জুমবাংলা ডেস্ক: চাকরি নামক সোনার হরিণের পিছরে না ছুটে ব্যবসার প্রতি দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে মানুষের। বিশেষ করে তরুণ-তরুণেরা এখন নিজেই কিছু করতে চায়। নিজে চাকরী না করে অন্যকে চাকরী দিতে চায়। এদের মধ্যে বেশীরভাগ সল্পপুঁজির অভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারে না। চলুন জেনে নিই এমন কিছু ব্যবসা সম্পর্কে যেগুলোতে লাভের পরিমান বেশ ভাল। আবার পুঁজিও লাগে কম।
চায়ের দোকান: “অল্প পুঁজি দিয়ে ছোটখাটো যেসব ব্যবসা করা যেতে পারে চা’র দোকান এর মধ্যে অন্যতম। পরিবারের যে কোনো বয়সের ব্যক্তি চা’র দোকান চালাতে পারে। চা-এর দোকানে বিস্কুট, কলা, কেক, পাউরুটি ইত্যাদিও বিক্রি হতে দেখা যায়। খুব ছোট আকারেও এ ব্যবসা শুরু করা যায়।
যে কোনো স্থানেই চা-এর দোকান করা সম্ভব। তবে রাস্তার মোড়ে হলে ব্যবসা ভালো চলে। এছাড়া অনেক লোকসমাগম ঘটে এমন যে কোনো জায়াগাতে চা-এর দোকান গড়ে তোলা যেতে পারে। অনেক সময় বড় রাস্তার পাশে দোকান দিলে ভালো জমে উঠে। ”
ব্যানার ও সাইনবোর্ডের দোকান: ব্যানার মূলত স্বল্প সময়ের অধিবেশন ও স্বল্পকালীন তথ্য প্রদানের জন্য ব্যবহৃত হয়। তাই ব্যানার সাধারণত কাপড়ের উপর বিভিন্ন রং দিয়ে লেখা হয়। সাইনবোর্ড সাধারণত দোকান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন- স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, আদালত, দোকান প্রভৃতির সামনে ব্যবহার করা হয়।
এছাড়া রাস্তার পাশে বিভিন্ন নির্দেশ ও নানান দীর্ঘমেয়াদি বিজ্ঞাপণ প্রচারের জন্য সাইনবোর্ড ব্যবহার করা হয়। সাইনবোর্ড সাধারণত বেশি সময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। এ কারণে সাইনবোর্ডে লেখার জন্য অ্যালুমিনিয়াম, টিন, স্টিল বা কাঠ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
গুঁড়ামসলা তৈরি ও প্যাকেটজাতকরণ: উন্নত উপায়ে বিভিন্ন রকমের মসলা গুঁড়া করে বাজারজাত করতে পারলে লাভবান হওয়া সম্ভব। রান্নার কাজটি দ্রুত ও ঝামেলাহীনভাবে শেষ করার জন্য বর্তমানে বাটা মসলার জায়গায় গুঁড়া মসলার ব্যবহার বাড়ছে। এর মধ্যে জিরা, ধনিয়া, হলুদ, মরিচ, গরম মসলা ইত্যাদি অন্যতম। কাঁচামাল ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে মেশিনে গুঁড়া করে উন্নত উপায়ে প্যাকেটজাত করতে পারলে এ ব্যবসার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব।
তরল সাবান তৈরির ব্যবসা: লিকুইড ডিসওয়াশ বা তরল সাবান দিয়ে থালাবাসন ধোয়া খুব সহজ। অল্প পরিমাণ তরল সাবানে অনেক ফেনা হয় এবং সহজেই থালা বাসন পরিষ্কার হয় বলে দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে। অনেক বাড়িতেই এখন থালাবাসন ধোয়ার জন্য তরল সাবান ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাওয়াদাওয়া শেষে প্লেট, গ্লাস, চামচ ইত্যাদি ধোওয়ার জন্য তরল সাবান ব্যবহার করা হয়।
সাবান: পরিষ্কার থাকার জন্য এবং সব কিছু পরিষ্কার রাখার জন্য সাবান খুব প্রয়োজন। সাবান আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য। প্রতিদিন নানান কাজে আমরা সাবান ব্যবহার করি। সাবান হল তেল-চর্বি ও ক্ষার মিশ্রিত এক ধরনের কঠিন পদার্থ যা পরিষ্কার থাকার জন্য এবং সবকিছু পরিষ্কার করার জন্য ব্যবহৃত হয়। সবারই প্রতিদিন সাবানের দরকার হয়।
প্যাকেজিং ব্যবসা: গ্রাম বা শহর সব জায়গার শাড়ি, জুতা, মিষ্টি, খাবার প্রভৃতির দোকানে প্যাকেট দরকার হয়। ভালো প্যাকেজিং ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি সম্ভব হয় না। উন্নতমানের প্যাকেজিং বাক্স তৈরি করে দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী বাজারজাত এবং আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্যাকেট ব্যবহৃত হয়। যেমন- শাড়ির বাক্স, জুতোর বাক্স, মিষ্টির বাক্স, বিরিয়ানীর বাক্স ইত্যাদি। মোটা, শক্ত কাগজ দিয়ে এসব প্যাকেট তৈরি করাকে প্যাকেজিং বলা হয়।
ধান ভাঙানোর মিল: ধান ভাঙানোর মিল কনটেন্টটিতে চালের মিল -এর ব্যবসা কীভাবে শুরু করা যায়, ব্যবসা শুরু করার জন্য কোথায় প্রশিক্ষণ নেওয়া যায়, এই ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান এবং সর্বোপরি এর মাধ্যমে কীভাবে বাড়তি আয় করা সম্ভব, সেই বিষয় সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।
খাবারের দোকান বা হোটেল: হোটেল বা খাবারের দোকান এমন স্থান যেখানে টাকার বিনিময়ে খাবার পাওয়া যায়। ঘরের বাইরে থাকলে, ভ্রমণকালে, অফিস থেকে বাসা দূরে হলে এবং সময় বাঁচাতে হলে অল্প খরচে পরিচ্ছন্ন ও পুষ্টিকর খাবার নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত হাতের কাছে পাওয়াটা কঠিন ব্যাপার। হোটেল বা খাবারের দোকান এই সমস্যার সমাধান করে দেয়।
মোমবাতি: “দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণের মধ্যে মোমবাতি অন্যতম। অল্প খরচের মধ্যে আলো পেতে মোমবাতি খুবই উপকারী পণ্য। কাঁচামাল হিসেবে প্যারাফিন ব্যবহার করে খুব সহজে মোমবাতি তৈরি করা যায়। বর্তমান সময়ে প্রয়োজনীয় সময়ে আলো দানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব, এমনকি শো পিস হিসেবেও নানা রং ও আকৃতির মোমবাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। সাধারণত বিভিন্ন আকৃতির নকশা করা নানা রঙের মোমবাতির চাহিদা মূলত শহরেই বেশি দেখা যায়। এ জাতীয় মোমবাতি শহরের সৌখিন পণ্য বিক্রির দোকানে সরবরাহ করা যেতে পারে। ”
কাগজের ব্যাগ উৎপাদন: যে কোনো পণ্য উৎপাদনের পর তা প্যাকেটজাত করে ক্রেতা বা ব্যবহাকারীর কাছে পৌঁছে দিতে হয়। পরিবেশবান্ধব ও দেশীয় কাঁচামাল দিয়ে তৈরি করা যায় বলে প্যাকেটজাতকরণে কাগজের ব্যাগ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পলিথিন ব্যাগ এখন সরকারিভাবে নিষিদ্ধ। আগে যেখানে পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার করা হত বর্তমানে সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে কাগজের ব্যাগ। নানান রকম কাগজ দিয়ে কাগজের ব্যাগ তৈরি হচ্ছে। কাগজের ব্যাগ তৈরি করে স্থানীয় দোকানগুলোতে তা সরবরাহ করা যাবে
আগরবাতি: আগরবাতির চাহিদা প্রায় সারাবছরই থাকে। মন্দির, মসজিদ, গির্জা প্রভৃতি উপাসনালয়ে বা বাড়িতে পূজা বা মিলাদে আগরবাতি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া সুগন্ধি হিসেবে এখন অনেকে প্রতিদিন ঘরে বা দোকানেও আগরবাতি ব্যবহার করেন। স্থানীয় বাজার, থানা শহর অথবা উপজেলা শহরে আগরবাতি বিক্রি করা যায়। পাইকারি হিসেবে দোকানদারদের কাছে অথবা খোলা বাজারে বা হাটে খুচরাভাবে ক্রেতাদের কাছে আগরবাতি বিক্রি করা সম্ভব। সবচেয়ে বেশি বিক্রি করা যায় মাজারের কাছে। এছাড়া বিভিন্ন উপাসনালয়ে আগরবাতি বিক্রি করা সম্ভব।
কাগজের খাম তৈরি: সাধারণত খামে করে অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য, স্কুল-কলেজের জরুরি কাগজপত্র ও চিঠিপত্র পাঠানো হয়। এছাড়া নববর্ষ, ঈদ, পূজা, হালখাতা, সেমিনার, বিয়ে, জন্মদিন ইত্যাদির দাওয়াতপত্র ও শুভেচ্ছা কার্ড বিভিন্ন রকম খামে ভরে পাঠানো হয়। তাই খামের চাহিদা সব সময় থাকে। বিভিন্ন মাপের খাম তৈরি করে অফিস-আদালত ও স্টেশনারি দোকানে সরবরাহ করে আয় করা সম্ভব।
কাপড় সেলাই/দর্জি: “সাধারণভাবে পোশাক বলতে সেলাই করা কাপড়কেই বুঝানো হয়ে থাকে। বর্তমানে আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য সৌখিন নারী-পুরুষেরা বিভিন্ন ডিজাইনের কাপড় পরার প্রতি আগ্রহী। তাই পোশাক কেনার পাশাপাশি তারা দর্জির কাছ থেকে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী মাপ ও ডিজাইন দিয়ে বিভিন্ন পোশাক তৈরি করে নেয়। এ কারণে কাপড় সেলাই বা দর্জির চাহিদা সব সময়ই থাকে। কাপড় সেলাই শুরুর আগে দক্ষতা অর্জন করা অবশ্যই প্রয়োজন। তাই কাপড় কাটা ও সেলাইয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে হবে। ”
ছবি বাঁধানোর ব্যবসা: ছবি বাঁধিয়ে রাখার মূল উদ্দেশ্য হল দৃষ্টি আকর্ষণ, গৃহসজ্জা ও দীর্ঘদিন সংরক্ষণ। ছবি বাঁধানো এখন একটি শিল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। সারাদেশে অনেক মানুষ এই পেশার সাথে যুক্ত আছে। মানুষ দিন দিন তার গৃহসজ্জার প্রতি সচেতন হয়ে উঠছে। ফলে এর অংশ হিসেবে বাড়ছে ছবি বাঁধাই-এর কাজ। বিভিন্ন ডিজাইন ও রঙের ফ্রেমে এখন ছবি বাঁধাই করা হচ্ছে।
স্ক্রিন প্রিন্ট: ব্লক প্রিন্ট, বাটিক, টাই-ডাই ইত্যাদির পাশাপাশি বর্তমানে কাপড় ছাপার অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে স্ক্রিন প্রিন্ট। স্ক্রিন প্রিন্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল শুধু কাপড়ই নয়, কাগজেও ছাপা বা প্রিন্ট করা যায়। স্ক্রিন প্রিন্ট এক ধরনের ছাপার পদ্ধতি। স্ক্রিন প্রিন্ট অনেকদিন আগে থেকেই ছাপার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে বর্তমানে এটি খুবই জনপ্রিয়।
সেমাই তৈরি: “সেমাই খুবই সুস্বাদু একটি খাবার। ছোটবড় সবাই সেমাই খেতে পছন্দ করে। আমাদের দেশে বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে ঘরে ঘরে সেমাই রান্না করতে দেখা যায়। বিভিন্ন ধর্মীয় বা সামাজিক উৎসবে খাবার হিসেবে সেমাই-এর ব্যবহার রয়েছে। গ্রাম বা শহর সব জায়গাতেই ছোটবড় সবার কাছে সেমাই-এর কদর রয়েছে। বর্তমানে আমাদের দেশে উন্নতমানের সেমাই তৈরি হচ্ছে এবং এগুলো বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করাও সম্ভব হচ্ছে।
পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের ব্যবসা: দৈনন্দিন জীবনে অব্যবহৃত পরিত্যক্ত প্লাস্টিক ব্যবহার করে যে কেউ ব্যবসা করতে পারে। ব্যবসা করতে হলে প্রাথমিকভাবে দুটি মেশিন লাগবে। গ্রীন পিপি, সাদা পিপি, ব্লু পিপি, লাল পিপি, প্যারস্যুট, প্রাণ ইত্যাদি বিভিন্ন প্লাস্টিক সংগ্রহ করে ব্যবহার করতে হবে।
বই বাঁধানো: ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পকারখানা, অফিস-আদালত, ব্যাংক সবখানেই হিসাবের খাতাসহ নানান ধরনের বই ও প্রকাশনা সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। এসব প্রকাশনাগুলোকে সুন্দর ও মজবুত করার জন্য বাঁধাই করার প্রয়োজন হয়। বই বাঁধাই না করলে এটি সহজে ছিঁড়ে যায়। মোটামুটি সব মৌসুমেই বই ও খাতা বাঁধানোর কাজ চলে। বই বাঁধানো শিখে যে কোনো ব্যক্তি সহজে এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
ভ্যান-এ শাকসবজি: বিক্রেতারা ভ্যান-এ করে প্রয়োজনীয় শাকসবজি মানুষের বাড়ি বাড়ি নিয়ে বিক্রি করে। এর ফলে মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় শাকসবজি যেমন ঘরে বসেই কিনতে পারে তেমনি এটিকে কেন্দ্র করে কিছু মানুষও ব্যবসা করার সুযোগ লাভ করে। আগ্রহী যে কেউই অল্প পুঁজি নিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এক্ষেত্রে বিক্রেতারা বাজারের তুলনায় অপেক্ষাকৃত একটু কম দামে সবজি বিক্রি করতে পারে। কারণ বাজারের ঘর ভাড়া দিতে হয় না।
দুধের দোকান: “দুধের দোকানের ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হতে পারেন। সাধারণত বিকাল বেলাতেই দুধের দোকানের ব্যবসা ভালো জমে। চা-এর দোকানের মতো দুধের দোকানেও একটি চুলায় দুধ জ্বাল হয় এবং ক্রেতারা একটি নির্দিষ্ট দামে দুধ কিনে খায়। আবার অনেক সময় কাঁচা দুধও বিক্রি হয়, সেক্ষেত্রে ক্রেতাকে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে দোকানে আসতে হয়।
গ্রামে-গঞ্জে বা শহরে অনেক জায়গাতেই আজকাল দুধ বিক্রির দোকান দেখা যায়। বাজারে প্রচলিত পানীয় থেকে দুধ অনেক উপকারী। আজকাল দেশে অনেক গরুর ফার্ম তৈরি হয়েছে সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে দুধ সংগ্রহ করাও বেশ সহজ। এ হিসেবে দেখা যায় অল্প পরিশ্রমে এবং স্বল্প পুঁজিতে দুধের ব্যবসা বেশ লাভজনক হতে পারে। ”
পানের দোকান: “ছোটখাটো নানান ধরনের ব্যবসার মাধ্যমে মানুষ স্বাবলম্বী হতে পারেন। পান-সুপারি বিক্রির ব্যবসা এ ধরনের ব্যবসার মধ্যে অন্যতম। খুব সামান্য পুঁজি দিয়েই এ ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। পাইকারি দরে পান, সুপারি, জর্দা কিনে পানের খিলি বানিয়ে বিক্রি করাকে পেশা হিসেবে নিয়ে যে কোনো ব্যক্তি উপার্জনের ব্যবস্থা করতে পারেন। আমাদের দেশে বয়স্ক লোকের কাছে পানের বেশ চাহিদা রয়েছে। রাস্তার পাশে, হাট বা বাজারে, রাস্তার মোড়ে পানের দোকান দেয়া যেতে পারে। ”
ফুলের দোকান: “নানান অনুষ্ঠানে অনেক বেশি পরিমাণে ফুলের প্রয়োজন হয়। এই ফুলের জোগান দিয়ে থাকে ফুলের দোকান। আমাদের দেশের প্রায় সকল ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে ফুল ব্যবহার করা হয়। সাধারণত সারাবছরই ফুলের চাহিদা থাকে। বিশেষ করে শীতকালে বিয়ে, গায়ে হলুদ, নানান সামাজিক অনুষ্ঠান, সভা ইত্যাদি বেশি থাকে বলে এই সময় ফুলের চাহিদাও বেশি থাকে।
এছাড়া গৃহসজ্জার কাজেও সৌখিন মানুষ ফুল কিনে থাকে। ফুলের দোকান দেবার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে। বাজারের কেন্দ্র বা যে সব স্থানে লোকসমাগম হয় সে রকম স্থানে ফুলের দোকান দিতে হবে। ”
ফলের দোকান: “আমাদের দেশে বেশ কিছু মৌসুমী ফল পাওয়া যায়। যেমন: আম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস, জলপাই, কামরাঙ্গা ইত্যাদি। এসব মৌসুমি ফলে প্রচুর ভিটামিন পাওয়া যায়। এসব মৌসুমি ফলের পাশাপাশি সারাবছর যে সব ফল পাওয়া যায় সেসব ফলের প্রচুর চাহিদা থাকে।
এসব ফল বিক্রি করে আয় করা সম্ভব। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশনের কাছে বা হাসপাতালের সামনে ফলের দোকান দিলে ব্যবসা ভালো চলবে। এছাড়া আবাসিক এলাকায় মুদি দোকানের কাছে ফলের দোকান দেয়া যেতে পারে। ”
মুদি দোকান: “মুদি দোকান বলতে এমন একটি দোকানকে বোঝায় যেখানে নিত্য-প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী কিনতে পাওয়া যায়। যে কোনো বেকার নারী বা পুরুষ মুদি দোকানের মাধ্যমে নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন। শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী নারী-পুরুষ, ভারী কাজে অক্ষম ব্যক্তিরাও ঘরে বসে থেকেই মুদি দোকানের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।
মুদি দোকানের যে সব পণ্য বিক্রি করা হয় তার চাহিদা সারাবছরই থাকে। এ ব্যবসায় লোকসানের সম্ভাবনা কম থাকে। মুদি দোকান মূলত হাটে, বাজারে বা রাস্তার মোড়ে দেখা যায়। অথবা বসতবাড়ির বাইরের অংশে মুদির দোকান দেয়া যেতে পারে। ”
স্টেশনারি: বই-পুস্তক, খাতা-কলমের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের উন্নতির সাথে সাথে বাড়ছে অফিস আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং এর সংশ্লিস্ট দপ্তরগুলোও। এসব প্রতিষ্ঠানে রেজিস্টার খাতা, পেন্সিল, কলম, ফাইল ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। স্টেশনারিতে এই সব প্রয়োজনীয় খাতা, কলম, পেন্সিল, স্কেল ইত্যাদি পাওয়া যায়। এসব উপকরণের চাহিদা সব সময়ই থাকে।
মেকআপ বা সাজসজ্জা: বিয়ে, উৎসব কিংবা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যেই সাজসজ্জা বা মেকআপ একটি অত্যাবশ্যকীয় বিষয় হয়ে উঠছে বিগত কয়েক বছর ধরে অনলাইনের মাধ্যমে আপনিও এই সেবা নিয়ে কাজ করতে পারেন অফলাইনের জন্যে এবং অর্ডার অনুযায়ী এই বিষয়ক বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রি থেকে শুরু করে কাস্টমারদের অনুষ্ঠানে আপনার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সার্ভিস দিতে পারেন। বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজের প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা যত বৃদ্ধি পাবে ততই নতুন এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে আপনার ও প্রতিষ্ঠানের।
লন্ড্রি: বাসার কাপড় ধোয়া থেকে শুরু করে ইস্ত্রি করা নিয়ে অনেক সমস্যায় পরতে হয় কর্মচঞ্চল এই ঢাকা শহরের মানুষকে। অনলাইনে লন্ড্রি সেবা নিয়েও আপনার প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করতে পারে এলাকা ভিত্তিক কিংবা পুরো শহরজুড়ে। এতে করে ঘরে বসেই মানুষজন সার্ভিস নিতে পারবে।
রেন্ট এ কার: দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যেতে আমাদের বিভিন্ন সময় গাড়ি ভাড়া করতে হয়, কিন্তু অনলাইনেই যদি এই গাড়ি ভাড়ার নেয়ার ব্যবস্থা থাকে এবং নিজের পছন্দ অনুযায়ী গাড়ি ভাড়া নিয়ে নিজের কাজে ঢাকার বাইরে কিংবা অন্য শহর থেকে ঢাকাতে আসা যায়, তবে কেমন হয়? বিশ্বস্ত একটা প্রতিষ্ঠানই পারে সহজে দেশের যেকোন প্রান্তের মানুষকে অনলাইনের মাধ্যমে এই সেবা নেয়ার জন্যে গাড়ি বুকিং সার্ভিস।
কম্পিউটার সার্ভিসিং এবং ইলেকট্রিক বা ইলেক্ট্রনিক্স সার্ভিস: ব্যস্ত শহরে যানজট ঠেলে কে চায় তার বাসার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এর সমস্যার জন্যে দোকানে যেতে, কিন্তু বিশ্বস্ত কোন অনলাইন প্রতিষ্ঠান নেই যে নিশ্চিন্তে তাদের বলবে যে আমার বাসা থেকে আমার পিসি বা ল্যাপটপ নিয়ে সার্ভিস দিয়ে আমাকে বাসায় দিয়ে যান।
আপনার প্রতিষ্ঠান দিতে পারে সেই চমৎকার সার্ভিস, সেবাটি ভালভাবে দিতে পারলে এবং জনপ্রিয় করতে পারলে দারুণ এক ব্যবসা শুরু হয়ে যাবে। এছাড়া বিল্ডিং করতে কিংবা বাসা বদলের সময় বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিক বা ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্রের প্রয়োজন পরে এবং সার্ভিস দেয়ার দরকার পরে, আপনার অনলাইন সাইটের মাধ্যমে সেইসব সার্ভিস কিংবা প্রোডাক্ট সহজে মানুষ পেতে পারে।
ফটোগ্রাফি এবং ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট: বিয়ে কিংবা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফটোগ্রাফি থাকবেনা তা কি সম্ভব? কখনোই সম্ভব না। এখন অধিকাংশ ফটোগ্রাফি বিষয়ক অর্ডারগুলো অনলাইনেই হয়। যদি আপনি ভাল ফটোগ্রাফার হয়ে থাকেন তবে আপনার প্রতিষ্ঠানের একটি ওয়েবসাইট করতে পারেন এবং আপনার ফটোগ্রাফি পেশাকে অনলাইন সাইটের মাধ্যমে জনপ্রিয় এবং অনলাইন সাইটের মাধ্যমে অর্ডার নেয়া শুরু করতে পারেন। এর পাশাপাশি কোন প্রতিষ্ঠান ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসও দিতে পারে।
অফিস সাজানো এবং ইনটেরিয়র ডিজাইন: অফিসের সুন্দর ইনটেরিয়র ডিজাইন করে দেয়ার সার্ভিস আপনার প্রতিষ্ঠান দিতে পারে এবং অনলাইনে এর অর্ডার নিতে পারে আপনার প্রতিষ্ঠান। এছাড়া বিভিন্ন অফিসের শোভাবর্ধনের জন্যে গাছসহ ফুলের টব কিংবা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস আপনার প্রতিষ্ঠান সার্ভিস দিয়ে থাকতে পারে। আপনার প্রতিষ্ঠান সুন্দর সুন্দর বাহারি রকমের গাছসহ টব বিভিন্ন অফিসের জন্যে সার্ভিস দিবে এবং তা কয়েকদিন পর পর রক্ষণাবেক্ষণ করে দিবে।
ভ্রমণ সার্ভিস: শহরের যান্ত্রিকতা ছেড়ে অনেকেরই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে ইচ্ছে করে, কিন্তু কখন কিভাবে সহজে কোথাও ভ্রমণ করবে, কোথায় থাকবে এবং যাতায়াত এর সময় যাবতীয় সহায়তার প্রয়োজন পরে। আর এ জন্যে অনলাইনে ভ্রমণ বিষয়ক সার্ভিস দেয়ার জন্যে সাইট করতে পারেন।
যাতে করে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের সার্ভিস অনলাইনে সিলেক্ট করলে এবং পেমেন্ট করে পরবর্তীতে মানুষ সহজে আপনার প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় ঘুরতে যেতে পারে। এছাড়া হোটেল এন্ড রিসোর্ট অনলাইনে অগ্রিম বুকিং দেয়ার ব্যবস্থাও থাকতে পারে যদি কেঁউ নিজে নিজে ভ্রমণ করতে চায়।
প্রথম বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ ভোলায়, কম খরচে বেশি ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।