জুমবাংলা ডেস্ক: দীপশিখা মেটি স্কুল ভিন্নধর্মী নির্মাণশৈলীর জন্য বিশ্বজুড়েই বেশ খ্যাতি পেয়েছে। এটি নির্মাণে মূলত মাটি, খড়, বালি ও বাঁশ, দড়ি, খড়, কাঠ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছে। মাটি ও খড় মেশানো কাদা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এর দেওয়াল। ভিত ছাড়া অন্য কোথাও ইটের কোনো ব্যবহার নেই। দেওয়ালের ভিতের ওপর দেওয়া হয়েছে আর্দ্রতারোধক।
দীপশিখা মেটি স্কুল হলো বাংলাদেশের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার মঙ্গলপুর ইউনিয়নের রুদ্রপুর গ্রামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অবস্থিত। ভিন্নধর্মী নির্মাণশৈলীর জন্য ২০০৭ সালে স্থাপনাটি পেয়েছে আগা খান আর্কিটেকচার অ্যাওয়ার্ড।
ভিন্নধর্মী এই স্কুলটির মেঝের প্লাস্টারে পামওয়েল ও সাবানের পেস্ট ব্যবহার করা হয়েছে, যা সাধারণভাবে ওয়াটারপ্রুফ। ৯ ফুট উচ্চতার ওপরে প্রথম তলায় ছাদ হিসেবে বাঁশ বিছিয়ে ও বাঁশের চাটাই দিয়ে মাটির আবরণ দেওয়া হয়েছে। ওপরে বৃষ্টির পানির জন্য দেওয়া হয়েছে টিন। মেটি স্কুল ছয় কক্ষ বিশিষ্ট মাটির তৈরি একটি দোতলা ভবন। এর আয়তন ৮ হাজার বর্গফুট।
২০০৫ সালের মাটির স্কুলঘরটি নির্মিত হয় জার্মানির ‘শান্তি’ দাতা-সংস্থার অনুদানে। অস্ট্রিয়ার লিজ ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা এ স্কুল নির্মাণে অবদান রাখেন। সহযোগিতা করেন দীপশিখা প্রকল্পের কর্মীরা। জার্মান আর্কিটেক্ট আন্না হিয়ারিংগার ও আইকে রোওয়ার্গ এর তত্ত্বাবধান করেন।
মেটি স্কুল ছয় কক্ষ বিশিষ্ট মাটির তৈরি একটি দোতলা ভবন। এর আয়তন ৮ হাজার বর্গফুট। ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৭ লাখ টাকা। অথচ ইট-সিমেন্টের এমন একটি বিল্ডিং তৈরিতে ব্যয় হবে ৯০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা।
দ্বিতল এ স্কুলের বৈশিষ্ট্য হলো, কক্ষে শিক্ষার্থীরা গরম-শীতের অনুভূতি তীব্রভাবে অনুভব করে না। আলো-বাতাসের আগমনে স্বাস্থ্যও ভালো থাকে এবং কক্ষগুলোও পরিবেশবান্ধব। এই স্কুলটি যেন এ যুগের শান্তিনিকেতন। এখানে বাচ্চারা পড়ে মনের আনন্দে, শেখে হাতে-কলমে প্রকৃতির ছায়ায়।
জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার ১০ জন ছাত্র ও বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্থানীয় ১৯ জন শ্রমিকের সমন্বয়ে এই স্কুল নির্মিত হয়েছে। ২০০৭ সালে আগা খান স্থাপত্যকলা পুরস্কারে ভূষিত হয় দিনাজপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থিত দীপশিখা মেটি স্কুল। পুরস্কার হিসেবে দীপশিখাকে ১৩ হাজার ৭০০ মার্কিন ডলার, আর্কিটেক্ট আন্না হিয়ারিংগারকে ১৬ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার ও আর্কিটেক্ট আইকে রোজওয়ার্গকে ৮ হাজার ২০০ ডলার দেওয়া হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।