জুমবাংলা ডেস্ক: দেশে মৎস্য চাষে ব্যাপক সাফল্য সত্ত্বেও চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে মাছের খাবারের বাড়তি মূল্য মারাত্মক সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে। কারণ, করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আগের চেয়ে কমে গেছে। এর ফলে চাষীরা কম দামে মাছ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। আর এর প্রভাবে মাছ চাষীদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। তবে নানা চ্যালেঞ্জ থাকা সত্তে¡ও মৎস্য খাত বাংলাদেশে এখনও ‘বড় সম্ভাবনা ও সুযোগ’ হিসেবে বিবেচিত।
আজ বুধবার (২১) রাজধানীতে অনলাইন প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত ‘অ্যাকুয়াকালচার সেক্টর স্টাডি বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা সমীক্ষা প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লারিভ ইন্টারন্যাশনাল ও লাইটক্যাসল পার্টনার্স যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে এই গবেষণা সমীক্ষা করা হয়। মাছ চাষী, বাজার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশী ৫০ জনের অধিক ব্যক্তির সাক্ষাতকার ও মতামতের ভিত্তিতে এই সমীক্ষা করা হয়।
অনুষ্ঠানে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশন্থ নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারওয়েজ, নেদারলান্ডস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ। আরও বক্তব্য রাখেন লারিভ ইন্টারন্যাশনালের ডিরেক্টর ম্যাথিয়াস বিনেন, লাইটক্যাসল পার্টনার্স- এর পরিচালক জাহেদ আমিন, একই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র বিজনেস কনসালট্যান্ট সাইফ নজরুল প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকারসহ এই খাত সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬৪ শতাংশ কৃষক জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে যান চলাচল স্বাভাবিক না থাকায় দূরত্বের স্থানগুলোতে খামারীদের মাঝে মাছের খাবার, মৎস্যজাত দ্রব্য ও পোনা সরবরাহে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এর ফলে ব্যাহত হচ্ছে মৎস্য উৎপাদন। আবার মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়ায় তা বাজারে কম মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। তদুপরি, এই পরিস্থিতিতে মাছের খাবারের দাম মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে গেছে। এতে উৎপাদন খরচ আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে।
সমীক্ষায় বলা হয়, ২০২০ সালের শুরু থেকে-২০২১ সালের চলতি এপ্রিল নাগাদ এর প্রভাব পড়তে শুরু করে। তবে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ বেড়ে গেলে সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়। ২০২০ সালের এপ্রিল-মে মাসে বেশির ভাগ প্রজাতির মাছের দাম কোভিড পরিস্থিতির আগের তুলনায় ৫ থেকে ১৫ শতাংশ কমে যায়। আর এপ্রিল-মে মাসটা ছিল দেশে তুলনামূলক বেশি কোভিড সংক্রমণকালীন সময়।
এই পরিস্থিতিতে ৩৭ শতাংশ কৃষক মনে করেন, ওই সময়টাতে তাদের ৫০- ১০০ শতাংশ মূল আয় কমতে থাকে। ৫১ শতাংশ কৃষক মনে করেন, এই সময়টাতে তাদের আয়-ব্যয় সমান্তরালে ১-৫০ শতাংশ হয়, মাত্র ১০ শতাংশ তেমন ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হন নি।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৪.৩৮ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন করে। এর ৫০ শতাংশের অধিক আসে চাষ করার মাধ্যমে। তাই এই খাতকে গুরুত্ব দিয়ে বক্তারা মাছ চাষীদের ব্যাংক ঋণ প্রদান, সরকারী প্রণোদনা বাড়ানো ও তা সঠিকভাবে কার্যকর করা, মাছের খাবার দাম কমানো, মাছ চাষীদের বাস্তব উপযোগী প্রশিক্ষণ, সাপ্লাই চেইন বজায় রাখা এবং সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।