আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ মহামারিতে বিশ্বে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৩০ লাখের বেশি মানুষ। মারা গেছে দুই লক্ষাধিক। এর মধ্যে কানাডায় সংক্রমণ ৪৫ হাজার এবং মৃত্যু আড়াই হাজার। কানাডায় আড়াই হাজার মৃত্যুর মধ্যে কিউবেক প্রদেশেই মৃত্যু হয়েছে ১৪৪৬ জনের। কিউবেকের মন্ট্রিল শহরে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি।
মন্ট্রিলে মৃত্যুর সংখ্যা কেন এত বেশি তা প্রকাশ করেছেন সেখান নার্সদের সংগঠনের সভাপতি নাতালিয়া। নাতালিয়া স্টেক ডসেট কানাডার কিউবেক প্রদেশের সবচেয়ে বড় শহর মনট্রিল শহরে বসাবাস করেন।
কিউবেক শহরে বয়স্কদের আবাসগুলো কীভাবে করোনার মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে তা বর্ণনা করেছে নাতালিয়া।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নাতালিয়া জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ মোকাবিলায় রোগীদের সেবা দিতে তিনি কিউবেক প্রদেশের মনট্রিলে দায়িত্ব পালন করেন।
কানাডায় করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে লিয়ান ভ্যালি কেয়ার হোমে। যেটি শহরে নর্থ ভ্যাঙ্কুভারে অবস্থিত। এটি অন্টারিও শহরের একটি ছোট্ট এলাকা।
নাতালিয়া মনট্রিলে যেখানে থাকেন সেখানে ১৮০টি পরিবারের একটি বৃদ্ধাশ্রম গ্রাম রয়েছে। সেই গ্রামের আবহাওয়া না গরম, না ঠান্ডা।
নাতালিয়া বলেন, আপনি যদি সেখানে যে কাউকে জিজ্ঞেস করেন তাহলে সে বলতে পারবে যে, সেখানে কী ঘটতে যাচ্ছে তা সে জানে। আমরা কোনো বিশেষজ্ঞ পাইনি। কোনো হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়নি। কোনো উপকরণ দেয়া হয়নি। আমরা কিছুই পায়নি। আগে যেমন ছিলাম তেমনই রাখা হয়েছিল আমাদের। ফলে যখন করোনাভাইরাস আঘাত করলো তখন এটি দ্রুত দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়লো।
কিউবেক প্রদেশে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২১ হাজার রোগী শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৪৩ জনের। যারা মারা গেছে তাদের প্রায় সবারই বয়স ৬০ বছরের উপরে।
কিউবেক শহরের এই ঘটনার ফলে সেখানে পদ্ধতিগত সমস্যা, স্বাস্থ্য খাতে দৈন্যদশা, যথেষ্ট অর্থের অভাব ও স্বাস্থ্যকর্মী সঙ্কটের চিত্র ফুটে উঠেছে।
এই শহরে মুতদের মধ্যে ৬৩ শতাংশ মানুষ হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দা। তারা নিজেদের ঘরেই মারা গেছে। এই বৃদ্ধাশ্রমগুলো কোনো হোটেল বা হোস্টেল নয়। এটি এক একটি সাধারণ বাড়ি। কিন্তু সেখানে শুধু বৃদ্ধরা থাকেন। এখানে হাসপাতালে মারা গেছে মাত্র ১৬ শতাংশ মানুষ।
নাতালিয়া জানিয়েছেন, বৃদ্ধাশ্রমগুলো করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর ভাইরাসটি দ্রুত অন্যদের সংক্রমিত করতে শুরু করে। দ্রুত মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে।
নাতালিয়া জানান, মানুষ নিজের ঘরেই মৃত্যু বরণ করতে থাকে। শহরে পরিশ্চম এলাকার একটি বৃদ্ধাশ্রমে তারা গিয়ে দেখতে পান সেখানে ৩১ জন মারা গেছেন। ঘটনাটি ছিল গত মাসের ১৩ তারিখের।
নাতালিয়া বলেন, আমরা তাদের জন্য কিছু করতে পারিনি। এজন্য আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।