প্রতীক মুস্তাফিজ : করালগ্রাসী ভাইরাস করোনার আতঙ্কে রয়েছে সারাবিশ্বের মানুষ। এ ভাইরাস সম্পর্কে জানার পর থেকেই সারাবিশ্বের সাথে চায়নার অর্থনৈতিক যোগাযোগ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। দেশটির সাথে ব্যবসা বন্ধ রেখেছে বিশ্বের প্রায় সবগুলো দেশ। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি।
করোনার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইতোমধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়া শুরু করেছে। এ ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে জ্বালানি ও পণ্যবাজারেও। ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ক্রমে নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে বৈশ্বিক পণ্যবাজার। কমেছে জ্বালানি, ধাতব পণ্য, ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা ও দাম।
পণ্যবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল ভোক্তা দেশ চীনে পণ্যটির চাহিদা ব্যাপক হারে কমতে পারে। ফলে নিম্নমুখী হয়ে পড়তে পারে পণ্যটির বৈশ্বিক চাহিদা। এ আশঙ্কা থেকে অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ জোট ওপেক ও এর সহযোগী সংস্থা ওপেক প্লাস পণ্যটির উত্তোলন আরো কমিয়ে আনতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, দেশের পোশাক খাতসহ বেশ কয়েকটি খাত চলতি অর্থবছর ব্যপক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে জানা গেছে, চলতি ২০১৯-২০ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত উৎপাদন ও সেবা খাতের বড় করপোরেটগুলোর প্রায় সবারই রাজস্ব আয় কমেছে। এর প্রভাবে কমেছে প্রতিষ্ঠানগুলোর কর-পরবর্তী মুনাফাও। বেসরকারি খাতের শ্লথগতির পাশাপাশি নানা কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ভালো হয়নি বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
হিসাবটা করোনার আবির্ভাবের পূর্বেকার। তাহলে ভবিষ্যতের অর্থনীতি আরও করুণ সময়ের দিকে এগুচ্ছে বলেই মন্তব্য করলেন শিল্প উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘চায়নার ওপর কেবল বাংলাদেশ নয়, অনেকগুলো দেশের ডিপেন্ডেন্সি রয়েছে। চায়না আমাদের লার্জেস্ট ট্রেডিং পার্টনার। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ‘র’ মেটেরিয়ালের ৭০ শতাংশ চায়না থেকে আসে। এগুলোর ওপর ডিপেন্ড করে টার্গেট সেট করেন ব্যবসায়ীরা। টার্গেট ফেইল হলে দেশের অর্থনীতিতে অবশ্যই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
করোনার প্রভাব পড়বে দেশের ধাতুর বাজারেও। লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে (এলএমই) গত মাসে অ্যালুমিনিয়াম, তামা, নিকেল, আকরিক লোহাসহ প্রায় প্রতিটি ধাতব পণ্যের বাজার নিম্নমুখী থাকতে দেখা গেছে। গত সোমবার চীনের বাজারে তামার দাম কমে তিন বছরের সর্বনিম্নে নেমেছে। শিগগিরই বাংলাদেশের ধাতুর বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে বিবিএস ক্যাবলসের কোম্পানি সচিব মো. নাজমুল হাসান বলেন, বর্তমানে সার্বিকভাবে ব্যবসায় মন্দা চলছে। তার ওপর এ সময়ে আমরা ব্যাংকের কাছ থেকে তেমন কোনো সহায়তা পাইনি। নিজেদের তহবিল থেকেই ব্যবসার পুরো ব্যয় মেটাতে হয়েছে। তাছাড়া সরকারের কাছেও আমাদের বড় অংকের কিছু বিল পাওনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ২৪ হাজার ৫৩৯ জন। গতকাল পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৬৩২ জন এবং প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৫০০ জন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।