স্পোর্টস ডেস্ক : আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক সব ক্রিকেটারের কাছে স্বপ্নের মতো। কিন্তু পাকিস্তানি তারকা ওপেনার ইমাম-উল-হকের অভিষেকের সময়টা ছিল ভুলে যাওয়ার মতো।
২০১৭ সালে ইমাম-উল হক যখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে পাকিস্তান দলে ডাক পেলেন, তখন সমালোচকরা বলছিল যে তিনি স্বজনপ্রীতির কারণে সুযোগ পেয়েছেন। কারণ তখন ইমামের চাচা বিখ্যাত ক্রিকেটার ইনজামাম-উল-হক ছিলেন প্রধান নির্বাচক। সমালোচকদের এসব কটুকথা শুনে অভিষেকের আগেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন ইমাম।
সম্প্রতি ভারতের সাবেক ক্রিকেটার দীপ দাশগুপ্তের সঙ্গে আলাপচারিতায় ইমাম তাঁর এই দুঃসহ দিনগুলোর গল্প শুনিয়েছেন। মাত্র ৩৭ ওয়ানডেতে ৭ সেঞ্চুরি করে ফেলা ইমাম বলেন, ‘আমি যখন দলে জায়গা পাই, তখন আমার শুধু একজনই বন্ধু ছিল-বাবর আজম। তার সঙ্গে যদিও খুব একটা কথা হতো না। কারণ বাবর তখন জাতীয় দলে নিয়মিত আর আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতাম। জাতীয় দলে ঢোকার শুরুতেও খুব একটা কথা হতো না। সে ক্রিকেটেই মনোযোগ বেশি দিচ্ছিল। সেই সময় সে ভালো ছন্দেও ছিল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টানা দুটি সেঞ্চুরি করে টেস্টে ভালো করতে চাইছিল। এ কারণে কারো সঙ্গেই খুব একটা কথা বলত না।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুটি ওয়ানডেতে একাদশে জায়গা পাননি ইমাম। এতে সমালোচনা থামছিল না। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ঠাট্টা-তামাশাও করছিল। ইমাম বলেন, ‘এসব যখন ঘটছিল, আমি খাবার খেতেও একা একাই যেতাম। এটা ছিল আমার প্রথম সফর। একজন খেলোয়াড়ের প্রথম সফরে কী হতে পারে সেটা তো আপনি জানেনই। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কী করব। পরিবারের লোকদের সঙ্গেও কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আমার সমস্যা নিয়ে ওদের আমি চাপে ফেলতে চাইনি। পরে আমি মোবাইল বন্ধ করে ম্যানেজারের কাছে জমা দিয়েছি।’
ওই সিরিজেরই তৃতীয় ম্যাচে অভিষেক হয়েছে ইমামের। তার দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলে পাকিস্তান। এরপর যত দিন গেছে, ততই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। কিন্তু অভিষেকের আগের সেই দিনগুলো কী ভয়ানক যন্ত্রণার মধ্যেই না কাটাতে হয়েছে তাঁকে, ‘আমার মনে আছে, সে সময় আমি শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাঁদতাম। তখনো পাকিস্তানের হয়ে খেলিনি। অথচ সব আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। একটা কথাই ভাবতাম- আমি না খেলতেই এই অবস্থা, আর খেলতে নামলে না জানি কী হবে!’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।