বিনোদন ডেস্ক : ইয়াছিন। ১৪ বছরের কিশোর। দেড় মাস ধরে অটোরিকশা চালিয়ে পরিবারের হাল ধরেছে সে। রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ইয়াছিনের ওই অটোরিকশায় দুইজন যাত্রী উঠে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান। এক সুযোগে মুহূর্তের মধ্যে কিশোর চালকের চোখ ফাঁকি দিয়ে রিকশাটি চুরি করে নিয়ে যান ওই দুই যাত্রী। অটোরিকশা হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছে সে।
ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের পলোয়ান মসজিদ এলাকায়। ইয়াছিনের বাড়ি জেলা সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চরভুতা গ্রামে। বাবা মো. ইব্রাহিম দ্বিতীয় বিয়ে করে ইয়াছিনদের ফেলে চলে গেছেন।
এদিকে ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে পৌনে ৪টা পর্যন্ত চুরি যাওয়া রিকশাটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। শহর ফাঁড়ি পুলিশ জানিয়েছে, রিকশা উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ইয়াছিন জানায়, ওইদিন সকাল ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জের চৌরাস্তা বাজার থেকে তার অটোরিকশায় দুইজন যাত্রী উঠেন জেলা শহরে আসার জন্য। বিভিন্নস্থানে ঘুরিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে তাকে নিয়ে আসে পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের পলোয়ান মসজিদের পাশে। সেখানে ওই যাত্রীরা নেমে চা পান করেন। এসময় যাত্রীরা চালক ইয়াছিনকে পাশের একটি ভবন দেখিয়ে সেখানে পাঠান একটি সাউন্ড বক্স আনার জন্য। সরল মনে সে তাদের কথামতো সেখানে যায়। এ সুযোগে যাত্রীরা তার অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান।
কিশোর ইয়াছিন বলে, ‘গত দেড় মাস ধরে এলাকার জনি মেস্তুরী নামে একজনের কাছ থেকে অটোরিকশাটি ভাড়ায় নিয়েছি। দিনে ৫-৬শ টাকা পাই। ৩০০ টাকা ভাড়া হিসেবে মালিককে দিয়ে দেই। বাকি টাকা দিয়ে সংসার চালাই। অটোরিকশাটি চোরে নিয়ে গেছে, মালিককে কী বুঝ দেবো।’
সে জানায়, তার বাবা মো. ইব্রাহিম আরেকটি বিয়ে করে তাদের রেখে চলে গেছেন। তার তিন বোন। ছোট এক ভাই ছিল, ৬ মাস আগে ব্রেন ক্যান্সারে মারা গেছে। ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেক টাকা ঋণ করতে হয়েছে তাদের পরিবারের। একদিকে ঋণের বোঝা, অন্যদিকে পুরো পরিবারের ভার তার কাঁধের উপর। তাই লেখাপড়া ছেড়ে অটোরিকশা চালানো শুরু করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।