রঞ্জু খন্দকার, গাইবান্ধা থেকে: গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা সদরের মহেশপুর এলাকার শাহওয়াজ কবির গত ঈদুল আজহায় এককভাবে ষাঁড় কোরবানি দিয়েছিলেন। এবারও এককভাবেই কোরবানি দিচ্ছেন। তবে ষাঁড় নয়, গাই গরু।
শাহওয়াজ জুমবাংলাকে জানান, গতবারের তুলনায় এবার কোরবানির পশুর দাম বেশি। ষাঁড়ের দাম আরও বেশি। তাই এবার গাই গরু কিনেছেন।
শুধু একক কোরবানির ক্ষেত্রে নয়, পশুর বাড়তি দাম কমিয়েছে কোরবানিতে শরিকের সংখ্যাও। ফলে ভাগে কোরবানি দাতাদের অনেকেও ষাঁড়ের বদলে খুঁজছেন গাই। কেউ কেউ অন্যবার গরু কোরবানি দিলেও এবার ঝুঁকছেন ছাগল, ভেড়া ও খাসি কেনার দিকে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শামসুল আলমসহ পাঁচজন গত কোরবানির ঈদে ষাঁড় কিনেছিলেন। এবার কোরবানিতে তাঁদের অংশীদারের সংখ্যা কমে চারজন হয়েছে। তাঁরা কয়েক হাট ধরে গাই গরু কেনার চেষ্টা করছেন।
শামসুল আলমের সঙ্গে আজ শনিবার উপজেলার নাকাইহাটে কথা হয়।
শামসুল বলেন, পশুর দাম বেশি হওয়ায় এবার তাঁদের শরিকের একজন কোরবানি দিচ্ছেন না। ফলে তাঁদের শরিকের সংখ্যা কমেছে। চারজনের টাকায় ছোটখাট ষাঁড়ও হয় না। তাই গতবার ষাঁড় কোরবানি দিলেও এবার তাঁরা গাই গরু খুঁজছেন।
শামসুলের শরিক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, গত কয়েক হাট থেকে তাঁরা গাই গরু খুঁজছেন। এখনো পছন্দমতো মেলেনি।
একই হাটে কথা হয় মিজানুর রহমানের সঙ্গে। তাঁর বাড়ি পলাশবাড়ীর কেঁওয়াবাড়ি গ্রামে। তিনি একটি খাসি কিনে ফিরছিলেন। তিনি বলেন, অন্যবার সব ভাই মিলে গরু কোরবানি দিতেন। এবার অন্য ভাইয়েরা এলাকায় আসছেন না। ফলে তিনি একা খাসি কিনলেন।
নাকাইহাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটে স্থান সংকুলান না হওয়ায় পশুর হাট বসানো হয়েছে নাকাইহাট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে। মাঠের বেশির ভাগজুড়েই গাই গরুর সমাহার। শুরুর দিকে ষাঁড়হাটি। এরপরেই প্রায় পুরো মাঠজুড়ে গাইহাটি।
ইজারাদার কয়েকজন জানান, এ হাটে অনেক গাই গরু বিক্রি হচ্ছে। ষাঁড়ও বিক্রি হচ্ছে।
পলাশবাড়ীর ফকিরহাটে শুধু কোরবানি ঈদ উপলক্ষে অস্থায়ী পশুর হাট বসে। গত রবিবার সেখানে গিয়ে প্রায় একই চিত্র পাওয়া যায়। এ হাটে ষাঁড়ের চেয়ে গাই, ছাগল ও খাসির সংখ্যা বেশি। বেচাকেনাও বেশি।
গোবিন্দগঞ্জের ডুমুরগাছা গ্রামের সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজন ফকিরহাটে পশু কিনতে এসেছিলেন। তাঁরা একটি গাই গরু কিনে ফিরছিলেন।
সাইফুল বলেন, তাঁরা পাঁচজন মিলে হাজার পঞ্চাশেক টাকায় গাই গরু কিনেছেন। ষাঁড় নিতে গেলে অন্তত ৭০ হাজারের দিকে যেতে হবে। তবু ষাঁড় ছোট হবে।
ফুলিছড়ি উপজেলার ভরতখালি গাইবান্ধার সবচেয়ে বড় পশুর হাট। এ হাট থেকে পশু কিনেছেন কালির বাজার এলাকার ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, তাঁরা ভরতখালি বাজার থেকে কয়েকজন মিলে গাই গরু কিনেছেন। এ বাজারে গাই অনেক বিক্রি হচ্ছে।
কয়েকজন বিক্রেতা জানান, গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার পশুর দাম বেশি। এখন ষাঁড় মোটাতাজাকরণে অনেক খরচ হয়। ফলে দামও বেশি। অন্যদিকে গাই গরুকে কেনা খাবার দেওয়া হয় না বললেই চলে। এদের মূল খাবার খড় আর মাঠের ঘাস। এ কারণে গাই গরুর দাম নাগালের মধ্যেই আছে। ক্রেতারাও কম দামে কিনতে পারছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।