নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে ভেঙে পড়া একটি পুরোনো সাঁকোর জায়গায় স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রম ও অর্থায়নে নতুন কাঠের সেতু নির্মাণের মাধ্যমে যোগাযোগের এক গুরুত্বপূর্ণ পথ আবারও সচল হয়েছে। দীর্ঘ চার মাস অব্যবহৃত থাকায় ভোগান্তি পোহানো অন্তত দশটি গ্রামের মানুষ এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।
রোববার (১৩ জুলাই) শেষ হয় কাঠের সেতুর নির্মাণকাজ। শ্রীপুর পৌরসভার বংশিঘাটা এলাকায় নতুন এই সেতুটি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড এবং মাওনা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডসহ আশপাশের অন্তত দশটি গ্রামকে সংযুক্ত করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক দশক ধরে ব্যবহৃত বাঁশের পুরোনো সাঁকোটি দুই মাস আগে ভেঙে পড়ে। এতে করে প্রতিদিন হাজারো মানুষকে পচা পানি ও কাঁদা পেরিয়ে চলাফেরা করতে হতো। বহুবার স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কোনো স্থায়ী সমাধান আসেনি। তাই জনগণের উদ্যোগেই মেলে সমাধানের পথ।
গত শুক্রবার স্থানীয়দের উদ্যোগে শুরু হয় কাঠের সেতু নির্মাণের কাজ। প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন স্থানীয় মানুষ ও শ্রমিক অক্লান্তভাবে দুই দিন কাজ করে শনিবার রাতেই সেতুর কাজ সম্পন্ন করেন।
বংশিঘাটার ব্যবসায়ী আবুল সরকার বলেন, “প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এ পথ দিয়ে চলাফেরা করে। কিন্তু সাঁকো না থাকায় মানুষ চরম দুর্ভোগে ছিল। তাই নিজের চেরাই কলের কাঠ দিয়ে আমি সহযোগিতা করেছি।”
স্থানীয় যুবক আরাফাত বেপারী জানান, “এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার মানুষ চলাচল করে। মানবিক দিক বিবেচনায় আমরা একত্রিত হয়ে নিজেরাই এটি তৈরি করেছি।”
কারখানার শ্রমিক শফিকুল ইসলাম বলেন, “সাঁকো না থাকায় কাজে যাওয়া কিংবা বিরতিতে বাসায় ফেরা অনেক কষ্টকর হয়ে উঠেছিল। কাঠের সেতু হওয়ায় এখন অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছি।”
স্থানীয় পরিবেশকর্মী খোরশেদ আলম বলেন, “মানুষের ঐক্য ও মানবিকতা দেখিয়ে দিয়েছে—চাইলেই সমাধান সম্ভব। তবে পৌর কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।”
এ বিষয়ে শ্রীপুর পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী শাহেদ আক্তার জানান, “এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। আমরা স্থায়ী সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। এর ব্যয় বিবেচনায় বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়েছে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।