জুমবাংলা ডেস্ক : করোনাভাইরাসকে হারিয়ে দিয়েছে বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের রোজিনা বেগম। শনিবার করোনায় আক্রান্ত স্বামী মো. হাবিবুর রহমান ভুঁইয়াকে সুস্থ্য করে বাড়ি নিয়ে আসায় এখন তার নাম মুখে মুখে। এদিকে করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তি সুস্থ্য হয়ে ওঠায় এলাকায় স্বস্থি ফিরে এসেছে।
জানা গেছে, গত ১৬ এপ্রিল ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয় মো. হাবিবুর রহমান। এর দুই দিনপর ১৮ এপ্রিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইসিডিআর) পাঠিয়ে দেয়। ২১ এপ্রিল তার নমুনা প্রতিবেদন আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় তিনি প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময় থেকেই তিনি আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
স্বামী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবরে ভেঙ্গে পড়েন স্ত্রী রোজিনা বেগম। ধরেই নিয়েছেন স্বামী আর বাঁচবেন না। স্বামী না বাঁচলে তার বেঁচে থেকে লাভ কি? বেঁচে থাকলে দু’জনেই বেঁচে থাকবো এমন প্রতিজ্ঞা করেন তিনি। ওই হাসপাতালের আইনোলেশন কক্ষেই স্বামীর পাশে এই বিছানা থেকে তার সেবা করতে থাকেন। চিকিৎসকদের বাঁধা থাকলেও তিনি তাদের বুঝিয়ে সেখানে থাকতে শুরু করেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্ত্রী রোজিনার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠায়। কিন্তু তার প্রতিবেদনে তিনি করোনা ভাইরাস নেগেটিভ আসে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দফায় স্বামী ও তার নমুনা প্রতিবেদন নেগেটিভ আসে। পরে শনিবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক শংসর প্রসাদ অধিকারী তাদের সুস্থতার ছাড়পত্র দেন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে ছেড়ে দেন।
এদিকে ১৭ দিন করোনা আক্রান্ত স্বামীর সাথে একই বিছানায় থেকে স্ত্রী রোজিনা বেগম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। তিনি করোনা মুক্ত হওয়ায় অবাক হয়েছেন সেখানকার চিকিৎসক ও সেবিকারা।
এ বিষয়ে স্ত্রী রোজিনা বেগম বলেন, আল্লার উপর ভরসা রাইখ্যা মুই মোর ব্যাডার যতন হরছি। আল্লায় মোর ব্যাডারে ভালো হরছে। আর মোর কিছু অয়নাই। শুরু হয়তেই মুই ব্যাডারে ছাইর্যা যাইনাই। এক বিছানায় ঘুমাইছি ১৭ রোডা দিন।
করোনা ভাইরাসে জয়ী হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, আল্লায় বাঁচাইছে। এখন আমি সম্পুর্ণ সুস্থ আছি। ডাক্তার ও নার্সদের সেবার পাশাপাশি আমার স্ত্রীর আমার পাশে থেকে সার্বক্ষণিক সেবা করেছে। একই সাথে খেয়েছি, একই সাথে একই বিছানায় ঘুমিয়েছে। একটি মুহুর্তের জন্যও ও আমাকে ছেড়ে যায়নি। গত ১৭টি দিন আমার পাশে থেকেই আমাকে সেবা করেছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হাবিবুর রহমানের স্ত্রীও তার সাথে আইসোলেশনে ছিল। স্বামী-স্ত্রী একই বিছানায় থেকেও স্ত্রী করোনা মুক্ত।
তিনি আরো বলেন, হয়তোবা তার স্ত্রীর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশী তাই এমনটা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।