স্পোর্টস ডেস্ক: ক্রিকেট বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। প্রথম সে আসরের আয়োজক ছিল ইংল্যান্ড। স্বাগতিকদের হারিয়ে সেবার বিশ্বকাপ জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বলা হয়ে থাকে, ক্রিকেট খেলা আভিজাতদের খেলা। ধনীদের সেই খেলাকে সাধারণ মানুষের কাতারে নামিয়ে এনেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। না, কোনো দেশ নয়। আফ্রিকার কিছু দ্বীপপুঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল পুরো ক্রিকেট দুনিয়া কাঁপিয়ে দিয়েছিল। প্রথম বিশ্বকাপের পর দ্বিতীয় বিশ্বকাপও জিতে এই দলটি। ১৯৮৩ সালে হ্যাটট্রিক বিশ্বকাপ শিরোপার সামনে থেকে ফাইনালে হেরে যায় দলটি।
এমনই আধিপত্য ছিল দলটির। কোর্টনি ওয়ালশ, কার্টলি অ্যামব্রসদের গতির তোড়ে কাঁপতো প্রতিপক্ষের ব্যাটিং স্তম্ভ। স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসের মতো ব্যাটার খেলেছিল দলটির হয়ে। হালের ক্রিস গেইলের মতো তারকা খেলোয়াড় খেলে গিয়েছে। সুনীল নারাইন, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভোরা ছিলেন যেই দলের সেনানী, আজ সেই দল যেন থমকে গিয়েছে।
১৯৮৩ সালের সেই হ্যাটট্রিক বিশ্বকাপ জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার পর পেরিয়েছে চল্লিশ বছর। আর এই চার দশকেই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেট তার জৌলুস হারিয়েছে। খালি চোখেই সেটি দৃশ্যমান। আর বিশ্বকাপ ট্রফি, তো মরীচিকা। যেখানে খেলা হচ্ছে না বিশ্বকাপে।
দুটি এক দিনের বিশ্বকাপ ও দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা ওয়েস্ট ইন্ডিজ চলতি বছর অনুষ্ঠিতব্য এক দিনের বিশ্বকাপে খেলতে পারছে না। বাছাই পর্বের বাঁধাই যে পেরোনো গেল না! জিম্বাবুয়ে, নেদারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে এবার দর্শক হয়েই বিশ্বকাপ উপভোগ করতে হবে তাদের।
কেন এই অধঃপতন?
মূলত ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক ক্রিকেট আসার পর থেকেই যেন নিজেদের চেনা জগৎ হারিয়ে ফেলেছিল দলটি। যেখানে নির্দিষ্ট কোনো দেশ নেই, সেখানে দেশপ্রেম থাকাটাও অপাংক্তেয়। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা দলটির খেলোয়াড়েরা তাই মূল দলের আগে টাকাকে পছন্দ করেছে। ফলে আজকের এই পরিণতি।
পোলার্ড, নারাইন, রাসেলদের মতো প্লেয়ারদের জাতীয় দলে দেখা যায় না। তারা এখনও সারা বিশ্বে জনপ্রিয়। ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট তাদের জন্য এখন হটকেক। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট? সেখানে তাদের অস্তিত্ব যেমন নেই, তাই তাদের দলটিও নেই। এক হারিয়ে যাওয়া নক্ষত্র হিসেবে হয়তো মনে থাকবে। ইতিহাসে কিংবা স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করে জ্বলবে। কিন্তু বাস্তবে সে আর থাকবে না। ক্রিকেটকে সর্বসাধারণের খেলা বানিয়ে আজ সে দলটিই ব্রাত্য। হারিয়ে যাওয়া রূপকথা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।