আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জীবনকে পরিবর্তন করতে হলে নিজেদেরকেই শুরু করতে হবে। আপনি যদি নিজের জীবন নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকেন তাহলে সেই বিষয়গুলোর ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেয়া দরকার, যেগুলো আপনার অসন্তুষ্টির কারণ। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের রিডস দম্পতি তাদের মধ্যে অন্যতম, যারা নিজেদের জীবন নিয়ে নতুন করে ভেবেছেন এবং বিশ্বের কোটি মানুষকে আশার আলো দেখিয়েছেন।
লেক্সি রিডের সবসময়ই স্থুলতার সমস্যা ছিল। শৈশব থেকেই তার এই সমস্যা ছিল। অনেক চেষ্টার পরও তিনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাননি। মাত্র ২৫ বছর বয়সে লেক্সির ওজন ছিল ৩৮২ পাউন্ড (১৭৩ কেজি)। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, তার যেভাবে জীবন যাপন করতে ইচ্ছা হয় ওজনের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। তিনিও এও ভেবেছিলেন যে এই সমস্যা নিয়েই তাকে চলতে হবে।
একদিন লেক্সি ড্যানি রিডের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং এতে তার জীবনের মোড় পরিবর্তন হয়। তারা একে অপরের প্রেমে পড়ে যান। ড্যানির ভালোবাসায় সুখে খুঁজে পান লেক্সি। লেক্সি ড্যানিকে অত্যন্ত ভালোবেসেছেন কারণ তার এই শরীরেও ড্যানি তাকে ভালোবেসেছে এবং অবহেলা করেনি।
এমনকি লেক্সির স্থুলতা নিয়েও কখনো আপত্তিজনক কিছুই বলেনি ড্যানি। এছাড়া ড্যানির জীবনও নিখুঁত ছিল না। ড্যানি অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করছিলেন এবং তারও ওজনের সমস্যা ছিল। এটি তাদের দু’জনকে একে অপরের নিকটে আসতে সহায়তা করেছিল।
লেক্সির চেয়ে কয়েক বছরের বড় ড্যানি। কিন্তু তাদের সমস্যা একটাই, সেটি হলো ওজন। তবে তারা এটিকে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে সমানতালে পছন্দের খাবার খেতে লাগলেন। এতে কিছুদিন পর তাদের সমস্যা আরও প্রকট হতে শুরু করলো।
এমন অবস্থায় তাদের দুজনের অবস্থা এমন হলো যে কিছুদিন পর তারা বাইরে যাওয়ার মতো অবস্থাও অতিক্রম করলেন। তাদের শুধু খাওয়া ও টিভি দেখে সময় কাটতে লাগল। এমন অবস্থায় লেক্সি অনুভব করলেন এভাবে তাদের চলার কোনো উপায় নেই। কিছু একটা করতেই হবে। তবে তিনি এই বিষয়ে কোনো সমাধান খুঁজে পাচ্ছিলেন না।
এমন অবস্থায় তারা দুজনে বিবাহের সিদ্ধান্ত নেন। বিয়ের পর তারা দুজনের একে অপরকে বেশি করে অনুভব করতে শুরু করেন। তারা স্বাভাবিক জীবন পেতে চান এবং সন্তান পেতে চান। কিন্তু চিকিৎসক তাদেরকে হুঁশিয়ার করে বলেন যে, এমন অবস্থায় সন্তান গ্রহণ করলে লেক্সির জীবন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিতে পারে।
এরপরই তারা তাদের জীবন নিয়ে বেশি ভাবনা শুরু করলেন। ২০১৬ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে ওজন কমানোর লড়াইয়ে নামার সিদ্ধান্ত নেন লেক্সি। শুরুতে ড্যানি এ বিষয়ে সংশয়ে থাকলেও তাকে সাহস যোগান লেক্সি। এরপরই তারা তাদের ফিটনেস মিশন শুরু করেন।
তারপর তারা অ্যালকোহল, সোডাসহ অস্বাস্থ্যকর বিভিন্ন খাবার পরিত্যাগ করেন। এবং নিয়মমাফিক জিমে সময় কাটান। ওজন কমানো বিশাল চ্যালেঞ্জ হলেও তারা সেটিকে সাদরে গ্রহণ করেন। ১৮ মাসের মিশন শেষে তারা এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং দম্পতি হিসেবে তাদের সেই ইচ্ছাগুলো পূরণ করতে পারছেন
তারা বিশ্বের স্থুল মানুষদের কাছে আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছেন। এমন স্থুলকায় অবস্থাও যে নিয়মমাফিক জীবন যাপনে স্বাভাবিক হওয়া সম্ভব তার বড় উদাহরণ লেক্সি ও ড্যানি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।