জুমবাংলা ডেস্ক : মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার এবং কম্প্রেসার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আয়কর দ্বিগুণ করেছে এনবিআর। বুধবার (৮ জানুয়ারি) এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করেছে সংস্থাটি।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, রেফ্রিজারেটর, মোটরসাইকেল, এয়ার কন্ডিশনার এবং কম্প্রেসার উৎপাদন থেকে এ শিল্পের আয়ের ওপর ২০ শতাংশ কর দিতে হবে। এ পরিবর্তন ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর হবে।
তবে, এনবিআরের আয়কর শাখার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন করের হার আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী অর্থবছর থেকে কার্যকর হলেও আয়বর্ষের হিসাব আগের অর্থবছর অনুযায়ী হয়। অর্থাৎ, চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) আয়ের ভিত্তিতে কর হিসাব করা হবে।
পাশাপাশি, এসব কোম্পানির জন্য আমদানির ওপর অগ্রিম আয়কর ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), যা আদেশ জারির দিন থেকে কার্যকর হবে।
২০২১ সালে জারি হওয়া একটি সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রক আদেশ (এসআরও) অনুযায়ী এ কোম্পানিগুলোর ২০৩২ সাল পর্যন্ত হ্রাসকৃত ১০ শতাংশ কর সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই সে প্রণোদনা প্রত্যাহার করে করহার দ্বিগুণ করা হলো।
এনবিআরের সদস্য বদিউল আলম বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত উৎপাদকেরা ৫ শতাংশ করহার উপভোগ করেছিলেন। পরে ২০২১ সালে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়।’
এদিকে, প্রায় ৫০টির মতো পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ফলে ভোক্তাদের ওপর চাপ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই নতুন খাতে করের হার বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত এসেছে। বিষয়টি নিয়ে শিল্প বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্কবৃদ্ধির পাশাপাশি করের এ উত্থানে গ্রাহকের খরচ বাড়বে এবং উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হবে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এনবিআরের আয়কর নীতি বিষয়ক সাবেক সদস্য সৈয়দ মো. আমিনুল করিম বলেন, ‘কর বাড়ানোর ফলে এ চাপ শেষ পর্যন্ত পণ্যের দাম বাড়াবে এবং কোম্পানিগুলোও চাপের সম্মুখীন হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০৩২ সাল পর্যন্ত যে কর সুবিধা ছিল, তা আকস্মিকভাবে প্রত্যাহার করায় বাংলাদেশের কর নীতি যে বিনিয়োগবান্ধব নয়, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিনিয়োগকারীরা যারা এ প্রণোদনার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তারা এ পরিবর্তনটিকে নেতিবাচক সংকেত হিসেবে দেখবেন।’
এয়ার কন্ডিশনার এবং রেফ্রিজারেটরের বাজারের শীর্ষ ব্র্যান্ড ফেয়ার ইলেকট্রনিক্সের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘ভ্যাট ও কর বৃদ্ধির ফলে পণ্যের দাম আরও বাড়বে। একদিকে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের প্রকৃত আয় কমছে, অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান কর পণ্যের দামকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর ফলে আমাদের বিক্রি কমে গেছে।’
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, ‘করের আরও কোনো বৃদ্ধি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে এবং বাজারকে আরও সংকুচিত করবে।’
শিল্প বিশেষজ্ঞরা একটি স্থিতিশীল এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখার জন্য এ করনীতির নীতির পুনঃমূল্যায়ন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্দোলনে ছাত্র-জনতার মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ করেন এসপি শাহজাহান: সারজিস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।