঠাসা, এমনকি সুপারস্টার সাদিও মানের অভাব ভুলিয়ে দিয়েছে তারা। ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট বলেছেন, ‘আমরা জানি র্যাংকিং বিবেচনায় আমরা ফেভারিট এই ম্যাচে। কিন্তু সেনেগাল খুব বিপজ্জনক দল। তাদের অনেক খেলোয়াড় প্রিমিয়ার লিগ ও ইউরোপজুড়ে খেলে।’
রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় আল খোরের আল বায়াত স্টেডিয়ামে গ্রুপ ‘বি’ এর চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ সেনেগাল। ২০০৬ সালের পর প্রথমবার টানা দুটি আসরে কোয়ার্টার ফাইনালের মিশনে থাকা ইংলিশদের বিপক্ষে কাগজে কলমে আফ্রিকানরা পিছিয়ে। কিন্তু তাদের প্রেরণা যোগাচ্ছে ২০০২ সালের বিশ্বকাপ সাফল্য। ওইবার অভিষেকেই কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে বাজিমাত করেছিল তারা। গ্রুপে আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়ে বিদায়ের পথ দেখায় এবং শেষ ষোলোতে হারায় সুইডেনকে। নিজেদের ইতিহাসে তৃতীয়বার বিশ্বকাপ খেলতে নেমে দ্বিতীয় নকআউট ম্যাচ খেলতে নামছে সেনেগাল।
এরই মধ্যে দুটি বড় সাফল্য পেয়ে বিশ্বকাপে পা রেখেছে আলিউ সিসির দল, যিনি ২০ বছর আগের সাফল্যমণ্ডিত দলের অধিনায়ক ছিলেন। এই বছর তারা নিজেদের ইতিহাসের প্রথম মেজর ট্রফি জিতেছে আফ্রিকান নেশনস কাপে। ফেব্রুয়ারিতে মিশরকে হারায় তারা ফাইনালে। এরপর একই দলকে প্লে অফে হারিয়ে বিশ্বকাপের টিকিট কাটে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র এখন মানসিকতা।
২০০২ সালের গৌরবোজ্জ্বল বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে খেলা আলাসানে এন’দোর বলেছেন, ‘আমরা ইংলিশদের জানি। তারা শক্তিশালী ও আক্রমণে দারুণ খেলে। তাদের দারুণ স্কোয়াড। কিন্তু সেনেগালেরও সুযোগ আছে। সেনেগালের অনেক খেলোয়াড় প্রিমিয়ার লিগ কিংবা চ্যাম্পিয়নশিপে খেলে, আমরা ইংলিশ ফুটবল সম্পর্কে জানি।’
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল চেলসির সেন্টার ব্যাক কালিদো কুলিবালি সেনেগালের অধিনায়ক। দলের রক্ষণের মূল অস্ত্র। প্রথম সেনেগালিজ হিসেবে আফকোন ট্রফি হাতে নেওয়া এই ডিফেন্ডার ইকুয়েডরের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ গ্রুপ ম্যাচ জয়ে গোল করেন তিনি।
উজ্জীবিত সেনেগালকে থামাতে তৈরি গ্রুপ পর্বে সর্বোচ্চ ৯ গোল করা ইংল্যান্ড। অবশ্য গত বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হ্যারি কেইনের খোলসবন্দি থাকা ভাবাচ্ছে পুরো দলকে। তবে তিনটি গোল বানিয়ে দিয়ে অবদান রেখেছেন তিনি। গত বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল ও ইউরোতে ফাইনাল খেলা ইংল্যান্ড এবার স্বপ্ন দেখছে আরও বড় কিছুর। মেজর টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকতা ধরে রাখার আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে এবার ঘরে ফেরাতে চায় ট্রফি। তবে উজ্জীবিত সেনেগালের সামনে দিতে হবে কঠিন পরীক্ষা।
এই প্রথমবার ফুটবল মাঠে মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড ও সেনেগাল। থ্রি লায়নদের সামনে সেনেগালিজরা হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপে ১৩তম নতুন প্রতিপক্ষ। এর আগে ১২টি দলের সঙ্গে প্রথম দেখায় মাত্র একটি হার ইংলিশদের, সাতটি জয় ও চারটি ড্র।
ইউরোপিয়ান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে গত ছয়টি বিশ্বকাপ ম্যাচে সেনেগাল জিতেছে তিনটি, একটি ড্র ও দুটি হার। বিশ্বকাপে আফ্রিকান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সাতবারের দেখায় কখনও হারেনি ইংল্যান্ড। চারটি জয় ও তিনটি ড্র।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।