জুমবাংলা ডেস্ক : জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার পদ নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরই দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন। এ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের ‘ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি’ হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন তিনি।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ৯ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১১ সেপ্টেম্বর এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৬ সেপ্টেম্বর। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৫ অক্টোবর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবারের মধ্যে দলীয় প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জাপা চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের স্বাক্ষরিত ‘প্রত্যয়ন’ জমা দিতে হবে। একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও জাপার চূড়ান্ত দলীয় প্রার্থী নির্ধারণের ক্ষমতাও থাকবে চেয়ারম্যানের হাতে।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘রংপুর নির্বাচনের দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিতে চেয়ারম্যান জি এম কাদের স্বাক্ষরিত চিঠি আমরা পেয়েছি। তিনিই জাপা প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন, চেয়ারম্যানই প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি।’
চেয়ারম্যান পদ নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে অন্য কোনো চিঠি কমিশন সচিবালয় পায় নি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রংপুর-৩ আসনের প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন ক্ষমতা কিংবা জাপা চেয়ারম্যান নিয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান নি জিএম কাদের। তিনি বলেন, ‘আমি আপাতত এ নিয়ে কোনো কথা বলবো না।’
৩০ ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাপা প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়ন ক্ষমতা দিয়েছিলেন তৎকালীন মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে। তার হাতেই প্রার্থীরা প্রত্যয়ন নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
তবে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আকস্মিকভাবে হাওলদারকে সরিয়ে দলের মহাসচিব করা হয় মসিউর রহমান রাঙ্গাকে। ৫ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়ন ক্ষমতা নতুন মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁকে দেন চেয়ারম্যান এরশাদ। এ নিয়েও জটিলতা তৈরি হয় প্রার্থী নিয়ে, দুই প্রত্যয়নে জাপার প্রার্থীও বেড়ে যায়। সেই মহাসচিব এখন দুই অংশের মহাসচিব হিসেবে রয়েছেন।
রওশন-কাদের দ্বন্দ্ব : গত ১৪ জুলাই জাপা চেয়ারম্যান এরশাদ মারা যান। এরপর ১৮ জুলাই তার ভাই জিএম কাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়। বনানী কাযালয়ে মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ সংবাদ সম্মেলনে জানান, জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১ (ক) ধারা অনুযায়ী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মৃত্যুর আগে বলে গেছেন, তার অবর্তমানে জি এম কাদের দলের চেয়ারম্যান হবেন।
দুই মাস ধরে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলে আসা জি এম কাদের এ সময় মহাসচিবের পাশেই ছিলেন। তবে এরশাদের স্ত্রী ও দলের সিনিয়র কো চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন না।
এর পর থেকে ভাবি রওশনের সঙ্গে কাদেরের দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পায়। রওশন অভিযোগ করেন, জি এম কাদেরকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করার আগে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মতামত নেওয়া হয়নি।
চেয়ারম্যান পদ নিয়ে দ্বন্দ্বের মধ্যে মঙ্গলবার জি এম কাদেরকে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ঘোষণার জন্য স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে চিঠি পাঠান হয় জাতীয় পার্টির নামে।
এর পাল্টায় বুধবার স্পিকারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে রওশন বলেন, দলীয় ফোরামে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই জি এম কাদের নিজেকে বিরোধীদলীয় নেতা ঘোষণা করতে বলেছেন। জাতীয় পার্টির একাংশ রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করায় ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার’ হুমকি দিয়েছেন জিএম কাদের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।