আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জেলা প্রশাসকদের সততা, নিষ্ঠা ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সদ্য পদায়নকৃত ৫০ জেলা প্রশাসকসহ ৬৪ জেলার প্রশাসকদের উদ্দেশে বক্তব্যে তিনি বলেন, “এ নির্বাচন গতানুগতিক নয়; বরং এটি দেশরক্ষার নির্বাচন। জেলার প্রশাসকরা থাকবেন জাতির নবজন্মের ধাত্রীর ভূমিকায়। কোনোভাবেই ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই।”
তিনি আরও বলেন, “এবারের নির্বাচন শুধু পাঁচ বছরের সরকার গঠনের নির্বাচন নয়; গণভোট যুক্ত হওয়ার কারণে এটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ। এটি গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী নির্বাচন, যা দেশের গণতন্ত্রকে পূর্ণতা দেবে। অতীতের প্রহসনমূলক নির্বাচনের স্মৃতি আমাদের পথে বাধা হতে পারবে না।”
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস জেলা প্রশাসকদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করতে অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি নির্ধারণ করবে শতাব্দীর গতিপথ।
জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের যা যা জানা প্রয়োজন সব জেনে নেবেন। নির্বাচন একই সঙ্গে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে বিপুলসংখ্যক তরুণ ও নারী ভোটার রয়েছেন, যারা ভোট দেওয়ার উপযুক্ত হলেও গত ১৫ বছর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি।
ড. ইউনূস বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ইতোমধ্যে আগামী নির্বাচনের বিষয়ে গভীর উৎসাহ দেখাচ্ছেন। তারা দেখতে চান কেমন নির্বাচন হচ্ছে- এটা নিয়ে তাদের গভীর আগ্রহ। এ নির্বাচনকে স্বার্থক করা গণ অভ্যুত্থানের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি। এ নির্বাচন একটি বিরাট অভিযান, এ অভিযানে আমাদের জিততেই হবে। স্বাধীন জাতি হিসেবে টিকে থাকতে হলে এ লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শেখ আবদুর রশীদের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। অনুষ্ঠানে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক এবং বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
লালদিয়ায় ডেনমার্কের বিনিয়োগ বাংলাদেশের জন্য নতুন যুগের সূচনা: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, লালদিয়া টার্মিনালে ডেনমার্কের কোম্পানি এপিএম টার্মিনালসের বিনিয়োগ বাংলাদেশের বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা করেছে। ডেনমার্ক ও ইউরোপ থেকে বৃহত্তর ও বহুমুখী বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচন করছে।
গতকাল রাজধানীতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মায়ের্স্ক গ্রুপ ও ডেনিশ সরকারের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। মায়ের্স্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান রবার্ট মায়ের্স্ক উগলা প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব দেন। ডেনমার্কের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্দলোসে হ্যানসেনও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
রবার্ট মায়ের্স্ক উগলা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর টার্মিনালে তার কোম্পানির বিনিয়োগ হবে বাংলাদেশে কোনো ইউরোপীয় কোম্পানির সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। ২০৩০ সালে লালদিয়া টার্মিনাল চালু হলে এটি চট্টগ্রাম বন্দরে বড় জাহাজ আগমনের সুযোগ তৈরি করবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের গতি সঞ্চার করবে।
উগলা বলেন, এটি হবে একটি টেকসই বন্দর। এটি আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশে ডেনিশ রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলারও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



