জুমবাংলা ডেস্ক: বগুড়া শহরের সেই আলোচিত ষাঁড় ‘হিরো আলম’ অবশেষে বিক্রি হয়েছে। ক্রেতা না পাওয়ায় মাত্র সাড়ে চার লাখ টাকায় প্রতিবেশি দাদা ফুলবাড়ি মধ্যপাড়ার জেলহজ মোল্লার কাছে ষাঁড়টি বিক্রি করা হয়।
সোমবার (১১ জুলাই) পরিবারের সদস্যরা চোখের জলে ‘হিরো আলমকে’ বিদায় জানায়। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাড়ে ২২ মণের গরুটিকে কোরবানি দেওয়া হয়। এদিকে ষাঁড়টিকে এক নজর দেখতে শত শত মানুষ বাড়ির গোয়ালের সামনে ও রাস্তায় ভিড় করেন। অন্তত তিন লাখ টাকা ক্ষতি হলেও পরবর্তীতে আরও ক্ষতি এড়াতে ষাঁড়টি বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছেন মালিক জিয়াম প্রামানিক।
জানা গেছে, বগুড়া পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলবাড়ি মধ্যপাড়ার আবু জাফর প্রামানিকের ছেলে বগুড়া হামদর্দ মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র জিয়াম প্রামানিক লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়িতে গরু লালন-পালন করেন। তিন বছর আট মাস আগে বাড়িতে হলস্ট্যান ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী একটি ষাঁড় প্রসব করে। সাদা-কালো রঙের বাচ্চাটি দেখতে অনেক নাদুসনুদুস ও সুন্দর হয়। জিয়াম প্রামানিক তার প্রিয় মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হিরো আলমের নামে ষাঁড়টির নামকরণ করেন। গত কয়েক বছরে ষাঁড়টি দৈর্ঘ্য আট ফুট ও উচ্চতা সাড়ে পাঁচ ফুট এবং ওজন প্রায় ৯০০ কেজি হয়। এবার কোরবানির ঈদের আগে জিয়াম তার প্রিয় ষাঁড় হিরো আলমকে বিক্রির ঘোষণা দেন। গত কয়েকদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে লেখালেখিও হয়। স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকগুলোতে হিরো আলমকে নিয়ে প্রতিবেদন আসে।
জিয়াম প্রামানিক বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের পরামর্শে ষাঁড়টিকে সন্তানের মতো, পরিবারের সদস্যের মত লালন পালন করেছি। গত কয়েক বছর গম, চালের কুড়া, ভুসি, গমের ভুসি, ভুট্টা, ছোলা, খড় ও খৈলসহ প্রতিদিন অন্তত ৫০০ টাকার খাবার দিয়েছেন। নিয়মিত গোসল করানো, গোয়াল পরিষ্কার রাখা, টিকা দেওয়া ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পেছনে ভালো টাকা খরচ হয়েছে । এছাড়া গরম থেকে রক্ষা পেতে সিলিং ফ্যানেরও ব্যবস্থা করা হয়। সব খরচ মিলিয়ে ঈদে বিক্রির জন্য হিরো আলমের দাম চাওয়া হয় আট লাখ টাকা। পরে দাম কমিয়ে সাত লাখ চেয়েও ক্রেতা মেলেনি হিরো আলমের। পরে প্রতিবেশি দাদা জেলহজ মোল্লা ঈদের দ্বিতীয় দিন কোরবানি দিতে সাড়ে চার লাখ টাকায় গরুটি কিনে নেন। সোমবার সাড়ে ১০টার দিকে কোরবানি দেওয়া হয় হিরো আলমকে।
জিয়াম প্রামানিক জানান, তার বাড়ির খামারে ১০ মণ ওজনের আরেকটি ষাঁড় রয়েছে। আগামী কোরবানির ঈদের জন্য ষাঁড়টিকে প্রস্তুত করছেন তিনি।
অর্ধেকের কম দামে বিক্রি হয়েছে ‘বাংলালিংক’
এদিকে বগুড়ার গাবতলীর নাড়ুয়ামালা ইউনিয়নের বাওইটোনা গ্রামের আলোচিত ১৫০০ কেজি ওজনের হলস্ট্যান ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় ‘বাংলালিংক’এর দাম ১৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল। বগুড়ায় ক্রেতা না পাওয়ায় ঈদের আগে ঢাকার গাবতলীর হাটে উঠানো হয় ষাঁড়টিকে। গরুর মালিক রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের পীরগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক জহুরুল ইসলাম জুয়েল জানান, গাবতলীর হাটে মাত্র পাঁচ লাখ ৭০ হাজার টাকায় গরুটি বিক্রি করেছেন। এতে অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বিক্রি হয়নি ‘ভারতী’
বগুড়া শহরের রহমাননগর এলাকার আবেদীন ডেইরি ফার্মে ১৩০০ কেজি ওজনের হলস্ট্যান ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়ের নাম রাখা হয় ‘ভারতী’। মালিক সামসুল আবেদীন সবুর জানান, তিনি সাড়ে তিন বছর বয়সী ভারতীর দাম চেয়েছিলেন আট লাখ। তবে সর্বোচ্চ সাড়ে ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত দাম ওঠে। ক্ষতি স্বীকার করে তিনি ঈদে ষাঁড়টি বিক্রি করেননি।
তিনি জানান, আগামী বছর কোরবানির ঈদ পর্যন্ত ভারতীকে রাখার ইচ্ছা রয়েছে তার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।