জুমবাংলা ডেস্ক : কমতে শুরু করেছে লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর পানি। স্বাভাবিক হয়ে আসছে বন্যা পরিস্থিতি। কিছু কিছু উঁচু এলাকা থেকে পানি নেমে গেলেও নিম্ন অঞ্চলগুলো এখনও প্লাবিত রয়েছে। অনেক স্থানে রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি আবাদি ফসল পানিতে তলিয়ে রয়েছে। পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে জেলার লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালিগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত শিশু খাদ্য পাঁচ লাখ, গবাদি পশু পাঁচ লাখ, বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য ৩ লাখ ও ৯০ মেট্রিক টন জিআর চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। এরই মধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিতরণের কাজ শুরু হয়েছে।
আজ সোমবার বেলা ১২টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার এবং রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে গত তিন দিন ধরে ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। এতে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্ট ও রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদ সীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। খুলে দেওয়া হয় তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জল কপাট। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা, রাজপুর, খুলিয়াগাছ আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, চর গোবর্ধন, কালিগঞ্জ উপজেলাসহ হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ও পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন তীরবর্তী চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যা দেখা দেয়।
বন্যায় রাস্তাঘাট, আবাদি ফসল, ঘরবাড়ি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিতে ডুবে যায় রেললাইন, ফলে ট্রেনের গতি কমিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার ট্রেন চলাচল করতে দেখা গেছে। গত দু-দিন ধরে বন্যায় জেলার ১৪টি ইউনিয়নের ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। গতকাল রোববার বিকেল থেকে পানি কমতে থাকায় বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত পানিবন্দি রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চরাঞ্চলসহ নদীর তীরবর্তী এলাকার রোপা আমন, সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা মাঠ পর্যায়ে জরিপের কাজ চলছে। স্বল্প মেয়াদি বন্যায় সবজি খেতের ক্ষতি হলেও রোপা আমনের কোনো প্রভাব পড়বে না।
কিশোর গ্যাংয়ের হাতে পুলিশি অস্ত্র, নিরাপত্তাহীনতার চ্যালেঞ্জ
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার রায় বলেন, যেহেতু বৃষ্টিপাতের তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই, সেহেতু লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদী সংলগ্ন চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই দেখা দিতে পারে নদী ভাঙন। এ জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে আপদ ও বিপদকালীন কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যখন যেখানে ভাঙন দেখা দিবে, তখনই সেখানে ভাঙন মোকাবিলা করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।