জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানে হলের নাম পরিবর্তন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা হল নামকরণের দাবি জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এ দাবি জানান।
তাদের দাবি জিয়াউর রহমানসহ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সকল মদদদাতাদের মুক্তিযুদ্ধের খেতাব বাতিল করতে হবে। সেই সাথে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলের নাম জাতির সামনে প্রকাশ করে তাদের খেতাব বাতিল করতে হবে।
এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি সংবিধান লঙ্ঘন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশত্যাগে সহায়তা এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের কারণে জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব ‘বীর উত্তম’ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
মুক্তিযুদ্ধে এক নং সেক্টর এবং প্রথম ব্রিগেড জেড ফোর্সের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করা জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে সেনাপ্রধান হন।
৭ নভেম্বরের সামরিক অভ্যুত্থানের পর শাসন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন তখনকার মেজর জেনারেল জিয়া। ১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি হন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মূল নায়ক ছিল জিয়া। শুধু তাই নয়, জাতির পিতার হত্যার যাতে বিচার না হয় সেজন্য সংবিধানে “ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ” সংযোজন করে বিচারের পথকে রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারী খুনি জিয়ার মুক্তিযুদ্ধের খেতাব বাতিলের সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর ঋণ কিছুটা হলেও শোধ করতে পারবে বাংলাদেশ।
এ সময় তিনি জিয়াউর রহমানসহ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধের খেতাব বাতিলের সুপারিশকে স্বাগত জানান।
আমিনুল বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত জিয়া হলের নাম পরিবর্তন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা হল নামকরণ করার দাবি জানাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করলেই একজন সারাজীবন মুক্তিযোদ্ধা থাকবেন এটা ঠিক নয়, সারাজীবন মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনা ও আদর্শ ধরে রাখতে হবে। জিয়াউর রহমান তার আদর্শচ্যুত হওয়ার মাধ্যমে প্রমাণ করে যে, তিনি বাই চান্স ফ্রিডম ফাইটার। বাই চয়েজ ফ্রিডম ফাইটাররা কখনোই জাতির পিতাকে হত্যা করতে পারেন না।
তিনি বলেন, জিয়াকে মুক্তিযুদ্ধের বীর উত্তম খেতাব প্রদানকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে জিয়া প্রমাণ করেছেন যে, তিনি কখনোই বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন না। তিনি পাকিস্তানের হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয়েছে।
আল মামুন বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংসকারী কোন পাকিস্তানী দোসরের স্মৃতি চিহ্ন থাকতে পারে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জিয়া হলের নাম পরিবর্তন করে অবিলম্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা হল নামকরণ করতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নিজ উদ্যোগে জিয়া হলের নাম মুছে দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা হল লিখে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
এ সময় সংহতি জানিয়ে সমাবেশে অংশ নেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিক। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শাহীন মাতবর, মাকসুদ হাওলাদার, সোহাগ মিয়া প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।