মহাবিশ্ব যদি উন্মুক্ত হয়, তাহলে অতি দীর্ঘ সময় পর গ্যালাক্সিগুলোর কী পরিণতি হবে? একটি সাধারণ (Typical) গ্যালাক্সির কথা বিবেচনা করি। এ ধরনের একটি গ্যালাক্সি মূলত অনেকগুলো নক্ষত্রের সমন্বয়ে গঠিত। প্রতিটি নক্ষত্রই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। সময় শেষ হলে, আয়ু ফুরিয়ে গেলে সেসব নক্ষত্র মারাও যায়।
এটাকে বলা যায় ‘নক্ষত্রের চূড়ান্ত পর্যায়’। এই পর্যায়ে পৌঁছার পর নক্ষত্রের মধ্যে তেমন কোনো পরিবর্তন আসে না। যা হয়, তা খুবই সামান্য। এই সামান্যটুকু হতেও অতি বিশাল সময়ের প্রয়োজন হয়। কমপক্ষে ১০ বিলিয়ন বছর লাগে।
তিন উপায়ে নক্ষত্রের মৃত্যু হতে পারে। শ্বেত বামন, নিউট্রন নক্ষত্র ও ব্ল্যাকহোল। এই তিন পর্যায়ে নক্ষত্রের উপাদানগুলো অত্যন্ত ঘনীভূত অবস্থায় থাকে। এদের মধ্যে যে নক্ষত্রে উপাদানগুলো সবচেয়ে বেশি ঘনীভূত অবস্থায় থাকে, সেগুলোকে বলা হয় ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণবিবর।
যদি যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়, তাহলে একসময় না একসময় একটি গ্যালাক্সির সব নক্ষত্রই মারা যাবে। সেসব নক্ষত্রের কোনো কোনোটি শ্বেত বামন হবে, কোনো কোনোটি নিউট্রন নক্ষত্র হবে আর কোনো কোনোটি হবে কৃষ্ণবিবর। কোনো নক্ষত্র যদি শ্বেত বামন, নিউট্রন ও কৃষ্ণবিবর—এই তিন অবস্থার কোনোটিতে উপনীত হয়, তাহলে আমরা সেই নক্ষত্রকে বলতে পারি মৃত নক্ষত্র। কোনো গ্যালাক্সির সব কটি নক্ষত্র মরে যেতে ১০০ বিলিয়ন থেকে ১ হাজার বিলিয়ন বছর বা তার চেয়েও বেশি সময় লাগতে পারে।
মোটামুটিভাবে ১ হাজার বিলিয়ন বছরের ভেতর একটি গ্যালাক্সি মৃত নক্ষত্র দিয়ে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। নক্ষত্রের উত্তাপের অনুপস্থিতিতে পুরো গ্যালাক্সিজুড়ে বিরাজ করবে শীতলতা আর শীতলতা। গ্রহ, উপগ্রহ ও অন্যান্য ক্ষুদ্র বস্তুর মধ্যে তখনো পারস্পরিক আকর্ষণ বিদ্যমান থাকবে। উন্মুক্ত মহাবিশ্বে গ্যালাক্সিগুলো তখনো একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে থাকবে। ফলে গ্যালাক্সিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক দূরত্বও বেড়ে যাবে অনেক।
এই অবস্থায় পৌঁছানোর পর গ্যালাক্সিগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসতে আরও অতি বিশাল সময় পার হয়ে যাবে। মৃত নক্ষত্রগুলো অন্যান্য নক্ষত্রের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে গ্যালাক্সি থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসবে। এই প্রক্রিয়ায় গ্যালাক্সির প্রায় ৯৯ শতাংশ মৃত নক্ষত্র নিক্ষিপ্ত হয়ে বের হয়ে যাবে। প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে বিলিয়ন বিলিয়ন (১০১৮) বছর বা বিলিয়ন বিলিয়ন বিলিয়ন (১০২৭) বছর বা তার চেয়েও বেশি সময় লাগতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।