জুমবাংলা ডেস্ক: ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা লোকদের ভোটের কাম নাই’-কক্সবাজার-১ চকরিয়া-পেকুয়া আসনে প্রথম প্রথম নির্বাচনী প্রচারণায় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে এমনসব মন্তব্যই শুনতে হয়েছে। কিন্তু বেশিদিন দরকার হয়নি তাকে চকরিয়া-পেকুয়ার মানুষের আপনজন হতে।
চট্টগ্রামের হাটহাজারি উপজেলার মতো ভিন্ন এলাকার বাসিন্দা হয়েও সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম মাত্র কয়েক সপ্তাহ জনসংযোগের মাধ্যমেই চকরিয়া-পেকুয়া উপজেলাবাসীর মনে স্থান নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে এমপি নির্বাচিত হয়ে চমক লাগিয়েছেন।
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক দুজনই কক্সবাজারের দুটি আসনে দলীয়ভাবে প্রার্থী হয়েছিলেন।
দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ ইবরাহিম কক্সবাজার-১ চকরিয়া-পেকুয়া আসনে হাতঘড়ি প্রতীক নিয়ে ৮১ হাজার ৯৫৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত এমপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো জাফর আলম পেয়েছেন ৫২ হাজার ৮৯৬ ভোট। অপরদিকে, দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল মামুন কক্সবাজার-৩ কক্সবাজার সদর, রামু ও ঈদগাহ আসনে প্রার্থী হয়ে ভোট পান মাত্র ৯৮৮ ভোট।
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ ইবরাহিম স্বল্প সময়ের ব্যবধানে প্রায় পাঁচ লাখ ভোটারের দুই উপজেলা চকরিয়া ও পেকুয়ার মানুষের এমনভাবে মন জয় করার নেপথ্যে কী কাজ করেছে তা নিয়ে মানুষের জানার আগ্রহও অনেক।
এ বিষয়ে সৈয়দ ইবরাহিমের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট সালাউদ্দিন আহমেদ সিআইপি বলেন, ‘গত ৫ বছর ধরে এমপি জাফরের লুটপাট, দখলবাজি, গরুচুরি, লাগাতার দুর্নীতি, অসহায় মানুষের বৈধ সহায়-সম্পদ হাতিয়ে নেওয়াসহ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলার কারণে সাধারণ মানুষ ছিল অতিষ্ট। এসব অন্যায়-অবিচার থেকে রেহাই পেতে মানুষ একজন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির আশ্রয় নিয়েছেন।’
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ এ আসনটির দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ঋণখেলাপি হওয়ায় নির্বাচন করতে পারেননি।
এ কারণে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ সৈয়দ ইবরাহিমকে সমর্থন দেয়।
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী সৈয়দ ইবরাহিমের ধ্বস নামানো বিজয় প্রসঙ্গে বলেন, ‘সৈয়দ ইবরাহিম অসাধারণ মেধার অধিকারী। তাঁর প্রখর স্মরণশক্তি। একবার যার সাথে দেখা হয়েছে তার কথা মনে রাখতে পারেন। সবচেয়ে বেশি কাজ দিয়েছে গ্রাম-গঞ্জে নির্বাচনী সভাশেষে তিনি অত্যন্ত সাবলীল ভাষায় মানুষের কল্যাণের জন্য মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে মোনাজাত করতেন।যা স্থানীয়দের কাছে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ ইবরাহিম জানান, ‘আমি চকরিয়া-পেকুয়ার নির্বাচনী মাঠে নেমে মানুষের আহাজারি শুনতে পেয়েছি। এখানকার মানুষের সহায়-সম্পদ পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছেন এমপি জাফর আলম। এমনকি গোয়ালের গরু পর্যন্ত রাখতে পারেনি স্থানীয় কৃষকরা।’
তিনি জানান, এমপি জাফরের কয়েকটা সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। এসব সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতেই স্থানীয় মানুষ ছিল জিম্মি।
তাই নির্বাচনী প্রচারণা সভায় সৈয়দ ইরাহিমের একটি কমন শ্লোগান ছিল এরকম- ‘অনরা নির্ভয়ে ভোট দিতে আইয়্যুন- অ সন্ত্রাসী, অ গরু চোর, অ লুণ্ঠনকারী তোঁয়ারা জগই।’ অর্থাৎ আপনারা ভয়ভীতি ছাড়াই ভোট কেন্দ্রে আসুন-ওরে সন্ত্রাসী, ওরে গরু চোর, ওরে লুণ্ঠনকারী তোমরা এলাকা ছেড়ে দ্রুত সরে যাও।
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী জানান, বাস্তবে সৈয়দ ইবরাহিম সাহস নিয়ে এখানকার সন্ত্রাসী, চোর-ডাকাতদের প্রতি যে শ্লোগান তুলেছিল তারই প্রতিধ্বনি উনার ধস নামানো বিজয়।-কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।