জুমবাংলা ডেস্ক : সারা দেশে আতঙ্কের আরেক নাম করোনাভাইরাস। কিভাবে করোনা প্রতিরোধ করা যায় এবং আক্রান্ত রোগীদের করণীয় কি এ বিষয়ে এক সাক্ষাৎকার প্রদান করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সাধারণ সর্দি-কাশি করোনাভাইরাস রোগ নয়। এ রোগের লক্ষণগুলো হলো- জ্বর (৯০ শতাংশ), কাশি (৮০ শতাংশ), শ্বাসকষ্ট (২০ শতাংশ), মাথা ব্যথা, গলাব্যথা এবং শরীর ব্যথা। করোনা ভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। মারাত্মক সংক্রমণের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া, কিডনির অকার্যকারিতা দেখা দেয়, যা রোগীকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। শিশু এবং বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত মারাত্মক পরিণতি হবার সম্ভাবনা বেশি।
সর্দি, কাশি, শুষ্ক গলা, এবং জ্বর; যখন কেউ অসুস্থ বোধ করেন তখন এসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আর শুরুতেই এসব উপসর্গ দেখে অনেক সময় বোঝা কঠিন যে এটি ভাইরাস নাকি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ। তাই আপনি যদি অসুস্থ বোধ করার পর নিশ্চিত না হন যে কী হয়েছে তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। একজন চিকিৎসক আপনার কফ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হতে পারবে আপনার ঠিক কী হয়েছে।
বর্তমান করোনাভাইরাস নাক ঝাড়া এবং কাশির মাধ্যমে সংক্রমিত ব্যক্তির দেহ থেকে বের হওয়া ‘ড্রপলেটের› মাধ্যমে ছড়ায়। ফলে নিরাপদ থাকার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে যারা সংক্রমিত বা সম্ভবত সংক্রমিত, তাদের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকা। সংক্রমণমুক্ত থাকতে সাবান এবং গরম পানি দিয়ে নিয়মিত বিরতিতে হাত ধোয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয়, সম্ভব হলে হাত ধোয়ার পর তা মুছতে ‘ডিসপোসেবল টাওয়েল› ব্যবহার করলে ভালো হয়।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে, অধিকাংশ ঠান্ডা বা ফ্লু হয় ভাইরাসের কারণে। ফলে সেগুলোর বিরুদ্ধে লড়তে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার অর্থহীন। এন্টিবায়োটিক শুধু ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে কাজে লাগে, ভাইরাস নয়।
আক্রান্ত রোগীদেরকে বাড়িতে/ হাসপাতালে আলাদা রাখার (ওংড়ষধঃরড়হ) ব্যবস্থা করতে হবে, প্রয়োজনে ছঁধৎধহ ঃরহব-এ রাখতে হবে। যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়, তারা রোগ প্রকাশের আগেই অর্থাৎ সুপ্তিকালে রোগ ছড়াতে পারে। তাই সভা, সমাবেশ, ভোটের সভা সীমিত রাখতে হবে। নিয়মিত বার-বার হাত ধুতে হবে এবং হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় মুখ ধুতে হবে এবং নাক রুমাল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, কেউ কেউ ঘণ্টায় ২০-২১ বার তার হাত/ আঙ্গুল দিয়ে মুখ, চোখ, নাক স্পর্শ করে। জাগ্রত অবস্থায় ১৮ ঘণ্টায় অন্তত ৩৬০ বার মুখমন্ডল, চোখে, নাকে হাত দেয়। সেজন্য বার বার সাবান অথবা এন্টিসেপটিক লোশন দিয়ে হাত পরিষ্কার করা দরকার। যাদের শ্বাসতন্ত্রে সাম্প্রতিক সংক্রমণ রয়েছে এমন রোগীদের থেকে দূরে থাকতে হবে। মাস্ক/ মুখোশ পরা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে মাস্কের অসুবিধা হলো এটি দিয়ে চোখ ঢেকে রাখা যায় না। স্বাভাবিক খাবার এবং প্রচুর পানীয় পান করতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।