জুমবাংলা ডেস্ক : যদি পাওয়া যায় কিছু ফেলনা জিনিসপত্র, এই আশায় ব্যাগ হাতে ও কোলে প্রায় ২ বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে কাকডাকা ভোর থেকে স্থানীয় বাজারের অলিগলিতে ঘুরে বেড়ান স্বপ্না বেগম (৩৫)। কুড়িয়ে ও ভিক্ষা করে নেওয়া সবজি ছাড়াও আনুষাঙ্গিক প্রয়োজনীয় কিছু নিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে রান্নার পর মানসিক প্রতিবন্ধী স্বামী ও শিশু দুই সন্তান ছাড়াও বৃদ্ধা শাশুড়ির মুখে আহার যোগান দেন। এভাবেই চলছে স্বপ্নার জীবন সংগ্রাম।

জানা যায়, স্বপ্নার বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা মহল্লার সিনেমা রোডের পাশে।
তিনি একটি কুড়েঘরে বসবাস করেন। নিজের সহায়-সম্পদ বলতে কিছুই নেই। গত প্রায় ছয় বছর আগে বিয়ে হয় কামাল মিয়া নামে এক যুবকের সঙ্গে। বিয়ের কয়েক বছর ভালো থাকলেও হঠাৎ স্বামী কামাল মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে লাপাত্তা হয়ে যান।
এর মধ্যে দুই সন্তানের মা হন স্বপ্না। পড়েন মহা বেকায়দায়। অন্যের আশ্রয়ে থাকা বৃদ্ধা শাশুড়ির দ্বারস্থ হন তিনি। মাঝে মধ্যে স্বামী আসলেও সংসার চালানোর মতো মানসিক শক্তি নেই।
কারো সঙ্গে কোনো কথা না বলে নীরবে দিন পাড় করেন। এ অবস্থায় চার বছরের ও প্রায় দুই বছরের শিশু কন্যাদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে নিজে একাই জীবন সংগ্রাম পাড় করছেন।
আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে স্বপ্নাকে পাওয়া যায় নান্দাইল নতুন বাজারের মাছ মহালে। হাতে একটি ব্যাগ ও শিশুকন্যাকে কোলে নিয়ে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেই সঙ্গে আগত অনেকের কাছেই চাচ্ছেন সাহায্য।
এ সময় মাছ মহালে সারি করে সাজানো বিভিন্ন জাতের মাছ ও পাশেই ক্রেতাদের মাছ কাটা দেখে কোলে থাকা শিশু মইয়াম ‘মাছ খাইয়াম, মাছ খাইয়াম’ বলে চিৎকার করতে থাকে।
জানতে চাইলে স্বপ্না বলেন, ‘মাছ তো খাইতো চায়, কিন্তু টেহা পাইয়াম কই? এক টুকরা পাঙ্গাস মাছ খাইনের লাইগা ছেড়িডা কান্দে। অহন পর্যন্ত (বেলা ১১টা) কয়েকটা পঁচা টমেটো, পিয়াজ ও মূলা পাইছি। দেহি কেউ দেয় কিনা।’
ওই সময় এ প্রতিনিধি দুই কেজি ওজনের একটি পাঙ্গাস মাছ কিনে ব্যাগে দিলে তা দেখে অবুঝ শিশু খুশিতে আত্মহারা হয়ে শিশু মইয়াম- ‘এইডা আমি খাইয়াম, আমি খাইয়াম’ বলে চিৎকার করে। তখন পাশেই মাছটি কেটে দিয়ে আলুসহ কিছু সবজি কিনে দেওয়া হয়। মাছ-সবজি নিয়ে খুশিতে বাড়ির দিকে রওনা হন স্বপ্না। এ যেন রাজ্যের খুশি।
সূত্র : কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



