মো. সামিউল হাসান : করোনা মহামারির মধ্যে যখন সারাবিশ^ স্থবির হয়ে পড়েছিল, তখন সমগ্র দুনিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে অগ্রণী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় ডিজিটাল প্রযুক্তি। মানুষ অফিস আদালতের সব কাজ করেছেন অনলাইনে জুম, গুগলমিট ব্যবহার করে। বেড়েছে উদ্যোক্তা, পরিবর্তনের হালে এসেছে পানি। এই পরিবর্তনেরই আরেক দৃষ্টান্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল তৈরি প্রকল্ ‘এর মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি (ইউআইডি) প্রদান। বিদ্যালয় পর্যায়েই একজন শিশু শিক্ষার্থী পাবে ইউনিক আইডি (ইউআইডি) এবং তাকে প্রদান করা হবে আইডি নম্বর, যা বাংলাদেশের একজন নাগরিক ভোটার তালিকায় নিবন্ধিত হবার পরেই পেত, সেটি সে পাবে বিদ্যালয় থেকেই। প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ১৬৪০৪ দশমিক ৬৬ টাকা ধরা হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রকল্পটি শুরু করে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১ মার্চ এবং প্রকল্পটি শেষ হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর। তথ্য সংগ্রহ ও এন্টি করছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। এতে করে নির্ভুল তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। কারণ প্রতিটি শিক্ষার্থীর তথ্য এন্ট্রির পর তিন ধাপে তা যাচাইয়ের পর অনুমোদন পাবে। এতে করে জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডিতে যেসব ভুলের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়, একজন নাগরিককে সেটা থেকে মুক্তি পাবে সাধারণ জনগণ, বাড়বে নাগরিক সেবা। এর মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে ২ কোটি ১৭ লাখ এবং পরবর্তীতে আরো ৭০ লাখ শিক্ষার্থীর প্রোফাইল তৈরি করে ইউনিক আইডি (ইউআইডি) প্রদান করা হবে যা পরবর্তীতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ব্যবহার করে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজে ব্যবহার করবে। এতে করে সরকারের সময় ও অর্থ উভয়ই সাশ্রয় হবে। কেননা আজকের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুই ১০ বছর পরে সম্ভাব্য ভোটার আর ১০ বছর পর তার তথ্য সংগ্রহের বাড়বে বৈ কমবে না।
ভবিষ্যতে এই তথ্যই বিভিন্ন নাগরিক সেবা প্রদানের কাজে ব্যবহার করবে সমাজসেবা অধিদপ্তরসহ বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (বেনবেইস), বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য দপÍর এসব তথ্য ব্যবহার করার সুযোগ পাবে ফলে নাগরিক সেবা দিতে এবং পেতে সুবিধা হবে সেবা সহজীকরণ হবে।
তথ্য সংগ্রহ ও ডাটা ভেলিডেশনের বিশ^স্ততার জন্য জন্মমৃত্যু রেজিস্ট্রার জেনারেল ও নির্বাচন কমিশনের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর যেন সত্য ও নির্ভুল তথ্য নিশ্চিত হয়। ইউনিক আইডি (ইউআইডি) ব্যবহার করে শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি প্রদান, বই বিতরণ জরিপের তথ্য প্রদানসহ অন্যত্র ভর্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হবে। একটি ইউনিক আইডি (ইউআইডি) থেকে শুধু এক স্থান থেকেই এই সুবিধা নিতে পারবে একজন। ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বই উপবৃত্তি প্রদান করতে হবে না। এককথায় রিপিটেশন বন্ধ হবে। ফলে প্রতিবছর কয়েক শত কোটি টাকা বেচে যাবে সরকারের। আর সেই অর্থই সরকার নাগরিক বিভিন্ন সেবায় ব্যয় করতে পারবে সরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইউনিক আইডি (ইউআইডি) বয়ে আনবে উন্নত নাগরিক সেবা সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
লেখক : মো. সামিউল হাসান, ইন্সট্রাক্টর (কম্পিউটার সায়েন্স) প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট(পিটিআই), গাইবান্ধা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।