আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও ইইউ কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবাধ চলাচলের শেনজেন অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও সম্প্রসারণ নিয়ে একটি সংস্কার প্রস্তাবে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন। ইনফো মাইগ্রেন্টসের খবর।
মঙ্গলবার (০৬ ফেব্রূয়ারি) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেনজেনভুক্ত যেকোন ইইউ সদস্য রাষ্ট্র গুরুতর নিরাপত্তা হুমকির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দুই বছরের জন্য অভ্যন্তরীণ সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরোপ করতে পারবে। তবে জরুরি পরিস্থিতির ক্ষেত্রে কোন দেশে সম্ভাব্য আরো এক বছরের জন্য এই ব্যবস্থা নবায়ন করতে পারবে।
চুক্তিতে আরো বলা হয়, চেকিং ব্যবস্থা প্রবর্তনের আগে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশকে এই নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা এবং আনুপাতিকতা মূল্যায়ন করতে হবে। এটি ছাড়া আর কোন বিকল্প ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টিও প্রমাণ করতে হবে। নতুন বিধানটি আইনি অনুমোদন পেতে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এবং ইউ কাউন্সিলের বৈধতা পেতে হবে।
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, ইউরোপের ভিসাবিহীন মুক্ত চলাচল ব্যবস্থা শেনজেন জোনে কোন দেশ চাইলে শুধু বিশেষ পরিস্থিতিতে সাময়িক সময়ের জন্য সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরোপ করতে পারে। সোমবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) ব্রাসেলসে নেয়া সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য শেনজেন অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করা এবং এটির সময়সীমা বৃদ্ধি করা।
এটির মাধ্যমে এ অঞ্চলের বর্তমান কাঠামোকে স্পষ্ট ও শক্তিশালী করতে চায় ইইউ। বর্তমানে শেনজেন অঞ্চলে সদস্য ২৭টি দেশ। ইইউর ২৩টি সদস্য দেশ ছাড়াও আইসল্যান্ড, লিস্টেনস্টাইন, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডও সদস্য দেশ।
৪০ কোটিরও বেশি মানুষ বর্তমানে কোন প্রকার বিধিনিষেধ ছাড়াই শেনজেন অঞ্চলে ভ্রমণ করতে পারে। ২০১৫ সাল থেকে অভিবাসী চাপ এবং সন্ত্রাসী হামলার কারণে ফ্রান্সসহ বেশ কিছু ইইউভুক্ত দেশ তাদের অভ্যন্তরীণ সীমান্তে পরিচয় তদারকি ব্যবস্থা আরোপ করা শুরু করে।
এছাড়া কোভিড -১৯ মহামারী চলাকালীন বিশৃঙ্খল চলাচল ঠেকাতে আরো বেশ কিছু দেশ একই উদ্যোগ নিয়েছে, যা শেঙেন প্রবিধানের মূল চিন্তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
২০২২ সালে দেয়া এক রায়ে ইইউ-এর কোর্ট অফ জাস্টিস জানায়, ইইউভুক্ত দেশগুলো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার যুক্তিতে ছয় মাসের বেশি নিজ সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারবে না। এছাড়া ফ্রান্সের সর্বোচ্চ একটি আদালতও সম্প্রতি একই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
মূলত এ জাতীয় আইনি বাঁধা ও আদালতের নিন্দা এড়াতে শেনজেন বিধিমালা পরিবর্তনের জন্য ঐক্যমতে পৌঁছেছে এসব ইউরোপীয় দেশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে শেঙেন বিধান পরিবর্তনের চেষ্টা করে আসছে ইউরোপীয় কমিশন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সম্পন্ন চুক্তির মাধ্যমে এই উদ্যোগের পূর্ণতা পেল।
নতুন চুক্তিতে সন্তুষ্টি প্রাকশ করে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট দল থেকে নির্বাচিত ফরাসি এমইপি সিলভি গিয়ুম বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে আমরা গত ১০ বছর ধরে শেঙেন এলাকা নিয়ে যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছিলাম সেটির সমাধান পেয়েছি। পাশাপাশি মানুষের অবাধ চলাচলের অধিকার রক্ষারও সুযোগ পেয়েছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।