জুমবাংলা ডেস্ক: দেশের তরুণদের মধ্যে এখন চাকরি খোঁজার ভোগান্তি বাদ দিয়ে নিজ উদ্যোগে ব্যবসা করার আগ্রহ রয়েছে। তাই তরুণরা এখন অনেকেই গ্রাজুয়েশন শেষ করে স্বল্প পুঁজিতে অধিক মুনাফার ব্যবসার দিকে ঝুঁকছেন এবং নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছেন। এসব ব্যবসার ক্ষেত্রে তরুণদের আগ্রহ বেশিরভাগই ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড এবং অটোমোবাইলস ব্যবসায়। কারণ প্রযুক্তির ব্যবহার ও আধুনিকায়ন সম্পর্কে তরুণ প্রজন্ম বরাবরই আগ্রহী।
একটা সময় ছিলো যখন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই বিদেশী ব্র্যান্ড নিয়ে ভুল ধারণা পোষণ করতেন। ক্রেতাদের ধারণা ছিলো বিদেশী পণ্যের গুনগত মান দেশী পণ্যের চেয়ে ভালো এবং বিক্রেতাদের ধারণা ছিলো বিদেশী পণ্যে কমিশন ও মুনাফা দেশী পণ্যের চেয়ে বেশী।
কিন্তু বর্তমানে টিভি, ফ্রিজ, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ইত্যাদি পণ্যের ক্ষেত্রে দাম ও গুনগত মান বিবেচনা করে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ৯০% ই দেশী পণ্যের প্রতি আস্থাশীল হয়ে উঠছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক জরিপে এই ধরনের বিপণন ব্যবসায় বাজারে বিক্রয়, কমিশন ও মুনাফার ভিত্তিতে বিবেচনা করলে অল্প পুঁজি, নিশ্চিত ভবিষ্যৎ, দ্রুত প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক মূল্যায়ন সুনিশ্চিত করতে দেশী ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।
এই ট্রেডে বিভিন্নভাবে বর্তমান ব্যবসায়ী, পাইকারী বিক্রেতা, এক্সক্লুসিভ ডিলার এবং অন্যান্য তরুণ উদ্যোক্তাদের বিশদ আলোচনায় উঠে আসে মার্কেটে লিডিং একটি ব্র্যান্ডের প্রতি বিক্রেতারা আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। তাদের পণ্য অতিমাত্রায় সহজলভ্য হবার কারণে খুচরা বিক্রেতারা নুন্যতম লভ্যাংশ পাচ্ছেন না। বিক্রয় পারফরম্যান্সে তাদের যে অপারেশনাল প্রফিট আসছে তাতে খরচ পর্যন্ত উঠে আসছে না এবং প্রত্যেক বছর ঋণাত্মক রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে নতুন বছর শুরু করছেন।
বিগত চার পাঁচ বছরের ধারাবাহিকতায় ইলেকট্রনিক্স সেক্টরে অর্থের বিশাল তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে তাই ব্যবসায়ীরা সন্দিহান অবস্থায় আছে এবং ব্যবসার মূলনীতি বিচ্যুত হবার কারণে ব্যবসার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি ইলেকট্রনিক্স কোম্পানির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, তাদের ব্যবসার পলিসি এবং প্রোডাকশনের ধারাবাহিকতা না থাকার কারণে তারা মার্কেট থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছেন। ডিলার চ্যানেলের ব্যবসায়ীরা কোনোরকম ভর্তুকি দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু ম্যানেজমেন্ট প্রোডাক্ট সরবরাহ করতে পারছেন না এবং তাদের পণ্যের গুনগত মান এবং আফটার সেলস সার্ভিসের বিপর্যস্ত অবস্থার কারণে তারা মার্কেট থেকে পিছিয়ে পড়েছে। এই ব্র্যান্ডটি এখন কসমেটিক্স ব্র্যান্ডের দিকে শিফট করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মার্কেটে সৃষ্ট ঘাটতি ফিল আপ করার জন্যে তারা ঋণ সংগ্রহের চ্যালেঞ্জ পুরণ করতে না পেরে ব্যবসা সম্প্রাসরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। খুবই বাজে কোয়ালিটির প্রোডাক্টের জন্যে ভোক্তারা তাদের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন।
ভোগ্যপণ্য ইন্ডাস্ট্রিতে শীর্ষে থাকা একটি কোম্পানি স্মল অ্যাপ্লায়েন্সের ক্ষেত্রে তুলনামূলক ভালো অবস্থানে থাকার পরেও, বড় পণ্য সামগ্রীর থেকে যেখানে বেশি লভ্যাংশ আদায় হয় সেই সেক্টরে ক্রেডিটে পণ্য দেওয়ার সামর্থ্য এবং প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে না পারার কারণে তারা ব্যবসায়ী এবং কাস্টমার উভয়ের আস্থা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
দেশের দুইটি পুরাতন মাল্টিন্যাশনাল ব্র্যান্ড অনেকদিন ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তাদের পণ্যের অতিরিক্ত দামের তুলনায় পণ্যের গুণগত মান খুবই সাধারণ মানের এবং তাদের পণ্যের ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক মান নিয়ন্ত্রন দাবী করলেও তা করা হয় না। এছাড়া ভোক্তার কমিশন অতি নগণ্য বিধায় এই ব্র্যান্ডের সাথে ব্যবসা করাটা মূলত একটি চ্যালেঞ্জের ব্যাপার যা অন্যান্য ব্র্যান্ডের চেয়ে দ্বিগুণ এবং কোয়ালিটি ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে পাঁচগুন।
দেশের একমাত্র জাপানি কোয়ালিটির ব্র্যান্ড বলে খ্যাত যা দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত তাদের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের কাছে ব্যতিক্রমধর্মী চিত্র দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশে কয়েক প্রজন্ম ধরে সুনামের শীর্ষে থাকা শিল্পগোষ্ঠী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই ব্র্যান্ডের ধারাবাহিক সাফল্য মার্কেটে পণ্যের গুনগত মান এমনভাবে নিশ্চিত করে ফেলছেন যে তারা তিন থেকে পাঁচগুন মুনাফা অর্জন করে স্বস্তির সাথে এই ব্যবসা করে যাচ্ছেন। মার্কেট বিপণনে তারা এমন একটি অবস্থান সুনিশ্চিত করেছেন যা ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসার অবকাঠামো পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে। এই কারণে অন্যান্য ব্র্যান্ডের চেয়ে মার্কেটে মাত্র ২০% শতাংশ বিক্রয় নিশ্চিত করে অন্যদের সমপরিমাণ লভ্যাংশ উপভোগ করে যাচ্ছেন। তাই মার্কেটের বর্তমান ব্যবসায়ীরা তরুণ প্রজন্মকে এই ব্র্যান্ডের সাথে ব্যবসা করার জন্যে অনুপ্রাণিত করেছেন।
একবিংশ শতাব্দীর প্রযুক্তিগত বিপ্লবের এই যুগে প্রতিটি পরিবারে ইলেকট্রনিক্স পণ্য শুধু প্রয়োজনই নয় বরং জীবনযাত্রার মানকেও করেছে আধুনিক। তাই আধুনিকতার কথা চিন্তা করেও সকলের মাঝে ইলেকট্রনিক্স পণ্য ব্যবহারের ঝোঁক বৃদ্ধির সাথে সাথে ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ের ক্ষেত্রও দিন দিন বেড়েই চলেছে । যারা ভাবছেন কোন ব্যবসা আপনার জন্য উপযুক্ত?
আধুনিকতার এই যুগে দ্রুত মুনাফা এবং ব্যবসায় প্রসারের জন্য গ্রাহক এবং ব্যবসায়ী উভয়ের কথা চিন্তা করলে অল্প পুঁজিতে বেশি মুনাফা পাওয়া যাবে এবং দ্রুত ব্যবসা প্রবৃদ্ধি হয়ে নিশ্চিত ভবিষ্যৎ ও সামাজিক মূল্যায়ন নিশ্চিত করবে এমন ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড হতে পারে আপনার কাছে অনন্য এক আস্থার নাম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।