এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সহযোগিতা বাড়ানো গেলে দীর্ঘমেয়াদে জিডিপি ১ দশমিক ৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা।
রোববার (১৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রে আইএমএফের বার্ষিক সাধারণ সভা শুরুর আগে দেওয়া এক লিখিত বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
জর্জিয়েভা বলেন, “এশীয় দেশগুলোর উচিত চূড়ান্ত পণ্য ও সেবা খাতে বাণিজ্য বাড়ানো। সেবা খাত ও আর্থিক খাতে প্রবেশাধিকার জোরদারে সংস্কার এগিয়ে নেওয়া। বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক সংযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “গত তিন দশকে বিশ্বে অসাধারণ অগ্রগতি হলেও এখনও অনেক বঞ্চনা ও অসমতা রয়ে গেছে। গড়ে মানুষ এখন আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে, কিন্তু সেই গড় উন্নতির আড়ালে রয়েছে অসন্তোষ ও কঠিন বাস্তবতা।”
আইএমএফ প্রধানের মতে, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে তরুণরা আজ উন্নত সুযোগের দাবি জানাচ্ছে—লিমা থেকে রাবাত, প্যারিস থেকে নাইরোবি, কাঠমান্ডু থেকে জাকার্তা পর্যন্ত সর্বত্র এই দাবির প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে।
ওয়াশিংটনে সোমবার শুরু হতে যাওয়া আইএমএফের বার্ষিক সভায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পূর্বাভাস প্রকাশ করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছর ও আগামী বছরে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিছুটা মন্থর থাকলেও সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।
জর্জিয়েভা বলেন, “এই স্থিতিশীলতার পেছনে রয়েছে চারটি প্রধান কারণ— নীতিগত ভিত্তির উন্নয়ন, বেসরকারি খাতের অভিযোজন ক্ষমতা, আশঙ্কার তুলনায় কম শুল্কপ্রভাব এবং সহায়ক আর্থিক পরিবেশ—যতদিন তা বজায় থাকে।”
আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘এই জটিল ও অনিশ্চিত বিশ্বে যদি আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে আমরা এমন নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে পারি, যা বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ, দৃঢ় প্রতিষ্ঠান, নির্ভরযোগ্য তথ্য ও শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তা জালের মাধ্যমে মুক্তবাজার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে।’
বক্তৃতাস্থলের একটি লেখা ইঙ্গিত করে বলেন, ‘একটি স্বপ্ন তুমি একা দেখলে, সেটা কেবল একটি স্বপ্নই থাকে। কিন্তু যখন আমরা একসঙ্গে স্বপ্ন দেখি, তখন তা বাস্তবতা হয়ে ওঠে।’
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য আইএমএফের প্রস্তাব
প্রথমত, টেকসইভাবে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করা, যাতে অর্থনীতি আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে, সরকার আরও রাজস্ব আদায় করতে পারে এবং সরকারি-বেসরকারি ঋণ আরও টেকসই হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, সরকারের আর্থিক অবস্থার পুনঃস্থাপন, যাতে তারা ভবিষ্যতের নতুন ধাক্কাগুলোর মোকাবিলা করতে পারে এবং জরুরি প্রয়োজন পূরণ করতে পারে, সেটা আবার বেসরকারি খাতে ঋণের সুদের হার বাড়িয়ে না দিয়ে।
তৃতীয়ত, অতিরিক্ত ভারসাম্যহীনতা (অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্ব উভয় ক্ষেত্রে) দূর করা, যাতে এগুলো ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা না দেয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।