লাইফস্টাইল ডেস্ক : করোনাভাইরাসের মহামারি চলাকালে সুস্থ থাকার ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত পাঁচটি পরামর্শের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনের পরামর্শগুলো তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত-মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
পরামর্শগুলো হলো-
শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা যেমন- ঘরে ব্যায়াম করা, হাঁটা, শিশু, কিশোর-কিশোরী বা যে কেউ নৃত্য চর্চা করা ইত্যাদি।
মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া যা- বই পড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা, ছবি আঁকা, বাগান করা, পোষা প্রাণীর যত্ন নেওয়া, ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখা, শিশু এবং বাড়ির প্রবীণদেরও এসব কাজে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা।
ধূমপানসহ তামাক ও তামাকজাত পণ্য এবং সকল প্রকার মাদক পরিহার করা।
করোনাকালে শিশুদের সম্মিলিত বিকাশ অব্যাহত রাখার জন্য মানসম্পন্ন বা গুনগত সময় দেওয়া, সৃষ্টিশীল কাজে নিয়োজিত করা, বর্তমানে তাদের অনলাইনে পড়ালেখার বিষয়ে সার্বিক সহায়তা করা এবং শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মাত্রাতিরিক্ত অনলাইনে যুক্ত হবার বিষয়টি সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করে তা নিয়ন্ত্রণ করা।
সুষম পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ- বিভিন্ন ধরনের টাটকা শাক-সবজি, ফল, পূর্ন শস্যদানা সমৃদ্ধ খাবার, বিভিন্ন প্রকার ডাল এবং সীম জাতীয় খাবার, সাথে প্রাণীজ উৎসের খাবার, যেমন- মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি গ্রহণ।
শিশু খাদ্য বিষয়ক পরামর্শ:
শিশুর বয়স শূন্য থেকে প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধই যথেষ্ট। কারণ এই সময়ে মায়ের বুকের দুধ থেকে শিশুর জন্য সব ধরনের পুষ্টি এবং পানি পাওয়া যায়। শিশুর ৬ মাস বয়সের পর মায়ের দুধের পাশাপাশি অন্য নিরাপদ পুষ্টিকর বয়স উপযোগী খাদ্য গ্রহণ করতে পারবে, তবে, শিশুর বয়স ২ বছর পর্যন্ত অবশ্যই বুকের দুধ পান করবে। মায়ের বুকের দুধের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হয় না। তবে মা করোনা বিষয়ক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।
খাদ্য নিরাপত্তার জন্য পরামর্শ:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, খাদ্যের মাধ্যমে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয় না। তবে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য এবং খাদ্যবাহিত রোগ প্রতিরোধের জন্য ৫ টি বিষয় অনুসরণ করতে হবে-
সর্বস্তরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
কাঁচা এবং রান্না করা খাবার আলাদা রাখা।
ভালভাবে সিদ্ধ করে রান্না করা।
নিরাপদ তাপমাত্রায় খাদ্য সংরক্ষণ করা।
নিরাপদ পানি ও খাদ্য কাঁচামাল ব্যবহার করা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে একদিনে আরও ৫৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এছাড়া আরও ২৭৩৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭৩৮ জনসহ দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ জন। নতুন করে আরও ৫৫ জনের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৫২ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৫৫ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৭ এবং নারী ১৮ জন। হাসপাতালে মারা গেছেন ৪১ জন এবং বাড়িতে ১৪ জন। ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন সর্বোচ্চ ১৯ জন।
ঢাকা বিভাগে মোট ১০০৭ জন, চট্টগ্রামে ৬৩৪, রাজশাহী বিভাগে ১০২, খুলনায় ৮৮, বরিশাল বিভাগে ৭২, সিলেট বিভাগে ৮৬, রংপুরে ৬১ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৯ জন মারা গেছেন।
এদিকে, করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৯০৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৬২৫ জন। সুস্থতার হার ৪৪.৭২ শতাংশ।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে নতুন করে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।