এবার নুসরাত হত্যা নিয়ে পুলিশ-সাংবাদিকের পাল্টাপাল্টি জিডি

ফেনীর বহুল আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ-সাংবাদিক পাল্টাপাল্টি জিডি করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশি, হয়রানি ও নিরাপত্তা চেয়ে ফেনী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন সময় টেলিভিশনের সাংবাদিক মো. আতিয়ার হাওলাদার সজল।

এর আগে ১৪ এপ্রিল সজলের বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন ওই থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

সাধারণ ডায়েরিতে আতিয়ার সজল উল্লেখ করেন, ১৪ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় দায়ের করা সাধারণ ডায়েরিতে ওই থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সম্পূর্ণ অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। গত ২৭ মার্চ শ্লীলতাহানির মামলায় সোনাগাজী মডেল থানায় নুসরাতের জবানবন্দি রেকর্ড করা দুটি ভিডিও ৮ এপ্রিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য অন্য কেউ তার অজ্ঞাতসারে মোবাইল ফোনে স্থানান্তর করেন।

প্রকৃত সত্য হলো, ৬ এপ্রিল মাদ্রাসাকেন্দ্রে নুসরাতকে অগ্নিদগ্ধ করার পর সোনাগাজী মডেল থানায় আমিসহ (সজল) গণমাধ্যমকর্মীরা একাধিকবার যান। ৮ এপ্রিল ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বক্তব্য নিতে চাইলে নুসরাতের আত্মহত্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়ে আগ বাড়িয়ে পূর্বের ধারণ করা দুটি ভিডিও দেখান। পরে ওই ভিডিও টেলিভিশনে দেখানোর অনুমতি নিয়ে ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১ মধ্যে ওসি মোয়াজ্জেমের কাছ থেকে ভিডিও সংগ্রহ করি।

সেদিন রাত ৯টায় নুসরাতের চেহারা ঝাপসা করে ভিডিও দুটি সময় টেলিভিশনে প্রচারও করে। ওই ভিডিও আমি কাউকে সরবরাহ করিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করিনি। আর অজ্ঞাতসারে ভিডিও নেয়ার বিষয়টিও সত্য নয়।

অন্যদিকে ১৪ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় নিজের মোবাইল থেকে দুটি ভিডিও অজ্ঞাতসারে স্থানান্তরের অভিযোগ করেছেন সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন।

জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, অফিসে মোবাইল ফোন রেখে আমি ওয়াশরুম ও নামাজের জন্য বের হই। এ সুযোগে জনৈক সজল তার মোবাইল ফোনে ভিডিওটি নিয়ে যায়। যা আমার মোবাইল হিস্ট্রির মাধ্যমে জানতে পারি। এটা পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য এমনটি করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসাকেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মারা যায় নুসরাত জাহান রাফি।

এ ঘটনায় তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামালা দায়ের করেন। মামলার এজাহারভুক্ত ৮ আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।